সংক্ষিপ্ত
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইস্তফা দিতে চলেছেন, এই খবর পেয়ে অনেকটাই হতাশ বাংলার দীর্ঘ দিনের আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা।
নিয়োগ দুর্নীতি উদ্ঘাটনের পিছনে তাঁর অবদান অনেকখানি। তাঁর নির্দেশেই নিয়োগ দুর্নীতিতে তদন্তে নেমেছে সিবিআই ও ইডি। দুর্নীতির উদ্ঘাটন হলেও চাকরিপ্রার্থীরা আজও সেই তিমিরে। ওঁর কাছে আরও একটু বেশি কিছু আশা করেছিলেন তাঁরা।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইস্তফা দিতে চলেছেন, এই খবর পেয়ে অনেকটাই হতাশ বাংলার দীর্ঘ দিনের আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থী অভিষেক সেন-এর কথায়, ‘‘নিয়োগ কারচুপিতে ওঁর নির্দেশে চারটে ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে। একটি তদন্তে ওএমআর (উত্তরপত্র) কারচুপি প্রকাশ পায়। মামলা ডিভিশন বেঞ্চে চলে যায়। সেই মামলা এখনও চলছে।’’ অভিষেকের মতে, ‘‘অভিজিৎবাবু সুপার নিউমেরিক পোস্টে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়ার বদলে কার মাথা থেকে সেই পরিকল্পনা বেরিয়েছিল, তা খোঁজার নির্দেশ দিলেন। এতে আমাদের সুরাহা হল না।’’ উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়া প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দেন এবং অসফল প্রার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে কমিশনকে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে বলেন। এ নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চ ও ডিভিশন বেঞ্চের সংঘাত হয়েছে। বারবার মামলার বেঞ্চ বদল হয়েছে। চূড়ান্ত রায় অধরাই থেকে গিয়েছে।’’
-
২০১৪ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী অর্ণব ঘোষ অবশ্য মনে করেন, ‘‘প্রাথমিকের দুর্নীতিতে তিনি যখন বারবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছিলেন, তখন সেই রায় ডিভিশন বেঞ্চে গিয়ে স্থগিত হয়ে যাচ্ছিল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের শক্তিকে খর্ব করতে আরও বৃহৎ শক্তিকে ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এ বার হয়তো কোর্টরুম ছেড়ে রাজনীতির ময়দানে নামছেন তিনি।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই চাকরি পেয়েছিলেন নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থী ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাস। বীরভূমের নলহাটি থেকে সোমা রবিবার বলেন, ‘‘তিনি আমাকে না দেখলে আমি চাকরি পেতাম না। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়েছেন। আশা করব এ বার বিচারপতি হিসেবে না লড়লেও, সাধারণ মানুষ হিসেবে লড়বেন।’’