ইন্ডিয়া গেট- চলতি সপ্তাহে ভারতের রাজনীতিতে কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। আসুন ঘুরে দেখি সেই ঘটনা প্রবাহের অন্দর মহলে।
ভোটের-মূল্য
রাজ্যসভার সাংসদ, একটা সময় ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি মধ্যপ্রদেশের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে যুক্ত। আদিবাসী সম্প্রদায়ের তরুণ মুখ। রাজনৈতিক কর্মজীবনে দ্রুত পটপরিবর্তন হচ্ছে। তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গুডবুকে রয়েছে। তাঁর বাগ্মীতা আর নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রীতিমত পছন্দ করেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি বছর মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের কথা রয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মনে করা হচ্ছে সেই ব্যক্তিকেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হতে পারে। মূল লক্ষ্যই হল আধিবাসী অধ্যুষিত পশ্চিম মধ্যপ্রদেশে বিজেপির ঘাঁটি শক্ত করা। কারণ আদিবাসীদের মধ্যে তাঁর প্রভাব দারুন। মধ্যপ্রদেশের মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ আধিবাসী।
অনুবাদে সমস্যা
উত্তরভারতীয় নেতাদের বক্তৃতা কন্নড় ভাষয় অনুবাদ করতে সক্ষম দলীয় সহকর্মী খুঁজে পাওযা রীতিমত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে। গেরুয়া শিবিরের কাছে এটি একটি মাথা ব্যাথার বিষয়।
বিজেপি যখন ভোটারদের আস্থা অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে কংগ্রেস রাহুল আর প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাইবোনেদের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু দুই দলের নেতা নিযুক্তি অনুবাদকরা দলীয় নেতাদের আবেগপ্রবণ হিন্দি বা ইংরেজি ভাষণ কন্নড়ে অনুবাদ করতে সমস্যায় পড়ছে।
যা ধরা পড়েছে সম্প্রতি কংগ্রেসের একটি মহিলা সম্মলেনে। সেখানে লক্ষ্মী হেব্বালকর প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর চেতনা আর আকাঙ্খায় ভরা ভষণ অনুবাদ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হন। তিনি প্রায়ই মূল ব্যক্তব্য থেকে সরে গেছে। একইভাবে ভারত জোড়ো যাত্রায় সময় ধরম সিং-এর ছেলে অজয় সিং ও নাগরাজ যাদব মোলাকালমুর এ দাভাঙ্গের তাদের নিজস্ব বক্তব্য শুরু করেছিলেন। যার ফলে উপস্থিত জনতা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল। একটা সময় রাহুল গান্ধী তাঁর অনুবাদকেও থামিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ তিনি রাহুলের ভাষণ আবেগ দিয়ে অনুবাদ করতে পারছিলেন না।
একই ছবি অমিত শাহের ক্ষেত্রেও ধরা পড়ে। অমিত শাহের মান্ডিয়া সফরের সময় বিজেপির বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে। একটি জনসভায় অমিত শাহ উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেছিলেন সবাই টিকা পেয়েছিলেন কিনা। কিন্তু অনুবাদ জিজ্ঞাসা করেন সকলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প থেকে উপকৃত হয়েছেন কিনা। যাইহোক সঙ্গে সঙ্গেই অমিত শাহ তাঁকে থামিয়ে দেন।
কেরলের ট্যাবলো
কেরল প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে ট্যাবলো প্রদর্শন করার সময় কাপ অ্যান্ড লিপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। এমনকি গত বছরেও একটি সামাজিক বার্তার অভাবের কারণে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। কিন্তু এই বছর কেরল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মনের কাছাকাছি এমন একটি ধারনার পরামর্শ দিয়ে ট্রাম্প কার্ড খেলছে বলে মনে করছেন অনেকে। কেরল সাধারণতন্ত্র দিবসের জন্য দিল্লিতে পাঠন ট্যাবলোতে নারী শক্তির একাধিক দিক উপস্থান করবে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিত্বকারী ২৪ জন মহিলা কর্তব্যপথে ট্যাবলোতে অংশ নেবেন। কালারিপায়াত্তু বা ড্রাম ছাড়াও ট্যাবলোতে গোত্র কালামণ্ডলমের শিল্পরা থাকবেন। পালাক্কাদ জেলার আটাপাদিতে কাজ করেন। উপজাতীয় গান, নৃত্য পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হবে। কালামণ্ডলমের নেতৃত্বে রয়েছেন গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত নানটাম্মা।
