
ব্ল্যাকক্যাপসদের হোয়াইট ওয়াশ! সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে আগে ব্যাট করে, সেই রান রক্ষা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিল ভারত (Team India)। সেই কারণেই রাঁচিতেই সিরিজ জিতে যাওয়ার পর, ইডেনে নিয়ম রক্ষার ম্যাচে ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চেয়েছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। আর সেই পরীক্ষায় লেটার মার্কস-সহ পাস করল ভারতীয় দল। ইডেন গার্ডেন্সে ম্যাচ জেতা শুধু নয়, রীতিমতো কর্তৃত্ব নিয়ে জিতল রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) দল। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রানের বিরাট স্কোর খাড়া করেছিল ভারত। রান তাড়া করতে নেমে প্রথমেই অক্ষর প্যাটেলের ঘুর্ণিতে পথ হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড (New Zealand)। মার্টিন গাপ্টিল (Martin Guptil) একা লড়লেও, শেষ পর্যন্ত ১১১ রানেই গুটিয়ে গেল তারা। ১৬ বল বাকি থাকতে ৭৩ রানে জিতল ভারত।
এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সময়ই অর্ধেক ম্যাচ জিতে নিয়েছিলেন রোহিত শর্মারা। রোহিত (৩১ বলে ৫৬) ইশান কিষাণ (২১ বলে ২৯)-এর পাওয়ার প্লের ঝোড়ো জুটি। তারপর স্যান্টনার তিন উইকেট নিয়ে পাল্টা লড়াই দিলেও, তারপর শ্রেয়স আইয়ার (২০ বলে ২৫) এবং ভেঙ্কটেশ আইয়ারের (১৫ বলে ২০) জুটিতে ইনিংস থিতু হয়। তবে, ভারতকে ১৮০ রানের গণ্ডি পার করে দিয়েছিল হর্ষল প্যাটেল (১১ বলে ১৮) এবং দীপক চাহারের (৮ বলে ২১) ক্যামিও ইনিংস। সব মিলিয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রান করেছিল ভারত। গড়পড়তা স্কোরের থেকে ১০-১৫ রান বেশিই উঠেছিল।
আরও পড়ুন - Solozano: দুঃস্বপ্নের টেস্ট অভিষেক, মাথায় আঘাত, স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়লেন ক্যারিবিয়ান তরুণ
তবে, রান তাড়া করার সময়, কিউই ব্যাটারদের মাথাই তুলতে দিলেন না ভারতীয় বোলাররা। ম্যাচের সেরা হয়েছেন অক্ষর প্যাটেল। ৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। কিউই ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই তাঁকে আক্রমণে এনেছিলেন রোহিত শর্মা। আর সেই ওভারেই ডেরিল মিচেল (৫) এবং মার্ক চ্যাপম্যানকে (০) ফিরিয়ে দেন তিনি। আর পঞ্চম ওভারে তাঁর বলে গ্লেন ফিলিপস (০) আউট হতেই পথ হারিয়েছিল কিউইরা। পাওয়ার প্লের ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৭ রান তুলতে পেরেছিল তারা।
"
একদিকে অবশ্য একা কুম্ভ হয়ে লড়ছিলেন মার্টিন গাপ্টিল। উল্টো দিকে একের পর এক উইকেট পড়ায় তাঁকেও গিয়ার নিচে নামাতে হয়েছিল ঠিকই, তবে তাঁকে দেখে কখনই মনে হয়নি কারোর বল খেলতে বিব্রত বোধ করছেন। তবে অর্ধশতরান পূর্ণ করার পরই এগারোতম ওভারে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে ছয় মারতে গিয়ে আউট হলেন তিনি। ৩৬ বলে ৫১ রান করলেন তিনি। গাপ্টিল যেভাবে এগোচ্ছিলেন, তাতে সেই সময় আউট না হলে একাই ম্যাচ বের করে নিয়ে যেতে পারতেন।
এরপর বলতে হবে ইশান কিষাণের দুরন্ত ফিল্ডিং-এর কথা। টিম সেফার্ট (১৮ বলে ১৭) রানআউট হলেন অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে। আর স্যান্টনার পরাস্ত হলেন ইশানের দ্রুততার কাছে। ডিপ মিডউইকেটে দুই ক্ষেত্রেই বলের উপর দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে নিখুঁত থ্রো করেছিলেন এই তরুণ ক্রিকেটার।
হর্ষল প্যাটেল তো আবার উইকেটহীন থাকতেই পারেন না। এদিনও ৩ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ফেরালেন জেমস নিশাম (৩) এবং ইশ সোধিকে (৯)। আর বলতে হবে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের কথা। ব্যাট হাতে এদিন তিনি ইনিংস থিতু করলেও ইনিংস ফিনিশ করে আসতে পারেননি। তবে বল হাতে তা পুষিয়ে দিলেন তিনি।
৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে দিলেন মাত্র ১২ রান। আর অ্যাডাম মিলনেকে আউট করে পেলেন আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের প্রথম উইকেট। তাঁকে রোহিত প্রথমে আক্রমণে এনেছিলেন ঠিক পাওয়ার প্লের পরে। দিয়েছিলেন মাত্র ৪ রান। তারপর আবার এলেন ১২তম ওভারে। সেই ওভারেই রানআউট হল সেফার্ট। আইয়ার দেন ৬ রান। ১৫তম ওভারে আবার বল করতে এসে তিনি মিলনের উইকেট নেন এবং দেন মাত্র ২ রান। কেকেআর-এর আইয়ার কিন্তু ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক স্তরেও দিব্বি মানিয়ে নিচ্ছেন।