Bhoot Chaturdashi: ভূত চতুর্দশী তেনাদের ছাড়া কি হয়, সন্ধেতেই দেখা মিলবে তাদের

রাত পোহালেই কালীপুজো। আর পুজোর আগের দিনটিকে ভূত চতুর্দশী হিসেবে ধরা হয়। ছোট থেকেই প্রায় সবাই এই দিনটিকে নিয়ে কোনও না কোনও গল্প শুনেছেন। তার মধ্যে একটি গল্প হয়তো সবাই শুনেছেন, যে এই দিন অন্ধকার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভূতেরা ঘোরাঘুরি শুরু করে দেয়। সেই কারণে এই দিন সন্ধেতে ১৪টি প্রদীপ দেওয়া হয়। আর তার সঙ্গে খাওয়া হয় ১৪ শাক। ছোট থেকে প্রায় সব বাঙালি বাড়িতেই এই নিয়ম চলে আসছে। এদিন কত ধরনের যে ভূত ঘুরে বেড়ায় তার কোনও ঠিক নেই। বেঁটে ভূত, মোটা ভূত, মামদোভূত, গেছোভূত, মেছোভূত, পেত্নি, শাঁকচুন্নি সহ আরও অনেক ধরনের ভূত ঘোরাঘুরি করতে থাকে। আর তাদের ভয়েই ভূত চতুর্দশীর দিন সন্ধেতে জ্বালা হয় ১৪টি প্রদীপ। ব্যস তাহলেই নাকি আর ভূতেরা আসতে পারে না। 

Maitreyi Mukherjee | Published : Nov 3, 2021 9:53 AM IST / Updated: Nov 03 2021, 03:51 PM IST

113
Bhoot Chaturdashi: ভূত চতুর্দশী তেনাদের ছাড়া কি হয়, সন্ধেতেই দেখা মিলবে তাদের

ভূত চতুর্দশীর (Bhoot Chaturdashi) দিন সকাল থেকে শুরু হয়ে যায় চোদ্দ শাক খাওয়ার তোড়জোড়। এখন অবশ্য প্রায় সব এলাকার বাজারেই একসঙ্গে চোদ্দ শাক পাওয়া যায়। কিন্তু, আগে ১৪ ধরনের শাক কিনে তা বাড়িতেই তৈরি করে নিতে হত। কালীপুজোর (Kali Puja) আগের দিন দুপুরে প্রায় সব বাঙালি বাড়ির কমন পদ থাকে এটি। 

213

আর সারাদিন কোনভাবে কেটে যাওয়ার পরই বিকেল থেকে শুরু হয় চোদ্দ প্রদীপ (14 lamps lit) দেওয়ার কাজ। আগে থেকেই সেই সব গোছ করে রাখা হয়। বেশিরভাগ বাড়িতেই এই প্রদীপ দেওয়া হয়। আসলে সকালে সূর্যের আলো থাকে ফলে ভূতেরা আসতে পারে না। কিন্তু, সন্ধে নামলেই নাকি বাড়ে তাদের উৎপাত। ফলে সন্ধে নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের আটকাতে দেওয়া হয় চোদ্দ প্রদীপ। 

313

এদিন সন্ধে নামার সঙ্গে সঙ্গেই আদাড়-বাদাড়, বেলগাছ, শেওড়াগাছ, জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বেরিয়ে আসে তারা। আর তারপরই শুরু হয় তাদের উৎপাত। আর কত ধরনের যে ভূত আছে তার কোনও ঠিক নেই। ভূতেদের (Ghost) নামের লম্বা তালিকা রয়েছে। গুনে শেষ করা যায় না সেই নাম।  

413

বেঁটে ভূত, মোটা ভূত, হোঁৎকা ভূত, মামদোভূত, গেছোভূত, মেছোভূত, পেত্নি, শাঁকচুন্নি, ব্রহ্মদৈত্য, এক ঠেঙো ভূত। আরও কত কি। আর এই সব ভূতেদের ভয়েই ভূত চতুর্দশীর দিন সন্ধে নামার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন বাড়ির কোনায় জ্বলে ওঠে প্রদীপ। ব্যস প্রদীপের আলোতে আর নাকি তারা আসতে পারে না। ছোট থেকে এই গল্প শুনে এসেছেন প্রায় সবাই। 

513

ভূত চতুর্দশীর দিন প্রদীপের আলো দেখেই পগারপার হয়ে যাবে ভূতেরা। আবার অনেকেই এই কথা মাথায় রেখে একটি রোমাঞ্চও বোধ করেন। ছেলেবেলার এই কথা ভেবে এখনও অনেকেই নস্টালজিক হয়ে পড়েন। আর প্রজন্মের পর প্রজন্মে এই গল্পই চলে আসছে।  

613

তবে এবার একটি ভূতেদের কথা জেনে নেওয়া যাক। তাদের সঙ্গে পরিচয় হওয়াও খুবই জরুরি। কারণ ভূত চতুর্দশীতে তাদের নিয়েই যখন এত আয়োজন তখন তাদের কথা না জানলে কখনও হয়! 

