সংক্ষিপ্ত
দেহ আটকে সকাল থেকেই দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ। বিক্ষোভের আঁচ পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পার্শ্ববর্তী থানা এলাকা থেকেও অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক সহ লালগোলা থানার ওসি সন্দীপ সেন নিজে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
পুলিশের তাড়া খেয়ে পুকুরে মরণঝাঁপ যুবকের। পরিনতি অকাল মৃত্যু। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুক্রবার তুলকালাম কান্ড বেঁধে গেল মুর্শিদাবাদের(Murshidabad) বাংলাদেশ(Bangladesh) ঘেঁষা সীমান্ত শহর লালগোলার(lalgola) চমকপুর এলাকা। মৃত যুবকের দেহ আটকে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম শহিদুল হক। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ(police) কর্মীদের শাস্তির দাবিও তুলেছেন স্থানীয়রা।
এদিকে দেহ আটকে সকাল থেকেই দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ। বিক্ষোভের আঁচ পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পার্শ্ববর্তী থানা এলাকা থেকেও অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক সহ লালগোলা থানার ওসি সন্দীপ সেন নিজে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কিন্তু তারপরেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি পরিস্থিতি। এমনকী পুলিশ জনতা খণ্ড যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ারও উপক্রম হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠের মধ্যে গোপনে জুয়া খেলার আসর বসেছিল। সেখানে আচমকা অভিযান চালাতে হাজির হয় লালগোলা থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। শুরু হয় ধরপাকড়।
আরও পড়ুন -লিখিত ভাবে আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত চলবে আন্দোলন, বিশেষ সাক্ষাৎকারে বললেন কৃষক নেতা
লাঠির ঘায়ে তড়িঘড়ি ছুটোছুটি শুরু করে দেয় সকলে। কয়েকজনকে পুলিশ ধরেও ফেলে। এরই মধ্যে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুয়ার আসরের পাশে ওই যুবক পেশায় দিনমজুর শহিদুল হক পুরো ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ছুট লাগায়। এরপরই পুলিশ তাকে তাড়া করতে গেলে প্রাণে বাঁচতে তার বাড়ি থেকে কয়েক শ মিটার দূরের একটি গভীর পুকুরে ঝাঁপ দেয় সে। তার আর কোনো হদিস মেলেনি। এদিকে তার বাড়িতে স্ত্রী সহ তিন সন্তান রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে শহিদুলের অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা পরিবারে।
আরও পড়ুন-সরকারের পক্ষে থাকলে মিলবে বিজ্ঞাপন, মমতার মন্তব্যে বিতর্কের গন্ধ
এদিকে পুকুরে ঝাঁপ দেওয়ার পরেই জলে নেমে শহিদুলের খোঁজ শুরু করে গ্রামবাসীরা। ফেলা হয় জালও। কিন্তু প্রথমে কোনও চিহ্নই পাওয়া যায়নি ওই যুবকের। পড়ে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছে ডুবুরি নামিয়ে দেহ খোঁজাখুঁজি শুরু করে। অবশেষে ঘন্টাখানেক ধরে চলার পরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এদিকে দেহ হাতে পাওয়া মাত্রই পুলিশের উপর ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ। গোটা এলাকজুড়েই ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভের আঁচ। এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন মৃত শহিদুলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর রেখা খাতুন। তার অভিযোগ, “পুলিশ মেরে আমার স্বামীকে পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছে। গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই। দোষীদের সাজা হওয়া দরকার”।
এদিকে গ্রামবাসীদের অনেকের আবার দাবি, ওই জুয়ার আসর থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় পুলিশের একাংশ। শুধু তাই নয় তার পরেই, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা যুবক শহিদুলকে আঘাত করে জলে ফেলে দেওয়া হয়। যার ফলেই এই মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। শেষ পাওয়া খবর থেকে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লালবাগ মহাকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।