সংক্ষিপ্ত

বাংলায় কার্যত ধস নেমেছে বিজেপি শিবিরে। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, গোটা ভারতবর্ষ সেই বিজেপি তথা এনডিএ শিবিরের ফলাফল বেশ খারাপ। আর এমন খারাপ ফলাফল নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

বুথ ফেরত সমীক্ষা যে ডাহা ফেল করেছে, তা অনেক আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। বাংলায় কার্যত ধস নেমেছে বিজেপি শিবিরে। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, গোটা ভারতবর্ষ সেই বিজেপি তথা এনডিএ শিবিরের ফলাফল বেশ খারাপ। আর এমন খারাপ ফলাফল নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিশেষ করে বঙ্গ বিজেপির এমন খারাপ ফল নিয়ে সামনে আসছে ৯টি কারণ।

১. লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে বিজেপি সম্পর্কে ভয়। অনেক সময়ই এই প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গিয়েছে বিজেপি নেতা-নেত্রীদের একাংশকে। যেটিকেই হাতিয়ার করে সহজেই তৃণমূল মহিলাদের মধ্যে বিজেপি সম্পর্কে ভয়-ভীতি তৈরি করেছে। মহিলাদের তৃণমূল বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়েছে যে বিজেপি এলে সত্যিই লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বন্ধ হয়ে যাবে।

২. বঙ্গে তৃণমূলকে মাইলেজ দেওয়া এবং বিজেপিকে ধরাশায়ী করার পিছনে সবচেয়ে বড় যে কারণ তা হলো লক্ষ্মীর ভান্ডার। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘোষণা হওয়া এই প্রকল্পে এবার টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মহিলাদের ভোট ঢুকেছে তৃণমূলের ঝুলিতে।

৩. কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে ব্যবহার করাকেও বিজেপির এমন খারাপ ফলাফলের কারণ বলে মনে করছেন অনেকেই। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে এমনও কিছু নেতা নেত্রীদের বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দিয়েছে যাদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের মধ্যে খুব ভালো ধারণা রয়েছে।

৪. বাংলায় তৃণমূলের ভালো ফলাফলের ক্ষেত্রে যেখানে সংখ্যালঘু ভোটকে অনেকটাই দায়ী করা হয়, সেই তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে এতটুকু চির ধরাতে পারে নি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। অন্ততপক্ষে ভোটের ফলাফলের প্রাথমিক ট্রেন্ড থেকেই এমনটা টের পাওয়া গিয়েছে।

৫. বঙ্গ বিজেপির এমন অবক্ষয়ের কারণ হিসেবে গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর যে ভোট পরবর্তী হিংসা হয়েছিল তাকেও দায়ী করছেন। যখন বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছিলেন তখন বহু বিজেপি নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি নিচু তলার কর্মীরা।

৬. মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বিজেপির অবক্ষয়ের অন্য একটি কারণ বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বড় অংশ। যেখানে কিন্তু এই বছর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল একেবারেই মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করেছে।

৭. দলবদলু নেতাদের নিয়ে বিজেপি খুব বেশি মাতামাতি করেছে আর যে বিষয়টি সাধারণ ভোটাররা খুব ভালোভাবে নিতে পারেননি। এর ফল ভোট বাক্সে ভালোভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

৮. ইন্ডিয়া জোট বিজেপির এইভাবে অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বড় অংশ। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল আলাদা করে লড়াই করলেও বারবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ইন্ডিয়া জোট তারই তৈরি এবং ইন্ডিয়া জোট সরকার করলে তৃণমূল বাইরে থেকে হোক অথবা ভিতর থেকে সমর্থন জানাবে।

৯. ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের পর যেভাবে বিরোধী নেতাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের মামলা হয়েছে তা অনেকেই ভালোভাবে নিতে পারেননি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এই ধরনের ঘটনাকে বিরোধীরা বারবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছে এবং বহু মানুষ রয়েছেন যারা বিরোধীদের এমন দাবিকেই সঠিক বলে মনে করেছেন।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।