সংক্ষিপ্ত
প্রত্যেক জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কোনও অবস্থাতেই দুর্নীতি হতে দেওয়া চলবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে কারা কারা ঘর পাচ্ছেন, সেই প্রাপকদের তালিকা তৈরি করার ক্ষেত্রে বহু জেলায় দুর্নীতি করা হচ্ছে বলে রাজ্য প্রশাসনের অভিযোগ। অনেক জেলাতেই তৈরি হয়ে থাকা পাকা বাড়িকে কাঁচা বাড়ি বলে লিখিয়ে নেওয়ার জন্য সমীক্ষককে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই চাপের মুখে পড়ে নিরুপায় অবস্থায় সোমবার একজন আশা কর্মী আত্মঘাতী হয়েছেন বলে খবর। এই পরিস্থিতির মধ্যে এবার প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রত্যেক জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কোনও অবস্থাতেই দুর্নীতি হতে দেওয়া চলবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
প্রশাসনিক বৈঠকে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে নিয়ম-কানুন অমান্য করা নিয়ে একাধিক জেলা প্রশাসনের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যসচিব। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, পাকা বাড়ির মালিকদের কোনও ভাবেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের তালিকায় রাখা যাবে না। কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির চাপের কাছে প্রশাসনকে মাথা নত করলে চলবে না। কোনও জেলায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির সম্ভাবনা দেখা গেলে জেলাশাসক সত্বর সেখানকার পুলিশ সুপারের কাছে নালিশ জানাবেন। যদি প্রয়োজন পড়ে, তাহলে ওই জেলার পুলিশ সুপার সরাসরি নবান্নের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার ওপর নজরদারি চালাবে ২১ জন আধিকারিকের একটি বিশেষ টিম। নবান্নের বৈঠক থেকে এইদিন গোটা দলটি গঠন করে দেন মাননীয় মুখ্যসচিব। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন আইএএস পদমর্যাদার ৩ জন অভিজ্ঞ আধিকারিকও। যেখানে যেখানে এই বিষয়ে ঝামেলা হচ্ছে, সেখানে সেখানে জেলাশাসকদের পৌঁছে যেতেও নির্দেশ দেওয়া হয় বলেও সূত্রের খবর।
নামকরণ বিতর্কের জেরে বেশ কয়েকমাস প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পশ্চিমবঙ্গকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। শেষমেশ সেই জট কেটে চলতি মাসে বাংলায় ১১ লক্ষ ঘর তৈরির জন্য ৮২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরের তরফে রাজ্যকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে দেওয়া হয়ছে যে, দুর্নীতির অভিযোগ এলে ফের বন্ধ হয়ে যেতে পারে বরাদ্দ। যার জেরে এবার বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন। তালিকায় নাম থাকা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সমীক্ষা করে দেখছেন প্রশাসনের তরফে পাঠানো কর্মীরা। সমীক্ষায় বহু ক্ষেত্রেই পাকা বাড়ির মালিকদের নাম ধরা পড়ছে তালিকায়। এমনকী বহু জায়গায় পঞ্চায়েত প্রধান ও শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের নাম রয়েছে তালিকায়।
মুখ্যসচিবের তরফে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি জেলায় যে আশা কর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সমীক্ষার কাজ করছেন, তাঁদের পর্যাপ্ত এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে জেলাশাসকরা যেন পুলিশকে নিজ নিজ জেলায় যাবতীয় দায়িত্ব ন্যস্ত করেন।
আরও পড়ুন-
সারা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে জাল আধার কার্ড, বিশেষ বিশেষ রাজ্য চিহ্নিত করে সমীক্ষার উদ্যোগ কেন্দ্র সরকারের
শাসককে বিপদে ফেলে দিল গোটা দেশের পুলিশবাহিনী, পেরুতে প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হলেন ডিনা বোলুয়ার্তে