সংক্ষিপ্ত

‘আমি ওদের ঔদ্ধত্য দেখছি। ওরা নাকি অমর্ত্য সেনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেবে!’ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে গর্জে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিস ধরানোর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থনীতিবিদের শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’-র উত্তর-পশ্চিম কোণের ১৩ ডেসিমেল জমি খালি করার জন্য বারবার তাঁকে নোটিস পাঠাচ্ছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি তাঁকে ৬ মে পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ, ৬ মে-র মধ্যে ওই ১৩ ডেসিমেল জমি খালি না করলে তাঁকে উচ্ছেদ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এই হুঁশিয়ারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাবড় শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা। এবার তাঁদের স্বপক্ষে আবার সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে একহাত নিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

বুধবার নবান্নে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন ঘটনার জন্য বারবার দিল্লি থেকে কেন্দ্র সরকারের টিম আসার বিরুদ্ধে মন্তব্য করছিলেন। সেই সময়েই তিনি আবার উদ্রেক করেন অমর্ত্য সেনের জমি সংক্রান্ত বিষয়টি। বললেন, ‘ওদের আগুন নিয়ে খেলা করা উচিত নয়। অমর্ত্য সেনকে যখন নিত্যদিন নিশানা করা হচ্ছে, তখন তাঁরা কী করছেন?’ এরপরই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে নিশানা করে মমতা বললেন, ‘আমি ওদের ঔদ্ধত্য দেখছি। ওরা নাকি অমর্ত্য সেনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেবে! ওরা যদি অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙতে আসে, আমি গিয়ে সেখানে বসে থাকব। আমিও দেখব ওরা কীভাবে অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙতে পারে। আমি দেখতে চাই, কার শক্তি বেশি। মানুষের, নাকি বুলডোজারের।’

উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনের প্রতীচী বাড়ির উত্তর-পশ্চিম কোণের ১৩ ডেসিমেল জমি খালি করার জন্য নোবেলজয়ী বাঙালি অমর্ত্য সেনকে নোটিস পাঠিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাতে নোটিস জারি করে বিশ্বভারতী স্পষ্ট ঘোষণা করে দেয় যে, অমর্ত্য সেন সহ সংশ্লিষ্ট যে সমস্ত ব্যক্তিরা ওই ১৩ ডেসিমাল জমি দখলে রেখেছেন, তাঁদের ১৫ দিনের মধ্যে, অর্থাৎ ৬ মে-র মধ্যে তা খালি করে দিতে হবে। তা না করলে অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে উল্লিখিত জায়গা থেকে ‘উচ্ছেদ’ করা হবে। ১৫ দিনের মধ্যে অমর্ত্য সেন বাড়ি না ছাড়লে কর্তৃপক্ষের তরফে বলপ্রয়োগ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সেই নোটিসের প্রসঙ্গ টেনেই এবার বিশ্বভারতীকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। প্রসঙ্গত, এই বিশ্বভারতীর সঙ্গে অমর্ত্য সেনের জমি সংক্রান্ত বিবাদের মধ্যেই বিশ্বভারতীর আচার্য তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন শতাধিক বিশিষ্টজন। সেখানে আর্জি জানানো হয়েছে, তিনি যেন বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে নীরবতা ভাঙেন। এই বিতর্কের শুরু থেকেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘প্রতীচী’-তে গিয়ে অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করে জমির নথিপত্রও তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, সেটিই আসল জমির নথি।

তবে, এই বিতর্কের মধ্যে নাম না করে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বক্তব্য ছিল, “আমি যদি বলি দুয়ে-দুয়ে তিন, বলবেন, ‘না, ভুল বলছেন আপনি।’ কিন্তু কোনও বিখ্যাত পরিবারের সন্তান যদি বলেন, ;দুয়ে-দুয়ে তিন’, তখন সবাই বলবেন, ‘হ্যাঁ, খুব ভালো বলছেন তো’!” শনিবার ঈদ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ প্রার্থনা সভা থেকে এই মন্তব্য করেছিলেন উপাচার্য।

আরও পড়ুন-
চাকরি নিয়ে সাবধান! ক্রমশ অন্ধকার হচ্ছে আইটি সেক্টরের ভবিষ্যৎ, ভারতে তিনটি নামজাদা সংস্থায় ৬৫% কম নিয়োগ 
আরও স্মার্ট হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পড়াশোনা, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে যোগ হচ্ছে নতুন বিষয়

সদ্য চালু হয়েই বিতর্কের মুখে কেরলের ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’, ট্রেনে সাঁটানো হল কংগ্রেস সাংসদের ছবি