বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবার জিকা ভাইরাস পরীক্ষা এবং নমুনা সংগ্রহের উদ্যোগ শুরু হয়েছে সেখানে। প্রশাসনের আশঙ্কা, তড়িঘড়ি ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কানপুর জিকা ভাইরাসের ‘হটস্পট’ হয়ে উঠতে পারে।
করোনা (Corona) ও ডেঙ্গুর (Dengue) পর এবার জিকা ভাইরাস (Zika virus) নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh)। শুধুমাত্র কানপুরেই (Kanpur) জিকা ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ জন। এর ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬। আক্রান্তদের মধ্যে গর্ভবতী মহিলাও রয়েছেন। একথা জানিয়েছেন কানপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (Chief medical officer) ডাঃ নেপাল সিং (Nepal Singh)। ইতিমধ্যেই সেখানে তৎপর প্রশাসন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবার জিকা ভাইরাস পরীক্ষা (Zika virus Exam) এবং নমুনা সংগ্রহের উদ্যোগ শুরু হয়েছে সেখানে। প্রশাসনের আশঙ্কা, তড়িঘড়ি ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কানপুর জিকা ভাইরাসের ‘হটস্পট’ হয়ে উঠতে পারে।
বুধবার পর্যন্ত কানপুরের তিওয়ারিপুর, আশরফাবাদ, পোখরাবাদ, শ্যামনগর এবং আদর্শ নগর এলাকায় জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। আর ঠিক তার পরের দিন কানপুর শহরে বেড়ে যায় সংক্রমণ। শুধুমাত্র কানপুরেই নতুন করে ৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে শোনা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে নেপাল সিং বলেন, "বুধবার পর্যন্ত ১১ জনের শরীরে সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করার কাজও শুরু হয়েছে।"
আরও পড়ুন- দীপাবলির প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, বিশেষ বার্তা শিখদের
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন ভারতীয় বায়ুসেনার দুই আধিকারিক (two Indian Air Force personnel)। উত্তরপ্রদেশে জিকা ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কানপুরে ২৩ অক্টোবর প্রথম জিকা ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছিল। সেদিন একটি আইএএফ ওয়ারেন্ট অফিসার জিকা ভাইরাসে পজেটিভ রিপোর্ট পেয়েছিলেন। পরে আরও ২২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। গর্ভবতী মহিলা সহ মোট ৪৬৫গুলি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার পরপর দুই দিন ধরে এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। প্রতিটি নমুনা পরীক্ষার জন্য কেজিএমইউ লখনউ ল্যাবে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৩টি নমুনায় জিকা ভাইরাস পজিটিভ এসেছে বলেও জানান নেপাল সিং।
আরও পড়ুন- ব্রিটেনের মুদ্রায় প্রথমবার গান্ধী ও পদ্ম, দিওয়ালিতে বিশেষ মুদ্রা প্রকাশ ব়য়্যাল মিন্টের
যাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে, তাঁদের বয়স ৩০ থেকে ৪১ বছরের মধ্যে। এবং তাঁদের মধ্যে কয়েকজন উপসর্গহীন রয়েছেন। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত আইএএফ কর্মীদের এয়ার ফোর্সের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোগের বিস্তার পরীক্ষা করতে এবং জিকা ভাইরাসের উৎস্য ট্র্যাক করার জন্য, স্বাস্থ্য কর্মীদের সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অ্যান্টি-লার্ভা স্প্রে, জ্বর হওয়া রোগীদের শনাক্তকরণ, গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের স্ক্রিনিং সহ স্যানিটাইজেশন কর্মসূচি গ্রহণের জন্য জোর দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে।
আরও পড়ুন- দীপাবলিতে সরকারি ছুটির প্রস্তাব, মার্কিন কংগ্রেসে বিল পেশ
এমনিতেই করোনা এবং ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। তার মধ্যে আবার জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে সেখানে। তবে এনিয়ে স্থানীয়দের বেশি চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন নেপাল সিং। তিনি জানিয়েছেন, জীবাণুমুক্তকরণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মশার লার্ভা বিনষ্ট করা হচ্ছে। যাঁদের জ্বর রয়েছে, আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং সন্তানসম্ভবাদের পরীক্ষায় বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, জুলাই-অগাষ্ট মাস থেকে এর প্রকোপ শুরু হয়েছিল। প্রথমে কেরালা তারপর ধীরে ধীরে গোটা দেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। জিকা সাধারণত মশা বাহিত রোগ। মশার কামড় থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এর বাহক এডিস মশা। সাধারণত দিনের বেলা এই মশা কামড়ায়। চিকুনগুনিয়া রোগের মতো একই উপসর্গ দেখা যায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের শরীরে। জিকা ভাইরাসের উপসর্গগুলি হল জ্বর, গায়ে ব্যথা, চোখে ব্যথা, ত্বকে ব়্যাশ বের হওয়া।