চার দেওয়ালের বদ্ধ পরিবেশে আঁকড়ে ধরছে মানসিক অবসাদ, সরোদের সুরে সাহায্যের হাত বাড়ালেন ইন্দ্রায়ুধ

  • করোনার জেরে ঘরবন্দী পরিবেশ।
  • চারপাশের বন্দী দশায় ঘিরে ধরছে মানসিক অবসাদ।
  • অবসাদ কাটাতে নব্য উদ্যোগ ইন্দ্রায়ুধ মজুমদারের।
  • সরোদের সুরে কাটবে মনের অবসন্নতা।

Riya Dey | Published : May 12, 2021 6:31 AM IST / Updated: May 12 2021, 12:51 PM IST

গত দেড় বছরের এই আবহ মনুষ্য সমাজকে পরিচিত করেছে এক নতুন পরিস্থিতির সাথে যেখানে হারিয়েছে একে অপরের সাথে সহজ বাক্যালাপ, বন্ধ হয়েছে স্কুল এবং চাকরি হারা হয়েছেন বহু মানুষ। মাস্ক পড়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এসবই এখন নিউ নরম্যাল। এই নতুন জীবনযাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করে চলেছেন সকলে। তবে কাজটা অতটা সহজ হচ্ছে না, তাই প্রকোপের গ্রাফ কমতেই মানুষ পা বাড়িয়েছিলেন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। তবে মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গ আবারও মানুষকে বন্দী করেছে সেই চার দেওয়ালের গন্ডীতে।

আরও পড়ুন - ভারতে করোনা - মৃত্যু-মিছিল ভেঙে দিল সব রেকর্ড, আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে প্রাণহানীর ঘটনা 

মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে গিয়ে নিজের অজান্তেই ঘিরে ধরছে মানসিক অবসাদ। এই পরিস্থিতিতে এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন সরোদ শিল্পী ইন্দ্রায়ুধ মজুমদার। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত হল এই সঙ্কট মোকাবিলার এক অন্যতম প্রধান অস্ত্র। মানুষের মনকে সুস্থ রাখার, মনকে ভালো রাখার ক্ষেত্রে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিশ্ব জোড়া খ্যাতি। 

 

আরও পড়ুন - নজরে বাংলা, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ২০ হাজার ছাড়ালো, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৬.৪২ শতাংশ

২০১৩ সালে তাঁর উদ্যোগে শুরু হয় ভারতবর্ষের অন্যতম বৃহৎ সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান "স্বরা-সম্রাট ফেস্টিভ্যাল"। গত বছর করোনা মহামারীর প্রথম তরঙ্গ চলাকালীন স্বরা সম্রাট ফেস্টিভ্যাল গোষ্ঠীর উদ্যোগে পৃথিবীর সব থেকে বড় 'ডিজিটাল ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ান ক্লাসিকাল মিউজিক অন্ড ড্যান্স' আয়োজিত হয়। ভারতবর্ষের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ শহরে এই ডিজিটাল কনসার্টের আয়োজন করা হয় যেখানে সমগ্র ভারতবর্ষ থেকে ১০৫ জন সঙ্গীত ও নৃত্য শিল্পী অংশগ্রহণ করেন।  সমগ্র অনুষ্ঠানটি তাঁদের নিজস্ব ওটিটি সাইটের মাধ্যমে দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়। 

 

আরও পড়ুন - খারাপ হয়ে বন্ধ ইলেকট্রিক চুল্লি, করোনা রোগিদের সৎকার আটকে বিপদে পরিবার

এরপর দ্বিতীয় তরঙ্গের ঢেউ আছড়ে পড়ার পর থেকেই তিনি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছেন তাঁর সাধ্যমত মানুষের কাছে সু পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার, তবে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবা দানের দ্বারা এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় একইসঙ্গে সুরের সঙ্গ লাভেরও একান্তই প্রয়োজন। সেই উদ্যোগেই গত ৬ই মে ২০২১ থেকে তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে সরোদ শিক্ষার প্রয়াস নিয়েছেন, এবং ইতিমধ্যেই বহু মানুষ এই উদ্যোগে সাড়া দিয়েছেন বলেও তাঁর বক্তব্য। এক্ষেত্রে সরোদের পাশাপাশি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিক্ষার সুযোগ রেখেছেন তিনি তবে গোটা শিক্ষাদানের বিষয়টাই চলবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অর্থাৎ শুধু মানসিক স্বাস্থ্য নয় করোনা মহামারির ভয়াবহতাকে স্মরণে রেখেই এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে।

মানুষের মন খুবই চঞ্চল তাই নিজের মনকে যে কোনো গঠনমূলক কাজে নিমজ্জিত করা খুবই প্রয়োজন বলেই তিনি করেন। বস্তুত এই অতিমারীকালে চারপাশের হাজারো নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনার মাঝখানে নতুন এই সৃজনশীল মনোভাব যে কোনো অবসাদগ্রস্ত বা অবসাদমুখী মানুষের ভাবাবেগের পরিবর্তন ঘটাবে বলেই তাঁর ধারণা। কেবল ভারতবর্ষ নয় বিদেশেও এই পদ্ধতি বহু মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হয়েছে বলেই তাঁর মত। 

শৈশব থেকেই সঙ্গীতকে জড়িয়ে বড় হয়ে ওঠা, এবার সঙ্গীত কেন্দ্রীক তাঁর এই অদৃষ্টপূর্ব প্রয়াস কোভিড সংকট মোকাবিলায় নিঃসন্দেহে এক নব্য বার্তা বয়ে আনতে চলেছে।

Share this article
click me!