বিরোধী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ যত খুশি বিক্ষোভ দেখান না কেন, কোনও অবস্থাতেই নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করা হবে না। মঙ্গলবার লখনউয়ের সভা থেকে ফের একবার এ কথা স্পষ্ট করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তো বটেই, রাস্তায় নেমেছে নাগরিক সমাজ। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়েছে রাজধানী দিল্লি। যেখানে অমিত শাহ মঙ্গলবার সভা করেন, সেই লখনউ-তেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শিশুদের নিয়ে অবস্থানে বসেছেন মহিলারা। কিন্তু তারপরেও সরকারের অনড় অবস্থান বুঝিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, 'আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমি বলে যাচ্ছি, এই আইন কোনও অবস্থাতেই প্রত্যাহার করা হবে না। তা সে যেই যত খুশি প্রতিবাদ করুন না কেন। আমরা বিরোধিতার ভয় পাই না। বিরোধিতার মধ্য়েই আমাদের জন্ম।'
কংগ্রেস তো বটেই, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করায় একযোগে সমস্ত বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের খোলা বিতর্কে অংশ নেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন অমিত। তিনি বলেন, 'মমতা দিদি, অখিলেশজি, মায়াবতীজি, আপনাদের আমি খোলা বিতর্কসভায় অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আপনারা নতুন আইনের একতা ধারা দেখান যেখানে দেশের মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।'
আরও পড়ুন- সংখ্যা গরিষ্ঠ মানেই সন্ত্রাসের রাজনীতি নয়, কাকে বিঁধলেন নেতাজির নাতি
কংগ্রেসের জন্যই নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনের প্রয়োজন হয়েছে বলেও মঙ্গলবার দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, প্রথমে দেশভাগ এবং পরে ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কংগ্রেস সরকার হাত গুটিয়ে থাকায় নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে। এ কথা বলতে গিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকেও আক্রমণ করেছেন অমিত শাহ। তিনি বলেন , 'দশ বছর ধরে ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় ছিল। পাকিস্তান, আলিয়া, মালিয়া, জামালিয়া থেকে জঙ্গিরা এসে এখানে হালা চালাত। মনমোহন সিং বা মৌনি বাবা তখন একটাও শব্দ উচ্চারণ করেননি।'
নাগরিকত্ব আইন পাশের প্রতিবাদে গোটা দেশের মতো উত্তরপ্রদেশও বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল। সেখানে অবশ্য বিক্ষোভ থামাতে কড়া অবস্থানই নিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। পুলিশের গুলিতে অন্তত কুড়িজনের মৃত্য়ু হয়েছে বলে অভিযোগ। অমিত শাহ অবশ্য মঙ্গলবার বোঝাতে চেয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের সমর্থন আসলে মোদী সরকারের দিকেই আছে। তিনি বলেন, 'উত্তরপ্রদেশের মানুষের সমর্থনেই মোদিজি দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করেছেন।'