সংক্ষিপ্ত

পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে নিজের স্বামীকে খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হল দুজন।

পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে নিজের স্বামীকে খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হল দুজন।

বর্ধমানের কাটোয়ার জেলা ও দায়রা আদালত তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। সেইসঙ্গে, আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই। রাতের খাবারের সঙ্গে কয়েকটি ঘুমের বড়ি মিশিয়ে স্বামী সুজিত মণ্ডলকে খেতে দেন তাঁর স্ত্রী শম্পা মণ্ডল। আর খাওয়ার পর সুজিত অচেতন হয়ে পড়লে প্রেমিক নয়ন পালকে খবর দেয় শম্পা।

তারপর সুজিতকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পরেরদিন সকালে অবশ্য আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের কাছে শম্পা দাবি করেন যে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন স্বামী। কিন্তু সন্দেহ হয় পরিবারের। মৃতের বাবা জ্যোতিষচন্দ্র মণ্ডল কাটোয়া থানায় পুত্রবধূর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি তিনি নাম নেন নয়নের। এমনকি, পুলিশি তদন্তেও খুনের তথ্য সামনে আসে। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের।

পুলিশি তদন্তে জানা যায় যে, সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলকোট থানার শ্যামবাজার গ্রামের বাসিন্দা সুজিত এবং শম্পার দুই সন্তানও রয়েছে। মিষ্টির দোকান ছিল সুজিতদের। কিন্তু, শম্পাদেবী বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় সংসারে শুরু হয় অশান্তি। তাই সন্তানদের গৃহশিক্ষক নয়নের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করে শম্পা।

কাটোয়া থানার পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে। তদন্তে উঠে আসে যে, সুজিতকে খুনে সাহায্যকারী ছিল শম্পার প্রেমিক নয়ন। আসলে সন্তানদের পড়াতে পড়াতে গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁর। আর সেখান থেকেই হত্যার ছক কষে তারা।

এই খুনের মামলায় মোট ১১ জন সাক্ষী দেন। প্রধান সাক্ষী হিসেবে ছিল সুজিত-শম্পার দুই নাবালক সন্তান। আদালতে তারা জানায় মা এবং গৃহশিক্ষকই বাবার খুনি। সরকারি আইনজীবী প্রসেনজিৎ সাহা জানান, “সুজিত মণ্ডলের খুনিদের শাস্তি দিতে ঐ দুজনের সাক্ষ্যদানে আদালতের সুবিধা হয়েছে।”

ওদিকে তদন্তকারীদের কাছে শম্পা স্বীকার করে যে, রাতে খাবারের সঙ্গে স্বামীকে পাঁচটি ঘুমের বড়ি খাইয়ে দেয় সে। তারপর মাঝরাতে নয়নকে ডেকে দুজনে মিলে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তদন্তকারীরা চার্জশিট দাখিল করে। তারপর থেকে দুজনেই কারাবন্দি।

সোমবার দুজনকেই দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। মঙ্গলবার, তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী মৃন্ময় চৌধুরী অবশ্য বলেন, “এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আমরা আবেদন জানাব।”

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।