হিংসার আগুন পুড়ছে দেশের রাজধানী। অব্যাহত মৃত্যু মিছিল। ইতিমধ্যে দিল্লিতে মৃত বেড়ে হয়েছে ৪২। জখমের সংখ্যা দুশোরও বেশি। রাজধানীর এই হিংসার আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল ২১ বছরের এক তরুণীর স্বপ্ন। হাতে থাকা মেহেন্দির রঙ ফিকে হওয়ার আগেই জীবন থেকে সব রঙ হারিয়ে গেল তাসলিন ফতিমার।
পূর্ব দিল্লির হিংসা কবলিত জায়গুলির মধ্যে কয়েছে গোকুলপুরীও। এখানকারই বাসিন্দা ২১ বছরের এই তরুণী। যার চোখের জল এখন বাঁধ মানছে না। আর বাঁধ মানবেই বা কি করে। বিয়ের মাত্র ১২ দিনের মধ্যে রাজধানীতে হিংসার ঘটনায় স্বামীকে হারালেন ওই তরুণী।
আরও পড়ুন: ফুটে উঠল দিল্লির হিংসার আরও এক নৃশংস রূপ, রেহাই পেলেন না ৮৫ বছরের বৃদ্ধাও
১৪ ফেব্রুয়ারি ঠিক ভালবাসার দিন আসফাক হোসেনের সঙ্গে নিকাহ হয়েছিল তাসলিন ফতিমার। বুলন্দশহরে আয়োজন করা হয়েছিল বিয়ের আসর। গত রবিবার পূর্ব দিল্লির মৌওজপুর ও জাফরাবাদে প্রথমে হিংসা ছড়ায়। সেদিন রাতেই আসফাক হোসেন মুস্তাফাবাদে ফিরেছিলেন। নববধূ এবং তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অপেক্ষা করছিলেন বুলন্দশহরে। মঙ্গলবার সকালে স্বামীর সঙ্গে সময় কাটাতে রাজধানীতে ফিরে আসেন ফতিমাও। তখন গোকুলপুরী ও মুস্তাফাবাদের অবস্থা আরও খারাপ।
আরও পড়ুন: 'মুসলিমদের ভুল বোঝাচ্ছে মমতাদিদিরা', অশান্তির দায় সুকৌশলে বিরোধীদের দিকেই চাপালেন শাহ
স্বামীর সঙ্গে সময় কাটাতে চেয়েছিলেন ফতিমা। কিন্তু সেই সাধ তাঁর অপূর্ণই থেকে গেল। পেশায় ইলেকট্রিশায়ন আসফাক রুজির প্রয়োজনেই রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে গুলি করা হয়। পরিবার দেহ খুঁজে পাওয়ার আগেই সরিয়ে ফেলা হয় যুবকের দেহ। রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলে পড়ে রয়েছে নর্দমার ধারে, এক প্রতিবেশীর থেকে একথা জানতে পারেন অসফাকের সব্জি বিক্রেতা বাবা।
অল হিন্দ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ২২ বছরের আসফাককে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পরে দিলশাহ গার্ডেনের জিটিবি হাসপাতালে তাঁর দেহ ময়াতদন্তের জন্য পাঠান হয়। এখনও পর্যন্ত ছেলের দেহ তাঁরা হাতে পাননি বলে অভিযোগ আসফাকের পরিবারের।