অন্যান্য শিল্পীরাও কেরলের প্রথম সারির শিল্পী। তাঁরা নারী ক্ষমতায়নের প্রকৃত উদাহরণ। এটির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বেটি বাঁচাও - বেটি পড়াও, উজ্জ্বলা যোজনার একটি বিশেষ দিক।
মধ্যপ্রদেশে মধ্যবর্তী সংশোধন
মধ্যপ্রদেশ রাজ্য বাজেট অধিবেশনের ঠিক আগে মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে বলে গুঞ্জন চলছে। যদিও মামাজি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য যেথেষ্ট চেষ্টা করতে পারেষ বিজেপি প্রায় ৬-৭টি মন্ত্রীকে বাদ দিতে পারে। রদবদলে নতুন মুখদের সামনে রাখতে পারে। নতুন মুখ প্রবর্তনের পিছনে ধারনাটি শিবরাজ সিং চৌহানকে একটি নতুন চেহারার মন্ত্রিসভা দিয়ে নির্বাচনী মরশুমে প্রবেশ করা ও অ্যান্ট - ইনকাম্বেন্সি ফ্যাক্টর হ্রাস করার লক্ষ্য বলেও মনে করা হচ্ছে।
রয়াল্টি বলান লয়াল্টি
রাজকীয় ব্যক্তিরা সর্বদাই তাদের লাল গালিচায় অভ্যস্ত। প্রায়শই তারা দলের ক্যাডারদের ভুল পথে নিয়ে গিয়ে শেষ করতে পারে। রাজপরিবারের একজন সদস্য বিজেপিতে যোগদানের পর থেকে ক্ষমতার করিডোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি ও তার ক্যাডারএর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছে। গত বছর স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা দলের সদর সেই নেতা সম্পর্কে চিঠিও লিখেছিলেন। যদিও তখন বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে নির্বাচনের দিন এগিয়ে আসছে। দলের মধ্যে অসন্তোষ চাপা দিতে সক্রিয় হচ্ছে শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপি শক্ত পথে হাঁটার চেষ্টা করছে।
বেইল-আউট
সোশ্যাল মিডিয়ায় গালিগালজ প্রায় সব রাজনৈতিক দলের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এমনকি নেতাদের আত্মীয়সজনকে টেটে আনতেও কেউ দ্বিধা করে না। মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে সকলকেই নিশানা করা হচ্ছে। কারণ উত্তর প্রদেশের ছোট নেতাজি খুঁজে পেয়েছেন। তিনি সম্প্রতি সাইবার যুদ্ধের একটি পর্বে একজন মহিলা দ্বারা অপব্যবহার করেছিলেন। যদিও এটি নিয়ে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। নেতাজি খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পেরেছিলেন যে কাজটি দ্বিজাতীয় অস্ত্র। তিনি খুব তাড়াতাড়ি পুলিশকে সেই মহিলা নেত্রীকে গ্রেফতার না করার পরামর্শ দিয়েছেন।
কিন্তু মানুষ জানে এটা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে হয়েছে। নেতাজি এই পদক্ষেপ উদারতার কারণে নেননি। প্রজ্ঞা তার উপর আবির্ভূত হয়েছিল। যে আরও আইনি পদক্ষেপের জন্য চাপ দওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট ভোটব্যাঙ্কের ক্ষয় ঘটাবে যার সঙ্গে মহিলা নেত্রী ছিলেন। আরও তাঁকে বলা হয়েছিল এই মহিলাটি কেবল তার দলের সোশ্যাল মিডিয়া সেল দ্বারা শুরু করা একটি সারির প্রতিশোধ নিচ্ছেন।
ডাবল ডোস
এই আইপিএস অফিসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুটি ঘটনায় জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইমলাইটে উঠেছিলেন। তিনি অস্বস্তিতে পড়েছিলেন যখন অখিলেশ যাদব দলের সোশ্যাল মিডিয়া প্রধানকে গ্রেফতার করার পরে পুলিশ সদর দফতরে পৌঁছেছিলেন। কারণ সেই সময় পুলিশের দেওয়া চা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে অফিসারকে একজন মিডিয়া ব্যক্তির কাজে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে। সরকার সাহেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেই মিডিয়ার ক্ষোভ প্রশমিত হয়। কিন্তু উত্তর প্রদেশে কিছু বড় টিকিটের ইভেন্ট হওযার কথা বিবেচনা করে একটি কঠোর পদক্ষেপ বিলম্বিত হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ
এবার কি মুখোমুখি বসিয়ে জেরা কুন্তল-তাপসকে? মঙ্গলবার মানিক ঘনিষ্টকে জরুরি তলব ইডি-র
Republic Day: বিতর্ক শেষ! দুই বছর পরে দিল্লির কুচকাওয়াজে বাংলার ট্যাবলো, মূল আকর্ষণ দুর্গাপুজো
নেতাজি কেন ফ্যাসিস্ট দেশগুলির কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন? জন্মদিনের একদিন আগে জানালেন অনিতা বোস পাফ