নীলগিরির নিচেই কোয়েমবাটুর। কোয়েম্বটুর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সুলুর। সেখানেই যাচ্ছিলেন জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং তাঁর সহকর্মীরা। পাহাড়ি রাস্তাই ছিল হেলিকপ্টারটির যাওয়ার যাত্রাপথ। পাহাড়ি রাস্তায় মেঘ বা কুয়াশা চলে আসাতেই দৃশ্যমানতা কমে যায়। তবে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ আদতে কী তার একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আন্দাজ করা হয়েছে।
বুধবার তামিলনাড়ুর কুন্নুরে হেলিকপ্টার ক্র্যাশ প্রাণ হারিয়েছেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত (CDS Bipin Rawat) এবং তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত-সহ ১১ সেনা জওয়ান। এদিন কোয়েম্বাটোরের কাছে সুলুরে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটি থেকে কুনুরের ওয়েলিংটনে ক্যান্টনমেন্টে যাচ্ছিলেন তারা। তারই মাঝে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা তবে ঠিক কী কারণে হয়েছিল এই দুর্ঘটনা? প্রথম থেকেই এই ঘটনার কারণে মূলত খারাপ আবহাওয়াকেই (Weather) দায়ী করা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় যদি আবহাওয়ার খারাপ থাকে তাহলে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অবশেষে আবহাওয়াবিদরা (Weather Expert) দিলেন এই ঘটনার পূর্ণ ব্যাখ্যা।
আবহাওয়াবিদদের (Weather Expert) মতানুসারে, ঘটনার সময় নীলগিরি রেঞ্জে হেলিকপ্টার চলাচলের পরিবেশ মোটেও সমর্থনযোগ্য ছিল না। প্রকৃতপক্ষে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি হল যেখানে হেলিকপ্টারটি পড়েছিল পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারণে সেখানে নানান বাঁধার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সম্প্রতি পার্লামেন্টে এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন যে, সুলুর বিমান ঘাঁটিতে থাকা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল আইএএফ হেলিকপ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ হারায় রাত ১২টা নাগাদ।
বর্তমানে আবহাওয়াবিদরা (Weather Expert) জানিয়েছেন, উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ট্রপোস্ফিয়ারে (Troposphere) খাড়া বায়ুর তারতম্য অত্যন্ত বিশৃঙ্খল, বিশেষ করে মধ্য-ট্রপোস্ফিয়ারিক স্তরে। বাতাসের এই বৈচিত্রগুলি প্রতি ঘন্টায় পরিবর্তিত হতে থাকে ফলে তা এইভাবে একদিনের পূর্বাভাসেও ধরা যায় না।গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেমের ডেটায় মিলেছে এক নয়া তথ্য। সেখানে দেখানো হয়েছে কীভাবে Mi-17 V5 হেলিকপ্টারটি খাড়া বায়ুর সম্মুখীন হতে পারত?
* পৃষ্ঠতল
বাতাসের গতি: ৬ কিমি/ঘন্টা
বাতাসের দিক: ৯০ ডিগ্রি
৮৫০ এইচপিএ (মাটি থেকে ১.৫ কিমি)
বাতাসের গতি: ৮ কিমি/ঘন্টা
বাতাসের দিক: ৭০ ডিগ্রি
৭০০ এইচপিএ (মাটি থেকে ৩.৫ কিমি)
বাতাসের গতি: ৬ কিমি/ঘন্টা
বাতাসের দিক: ১৪০ ডিগ্রি
৫০০ এইচপিএ (মাটি থেকে ৫ কিমি)
বাতাসের গতি: ১৬ কিমি/ঘন্টা
বাতাসের দিক: ৯০ ডিগ্রি
২৫০ এইচপিএ (মাটি থেকে ১০.৫ কিমি)
বাতাসের গতি: ৪০ কিমি/ঘন্টা
বাতাসের দিক: ২৪৫ ডিগ্রি
৭০ এইচপিএ (মাটি থেকে ১৭.৫ কিমি: ট্রপোপজ স্তর)
বাতাসের গতি: ৩২ কিমি/ঘন্টা
বাতাসের দিক: ৬৫ ডিগ্রি
আরও পড়ুন- Gen Rawat Chopper Crash: 'প্রচন্ড শব্দে ছুটে এসেছিলাম বাইরে', প্রত্যক্ষদর্শী কী বলছেন
সেইসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, দুর্ঘটনার দিন হেলিকপ্টার চলাচলের জন্য বায়ুমণ্ডল (Atmosphere) মোটেই সহায়ক ছিল না। কারণ ওইদিন বায়ুমণ্ডলের (Atmosphere) সব স্তরেই একটি ভয়ঙ্কর বাঁধা কাজ করছিল। ঘটনার আসল বিন্দুটি ছিল কুনুরের কাছে নীলগিরি পর্বতমালার ঢালে প্রায় ১৫০০-২০০০ মিটার উচ্চতায়। এছাড়াও সেদিন ৮৫০ এইচপিএ স্তরে বা মাটি থেকে ১.৫ কিলোমিটার দূরে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ, যা থেকে একথা নিশ্চিত যে বায়ুমণ্ডল (Atmosphere) সেই স্তরে সম্পৃক্ততার কাছাকাছি ছিল। তাই বাতাস কম ঘন হবে এবং ওই স্থানে উড়ন্ত বস্তুকে বেশি উত্তোলন দেবে না।