সংক্ষিপ্ত

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের কাছে নালিশ করবেন বলেও জানালেন।

 

বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমুল কংগ্রেসের উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর দাবী, বর্তমানে যিনি বিশ্বভারতীর উপচার্য পদে আছেন উনি ওই পদের জন্য পুরোপুরি অনুপযুক্ত। শুক্রবার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তারাপীঠে মা তারার পুজো দিতে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজো দেওয়ার পর সাংবাদিক দের মুখোমুখি হয়ে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ' বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে তিনি অনুপযুক্ত । তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে কি ধরনের ব্যবহার করতে হয় তিনি জানেন না।' উপাচার্যের এই ধরনের ব্যবহারের জন্য তিনি লোকসভার স্পিকার এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নালিশ জানাবেন। বীরভূমে দিয়ে রীতিমত চ়ড়া সুরেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিশানা করেন তৃণমূল সাংসদ।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি শান্তিনিকেতনের 'প্রতীচী'র বাড়িতে আসেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন । গত কাল তিনি বিদেশে চলে যান । প্রায় এক মাস বোলপুরের বাড়িতে থাকেন নোবেলজয়ী। এই সময় কালে অমর্ত্য সেন জমি দখল করে রেখেছেন, এই অভিযোগ তুলে তিনটি চিঠি দিয়ে জমি ফেরত চেয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । যা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক হয়েছে । এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ৷ সম্প্রতি বোলপুর সফরে এসেছিলেন তিনি ৷ সেই সময় তিনি অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যান ৷ সেখানে নোবেলজয়ীর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন ৷ অমর্ত্য সেনের হাতে জমির নথি তুলে দিয়েছিলেন ৷ এই ইস্যুতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তবে শুধু অমর্ত্য সেনের জমি নিয়েই নয়, বোলপুরের পৌষ মেলার মাঠ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা থেকে আরম্ভ করে, ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কটূউক্তিও করেছে বহুবার।

যদি বিদেশ যাবার আগে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন দাবী করেন, ১.৩৮ ডেসিমেল জমি প্রয়াত আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী অমর্ত্য সেনের নামেই রেকর্ড করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। "তিনি বলেন, "আমার বাবার নামে জমি ছিল, আমার নামে হওয়া উচিত ছিল । তাই হল । বিএল অ্যান্ড আরও অফিস থেকে করে দিয়েছে তো । না হওয়ার কোন কারণ ছিল না । আমার বাবার উইলে বলা আছে, যখন জীবন শেষ হবে, আমার মা পাবেন এই জমি । আমার মায়ের জীবন শেষ হলে আমার কাছে আসবে ।" যদিও তারপর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তরফ থেকে এই প্রসঙ্গে আর কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

আজ বিশ্ব ভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন দেশের সুরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বাভারতীর সদস্য হয়েও তিনি কেন যান নি, এই প্রসঙ্গে সুদীপ বাবু বলেন, " আমি গত তিন বছর ধরে বিশ্বভারতীর সদস্য আছি। কিন্তু এই উপচার্য একবারও আমাকে আমন্ত্রণ জানাই নি। আজকের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের গত ৭২ ঘন্টা আগে একটি মেইল করে আমাকে জানানো হয়েছে। সেই মেইলে আমার থাকার কি ব্যবস্থা আছে সেটাও উল্লেখ নেই। আমি এই উপচার্য কে ছাড়বো না। আমি লোকসভায় স্পিকার কে অভিযোগ করবো। কারণ আমি স্পিকার দ্বারা মনোনীত সদস্য। স্পিকারকে তিনি পরোক্ষ ভাবে চেলেঞ্জ করছেন। " সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য থেকে পরিষ্কার তিনি গোটা বিষয়টি নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বরস্থ হবেন।