সংক্ষিপ্ত
- দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্যানিংয়ের ঘটনা
- স্ত্রী, সন্তানকে ফেরাতে ধর্নায় যুবক
- যুবকের বিরুদ্ধে পাল্টা স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ
- পুলিশের মধ্যস্থতায় উঠল ধর্না
এবার স্ত্রী ও সন্তানকে ফিরে পেতে শ্বশুর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসলেন এক যুবক। অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেলেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্যানিংয়ের ১ নম্বর দিঘিরপাড় শীতলা মন্দির সংলগ্ন এলাকায় নিজের শ্বশুরবাড়ির সামনেই ধর্না দেন বিপ্লব মউল নামে ঐ যুবক। ঘটনার খবর পেয়ে দীর্ঘক্ষণের প্রচেষ্টায় ক্যানিং থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের তরফ থেকে এ বিষয়ে সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে ধর্না থেকে ওঠেন ওই যুবক।
রীতিমতো পোস্টার, প্ল্যাকার্ড লিখে ধর্নায় বসা ওই যুবকের দাবি, তিন বছর প্রেম করার পরে ন' বছর আগে দিঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। ২০১১ সালে বিয়ের পরেও সবকিছু ভালই চলছিল। তাঁদের একটি চার বছরের পুত্রসন্তানও রয়েছে। কিন্তু মাস সাতেক আগে দাম্পত্য কলহের জেরে ক্যানিংয়ের হেড়ভাঙা এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে সন্তানকে নিয়ে চলে আসেন বিপ্লবের স্ত্রী। এর পর আর ফেরেননি তিনি। ওই যুবকের দাবি, বার বার শ্বশুরবাড়ি এসে স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। স্ত্রীর কাছে তিনি ক্ষমা চাইলেও ফিরতে রাজি হননি তিনি। এমন কী, নিজের ছেলের সঙ্গেও দেখা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ বিপ্লবের। ওই যুবকের পরিবারের দাবি, স্ত্রী, সন্তানকে ফিরে না পেয়ে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন বিপ্লব। তাঁর অভিযোগ, ট্রেনের মধ্যে নিজের স্ত্রীকে অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে কথা বলতে শুনেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- বাসের মধ্যেই ঝগড়া- হাতাহাতি, বর্ধমানে স্বামীকে পোস্টে বেঁধে রাখলেন স্ত্রী
শেষ পর্যন্ত শুক্রবার সন্ধ্যায় কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় পোস্টার, প্ল্যাকার্ড সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন বিপ্লব। জামাই বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছে দেখে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। স্ত্রী ও সন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য বিপ্লবের কাতর আবেদনে সমবেদনা জানান স্থানীয় বাসিন্দারাও।
খবর পেয়ে ক্যানিং থানার পুলিশ কর্মীরা চলে আসেন ঘটনাস্থলে। বারে বারে বিপ্লবকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও পুলিশকর্মীদের কোনও কথা না শুনে অবস্থান চালিয়ে যেতে থাকেন ওই যুবক। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা অবস্থানের পর পুলিশের তরফ থেকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলে শেষ পর্যন্ত থানায় যেতে রাজি হন বিপ্লব। মাঝরাতে ওই যুবক, তাঁর স্ত্রী এবং শ্বশুর, শাশুড়িকে নিয়ে আলোচনায় বসেন ক্যানিং মহিলা থানার পুলিশকর্মীরা। বিপ্লবের শাশুড়ির পাল্টা অভিযোগ, জামাইয়ের অত্যাচারেই মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে এসেছে। শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাওয়ার বিষয়ে ভেবে দেখার জন্য বিপ্লবের স্ত্রীও দু' দিন সময় চেয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।