'মুসলিমদের জন্য কিছুই করিনি', ৬ সাক্ষাতে কীভাবে আলিমুদ্দিনের জীবন বদলে দিয়েছিলেন মোদী

গুজরাত তাঁর কাছে ছিল দাঙ্গার, ভূমিকম্পের

কিন্তু, সেই গুজরাতই বদলে দিয়েছিল তাঁর জীবন

পিডিপিইউ-তে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে এসেছিলেন সুলতান আলিমুদ্দিন

তারপর হয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ৬বার সাক্ষাত

Asianet News Bangla | Published : Nov 21, 2020 9:20 AM IST / Updated: Nov 24 2020, 06:28 PM IST

শনিবার, গুজরাতের গান্ধীনগরে পণ্ডিত দীনদয়াল শর্মা পেট্রোলিয়াম ইউনিভার্সিটি বা পিডিপিইউ-এর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ছাত্র সুলতান আলিমুদ্দিন। ২০০৮ সালে পিডিপিইউ-তে পড়তে দোনোমোনো করেও গুজরাতে এসেছিলেন। মনে ছিল দাঙ্গা এবং ভূমিকম্পের ভয়। কিন্তু, গুজরাতের মানুষ এবং নরেন্দ্র মোদী তাঁর সেই উপলব্ধি এবং মানসিকতা বদলে দিয়েছিল। একসময় মোদীর হাতে পবিত্র কোরান-ও তুলে দিয়েছিলেন আলিমুদ্দিন, পরবর্তীকালে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ছয়টি সাক্ষাত নিয়ে একটি বইও লিখেছেন তিনি। কিন্তু, কীভাবে বদলেছিল তাঁর গুজরাত এবং নরেন্দ্র মোদী নিয়ে উপলব্ধি, সর্বোপরি তাঁর জীবন - আসুন জেনে নেওয়া যাক -

নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সুলতান আলিমুদ্দিনের প্রথম সাক্ষাতটা ঘটেছিল কিছুটা ঘটনাচক্রেই। ২০১০ সালের মার্চ মাসে সংবাদপত্র ভরা থাকত গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দলের তদন্ত সংক্রান্ত প্রতিবেদনে। মোদী তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী, আর আলিমুদ্দিন পিডিপিইউ-এর একজন ছাত্র। তদন্তের ক্ষেত্রে মোদী সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকেই একটি টুইট পাঠিয়েছিলেন আলিমুদ্দিন। অদ্ভূতভাবে ওই টুইটের জবাবেই তাঁকে একটি বিশদ বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে।

পেশাদার জীবনে প্রবেশ করার পর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সুলতান আলিমুদ্দিন

২০১০ সালের ১ এপ্রিলের সেই সাক্ষাতকারে নরেন্দ্র মোদী তাঁকে বলেছিলেন, তিনি মুসলমানদের জন্য বাড়তি কিছু করতে পারেননি। তবে, একইসঙ্গে হিন্দু, জৈন, বা শিখদের জন্যও তিনি আলাদা করে কিছু করেননি। কারণ তাঁর কাঁধে সাড়ে ৫ কোটি গুজরাতিদের দায়িত্ব রয়েছে। তিনি যা কিছুই করেন না কেন, লক্ষ্য থাকে সাড়ে ৫ কোটি গুজরাতিরই সেবা করা। পরবর্তীকালে নরেন্দ্র মোদী তাঁকে পিডিপিইউ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, তাঁর স্বপ্ন ভারতকে তেল ও গ্যাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে স্বনির্ভর করা। কারণ চাহিদার ৮০ শতাংশই ভারতকে আমদানি করতে হয়।

আরও পড়ুন - 'তৃণমূলে যোগ নেই, তারাই শেষ কথা বলছে' - ধিকি ধিকি আগুনে 'ভাইপো' ঘি ফেললেন অমিত মালব্য

আরও পড়ুন - ফের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, শহিদ ১ সেনা জওয়ান - মরিয়া হয়ে উঠেছে পাক সেনা

আরও পড়ুন - এআইমিম-এর সঙ্গে কি জোট গড়বে তৃণমূল, বাংলার রাজনীতিতে বোমা ফাটালেন ওয়াইসি

ব্যক্তিগতভাবেও আলিমুদ্দিনকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে তাঁকে বলেছিলেন যাই হয়ে যাক, হাল ছেড়ো না। বিশ্ব সবসময়ই চলার পথে বাধা সৃষ্টি করবে। দীর্ঘমেয়াদী ছাপ ফেলতে গেলে সব প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে  বন্ধুত্ব করতে হবে। অনুসরণ করতে হবে স্বপ্নকে। কারণ আজকের বিশ্বে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।

নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের ভিত্তিতে সুলতান আলিমুদ্দিন রচিত গ্রন্থ, 'অন পয়েন্ট নরেন্দ্র মোদী - আপফ্রন্ট অ্যান্ড পার্সোনাল উইদ আ কমন ম্যান'

আলিমুদ্দিন জানিয়েছেন, গুজরাতে আসার সময় তাঁর মনে যে অসহিষ্ণু রাজ্যের ছবিটা ছিল, তাও নরেন্দ্র মোদীর গুজরাতে মুছে গিয়েছিল। কখনও অস্বস্তি বোধ হয়নি, কোনও অস্থিরতা ছিল না, কোনও কুসংস্কার, অসহিষ্ণুতা ছিল না। তাঁর ধর্ম তাঁর এগোনোর পথে কখনও বাধা হয়নি। গুজরাতের মানুষ সবসময়ই অন্যেকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। সব মিলিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জীবনটা তাঁর স্মরণীয় হয়ে আছে। বর্তমানে বড় সংস্থআয় কাজ করেন তিনি। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। আলিমুদ্দিনের মতে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ভারত সম্পর্কে ধারণায় একটা বড় পরিবর্তন এসেছে। আর সেটা নরেন্দ্র মোদীর জন্যই।

 

Share this article
click me!