সংক্ষিপ্ত
নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রেশন ‘দুর্নীতি’তে গ্রেফতার হয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এই দুই মন্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব বেঁধেছিল ‘বান্ধবী’-'অভিনেত্রী' অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে।
২০২২ সালে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আতশকাঁচের তলায় উঠে এসেছিল নিয়োগ দুর্নীতি। সেই দুর্নীতিতে বাংলার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে উদ্ধার হয়েছিল ২০ কোটি টাকা। অর্পিতার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এখন জেলবন্দি। তারপর ২০২৩ সালে ED-র নজরে এসেছে রেশন দুর্নীতি। এই দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে বাংলার প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। এই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গেই একবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরোধ বেঁধেছিল ভোটের টিকিট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। আর, সেই বিরোধের কেন্দ্রে ছিলেন তৎকালীন মডেল তথা অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলার প্রায় ১০০টি পুরসভায় পুরভোট হয়েছিল। ওই ভোটে কামারহাটি পুরসভার একটি ওয়ার্ড থেকে অর্পিতাকে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নির্বাচনে লড়াই করার জন্য কামারহাটি পুরসভা এলাকার ভোটারও হয়েছিলেন অর্পিতা। প্রার্থীতালিকা ঘোষণার আগে পর্যন্ত তৃণমূলের (TMC) কাছে বান্ধবীকে টিকিট পাইয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন পার্থ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাধা হয়ে দাঁড়ান জ্যোতিপ্রিয়।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সব পুরসভাতেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mallick) প্রভাব বেশি ছিল। পুরভোটের প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করার আগে তিনি জানতে পারেন যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোনও এক অভিনেত্রীর জন্য কামারহাটি পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিটের চেষ্টা করছেন। ওই অভিনেত্রী (অর্থাৎ, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়) কামারহাটি এলাকার ভোটার হলেও তিনি সেখানে থাকেন না। জ্যোতিপ্রিয় আঁচ করেছিলেন যে, স্থানীয় নির্বাচনে ‘বহিরাগত’ প্রার্থী ঢুকে পড়লে দলের ফল খারাপ হতে পারে। অনেকে তৃণমূল থেকে বেরিয়ে নির্দল প্রার্থী হয়েও দাঁড়াতে পারে। জ্যোতিপ্রিয়র পরামর্শেই ২২ নম্বর ওয়ার্ডে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়া হয়নি। মনোননয়ন দেওয়া হয়েছিল সন্দীপ ঘোষকে।
জ্যোতিপ্রিয় এককালে দাবি করেছিলেন যে, দুর্নীতি-কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় তো জেলে গেছেনই, তাঁর পরামর্শ মেনে যদি অর্পিতাকেও টিকিট দেওয়া হত, তাহলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আরও এক কাউন্সিলর জেলে যেতেন বলে দলের মুখ পুড়ত। এই মুখ পোড়া থেকে তিনিই দলকে বাঁচিয়েছেন বলে মনে করেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বর্তমানে অবশ্য পরিস্থিতি বদলেছে। এখন পার্থ এবং অর্পিতা যেমন জেলবন্দি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও তেমনই এক দুর্নীতির দায়ে জেলবন্দি। ফলত, তিনি সত্যি সত্যি দলের মুখরক্ষা করতে পেরেছেন কিনা, তা অবশ্য সংশয়ের বিষয়।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।