713

প্রথমেই আসা যাক পেত্নির কথায়। মরার আগে আসলে এর বিয়ে হয়নি। অবিবাহিতই থেকে গিয়েছে। মরে গিয়ে অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় এরা। জলা জায়গা বা শ্যাওড়া গাছে বাসা বাঁধে। আর সেখান থেকেই নাকি সবার দিকে খেয়াল রাখে।

813

শাঁকচুন্নিরা অবশ্য বিবাহিত। তাই তাদের হাতে থাকে শাঁখা, পলা ও সিঁথিতে সিঁদুর। আর এভাবেই সবার বাড়িতে খেয়াল রাখে তারা। বিবাহিত মহিলারা (Married women) এদের থেকে সাবধান। এরা বিবাহিত মহিলাদের উপর ভর করে। আর তার স্বামী সঙ্গ উপভোগ করতে পছন্দ করে। 

913

ব্রাহ্মণদের অপঘাতে মৃত্যু হলে তারা ব্রহ্মদৈত্য হয়ে যায়। তাদের গায়ে থাকে ধুতি, খালি গা ও পৈতে। আর এরা সাধারণত বেল গাছে থাকতেই বেশি পছন্দ করে। এরা অবশ্য বাজে হয় না। মানুষের উপকার করতে এরা খুবই ভালোবাসে। 

1013

মুসলমানদের অপঘাতে মৃত্যু হলে তারা হয়ে যায় মামদো ভূত। মামদো নাকি 'মহম্মদ' থেকে এসেছে। মামদোরা ঘাড়ে চাপলে বলা হয় জিনে ধরেছে। মাছপ্রিয় বাঙালি মৃত্যুর পরও নাকি মাছের লোভ সামলাতে পারে না। আর সেই কারণে মরে গিয়েও তারা মাছের সন্ধানে পুকুরের চারপাশে ঘোরাঘুরি করে। এমনকী, রাতে বা ভরদুপুরে কেউ যদি মাছ কিনে রাস্তা দিয়ে ফেরে তাহলে তাদের ঘাড়ে চেপে বসে মাছ ছিনিয়ে নেয় এই ভূত।

1113

ট্রেন বা বাসে কাটা পড়লে যদি মুণ্ডচ্ছেদ হয়ে মৃত্যু হয়, তা হলে সে হয়ে যায় স্কন্ধকাটা ভূত। নিজের কাটা মাথাটার খোঁজেই নাকি সে পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ায়। তাই রাতের অন্ধকারে মাথাহীন ভূত দেখতে চাইলে একবার রেল লাইন ধরে হেঁটে দেখতে পারেন। জানি না দেখা পাবেন কিনা! 

1213

এদের সঙ্গেই আবার রয়েছে নিশি। রাতের অন্ধকারে নাকি তারা আমাদের নাম ধরে ডাকে। জানা নেই যে তারা কীভাবে আমাদের নাম জানে। কিন্তু, ডাকে। সেই ডাকে সাড়া দিলেই গেল। সোজা টেনে নিয়ে যায় ঘরের বাইরে। কথায় বলে, সেই ডাকে সাড়া দিলে নাকি আর কখনও ফিরে আসা যায় না। 

1313

আর এই সব ভূত ভাগানোর জন্যই ভূত চতুর্দশীর দিন জ্বালানো হয় চোদ্দ প্রদীপ। ভূত চতুর্দশীকে নরক চতুর্দশীও বলা হয়। পুরাণ মতে, এই দিন স্বর্গ ও নরকের দ্বার কিছুক্ষণের জন্য উন্মোচিত হয়। একই সঙ্গে সেই দিনই বিদেহী আত্মা এবং স্বর্গত ব্যক্তিরা নেমে আসেন পৃথিবীতে। প্রদীপের চিহ্ন দেখে নিজেদের উত্তর পুরুষের ভিটেয় পৌঁছে যান। আর তাঁদের আশীর্বাদ করেন। 

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos