দেশের সামনে বড় বিপদ। করোনাভাইরাস সংক্রমণ যেভাবেই হোক ঠেকাতে হবে ভারতে। তাই রাজনীতির রঙ এখন উধাও সব নেতা-নেত্রীদের শরীর থেকেই। একসঙ্গে দেশকে করোনামুক্ত করতে লড়ছেন সকলেই। তাই অকপটে এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে বসলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দেশকে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। কিন্তু তারপরেও নিয়ম না মেনে পথ বেরতো দেখা গেছে বহু মানুষকে। এবিষয়ে রাজ্য প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও জমা পড়েছে রিপোর্ট। সূত্রের খবর রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা নিয়েও কথা হয়েছে দু'জনের। আর সেখানেই মমতাকে বাহিনী দিয়ে সাহায্যের কথা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বারবার মানুষকে বাড়িতে থাকতে বলছে প্রশাসন। তারপরেও অনেকেই বেরিয়ে পড়ছেন রাস্তায়। এনিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, মানুষ লকডাউন মানতে না চাইলে এবার নামাতে হবে আধাসামরিক বাহিনী। আর এবিষয়ে রাজ্যকে সাহায্যের হাত বাড়িতে দিতে প্রস্তুত কেন্দ্র।
কেবল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী করোনা মোকাবিলায় এরাজ্যের উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সন্তোষ প্রকাশ করেন । ফোনে মোদী মমতাকে জানান, দেশের অবস্থা এখনও যথেষ্ট গুরুতর। লকডাউন ও তা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে ও সমন্বয় রেখে চলতে চায় কেন্দ্র। ভবিষ্যতে কেন্দ্রের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী।
ট্রাম্পের দেশে করোনা সংক্রমণের ঘটনা লক্ষাধিক, ম্যালেরিয়ার ওষুধেই হচ্ছে চিকিৎসা
নিজের পুরনো রেকর্ড ফের ভাঙল ইতালি, একদিনে মৃতের সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলল হাজার
দিনে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছুঁলেও তৈরি আপ সরকার, ৪ লক্ষ মানুষকে খাওয়াবেন কেজরি
মোদীর ফোন পেয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা বলার ফাঁকে রাজ্যের জন্য বাজেট নিয়ন্ত্রণ আইনের নিয়ম শিথিল করার আবেদন জানান মমতা। রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (এসজিডিপি)-র ৫% বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী। এখন এসজিডিপি’র সর্বোচ্চ ৩% ঋণ নিতে পারে রাজ্য। নবান্নের দাবি পূরণ হলে চলতি আর্থিক বছরে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া যাবে। আর সেটা হলে রাজ্যের আর্থিক সঙ্কট কাটানো সহজ হবে বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, মোদী কিছু আশ্বাস না-দিলেও বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
প্রধানমন্ত্রীর পরেই মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক-একজন মন্ত্রীকে একএকটি রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আগে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গেও এক দফা কথা বলেছিলেন তিনি। জয়শঙ্করকে মমতা জানান, করোনা পরিস্থিতি সামলাতে কেন্দ্রের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতাই করবেন তিনি। এদিকে নবান্ন জেনেছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কয়েক জন জেলাশাসকের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী সরাসরি কথা বলেছেন। তাই ফোনালাপের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বুঝিয়ে দেন, বিদেশমন্ত্রী সরাসরি জেলাশাসকদের ফোন না-করে যদি মুখ্যসচিব বা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন, তা হলে সব দিকই বজায় থাকে।
কঠিন পরিস্থিতিতে কেন্দ্র-রাজ্য যে এক যোগে লড়ার কথা একে অপরকে বলেছেন সকলেই। তবে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক আরও একবার জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে ১০০ শতাংশ লকডাউনের প্রয়োজন রয়েছে। ফলে কেন্দ্র হয়তো ১৪ এপ্রিলের পরেও আরও কিছুদিন লকডাউন করে রাখতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেইষ কারণ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ভারতে করোনার প্রকোপ মারাত্মক আকার নিতে পারে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে।