সংক্ষিপ্ত
রাজ্য সরকারে নতুন নিয়োগ যেন ফের বিশ বাঁও জলে। অন্তত সেইরকমই বার্তা দিলেন মুখ্যসচিব।
রাজ্য সরকারে (West Bengal Government) নতুন নিয়োগ যেন ফের বিশ বাঁও জলে। অন্তত সেইরকমই বার্তা দিলেন মুখ্যসচিব।
বাস্তবে কিন্তু ছবিটা অনেক আলাদা ছিল। এই যেমন স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রস্তাব ছিল যে, শিলিগুড়ি কমিশনারেটের আটটি থানা এবং ট্রাফিক গার্ডের জন্য মোট ৪৩৬ জন সিভিক ভলান্টিয়ারের প্রয়োজন। এইজন্য বছরে খরচ হবে প্রায় ৫.০২ কোটি টাকা।
ওদিকে আবার স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রস্তাব ছিল যে, মোট ১৯০টি শূন্যপদ পূরণ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে বছরে প্রায় ১১.৬০ কোটি টাকা খরচের বিষয় রয়েছে।
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর আবার জানিয়েছে, তাদের দরকার ২৮ জন নিরাপত্তা রক্ষী এবং ১৪২ জন উদ্যান পালন প্রযুক্তি সহায়ক। এক্ষেত্রে সরকারকে বছরে ব্যয় করতে হবে ৫.৭৪ কোটি টাকা। সেইসঙ্গে, স্বাস্থ্য দফতর, পূর্ত দফতর, শ্রম দফতর এবং কৃষি দফতরেও কিছু নিয়োগের কথা ওঠে।
কিন্তু তা আপাতত স্থগিত। কারণ, মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিব পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, অত লোক এখন নেওয়া যাবে না। খুব বেশি হলে অনুমোদিত শূন্যপদের ৫০ শতাংশ নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তার থেকে একদমই বেশি নয়।
ফলে, রাজ্য সরকারি দফতরে যে সমস্ত শূন্যপদ তৈরি হয়েছে, সেই জায়গায় কর্মী নিয়োগের বিষয়টি জোর ধাক্কা খেল। একটি বিষয় কার্যত পরিষ্কার যে, সরকারি কর্মচারীদের বহর কমাতে চলেছে নবান্ন। প্রয়োজনের থেকে অতিরিক্ত যে পদ তৈরি হয়েছে, তা এবার কাটছাঁট করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, রাজ্যের তীব্র অর্থ সংকট।
সোমবার, এই বিষয়ে নবান্নে বৈঠক ডাকেন মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা। ঐ বৈঠকেই মুখ্যসচিব সাফ জানিয়ে দেন যে, বুঝে লোক নিয়োগ করতে হবে। লোক নেওয়ার আগে তা নিয়ে ভাবতে হবে। মুখ্যসচিব এও জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন পর্ষদ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে যে কর্মীরা রয়েছেন, দরকার হলে তাদের অন্য দফতরে ট্রান্সফার করানোর ব্যবস্থা করা হোক।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই রাজ্যের শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে মমতা বলেন, বহু সরকারি দফতর এমন আছে, যেখানে কর্মীদের কোনও কাজ নেই। আসে যায় আর মাইনে পায়। আলো জ্বলে, পাখা ঘোরে, কিন্তু প্রোডাক্টিভ কিছু পাচ্ছে না সরকার (Government)।
ফলে, বোঝাই যাচ্ছে যে, নবান্নের এই কঠোর পদক্ষেপের রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজেই। অর্থাৎ, খামোখা টাকা খরচ করা হবে না।
এই বিষয়ে সরকারি একটি কমিটি রয়েছে। যার নাম স্টেট লেবেল কমিটি অন র্যাশানালাইজেশন অ্যান্ড অপটিমাল ইউটিলাইজেশন অফ হিউম্যান রিসোর্সেস (State Level Committee on Rationalization and Optimal Utilization of Human Resources)। অন্যদিকে, সেই বৈঠকে অর্থসচিব মনোজ পন্থ আবার জানিয়েছেন, কোনও সরকারি দফতরে নয়া নির্মাণের জন্য প্রস্তাবে এখন অনুমোদন দেওয়া হবে না।
এদিকে, বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল আবার বলেছেন, “সরকারের উচিৎ ছিল চুরি আটকানো। কিন্তু তা আটকাতে পারছে না তারা। তাই এখন নিয়োগ বন্ধ রেখে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের সুযোগ এবং সম্ভাবনার পথ বন্ধ করে দিচ্ছে।”
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।