তান্ত্রিক বা ওঝার পরামর্শ মেনে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময়ই ক্ষতি হয়। এমনকী মৃত্যুও হয়। কিন্তু চিকিৎসকের ভুল পরামর্শে মর্মান্তিক মৃত্যুর নজির খুব বেশি নেই। তবে উত্তরপ্রদেশে এরকমই ঘটনা দেখা গিয়েছে।
পাঁচ দিন বয়সের ছোট্ট মেয়েটাকে রোদে রাখতে বলেছিলেন চিকিৎসক। সেই পরামর্শ মেনে হাসপাতালের ছাদে প্রায় আধঘণ্টা শিশুটিকে ফেলে রাখেন আত্মীয়রা। উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরীতে সেই সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের পক্ষেই এই প্রচণ্ড তাপ সহ্য করা কঠিন। যে শিশু ভালো করে চোখ মেলতে পারেনি, তার পক্ষে তো এই রোদ সহ্য করা কোনওভাবেই সম্ভব ছিল না। শিশুটি এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপরেই সেখান থেকে পালিয়ে যান শিশুটিকে রোদে ফেলে রাখার পরামর্শ দেওয়া চিকিৎসক। এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের গাফিলতিতেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
শিশুমৃত্যুতে কাঠগড়ায় চিকিৎসক
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরীর ঘিরোর থানা এলাকায়। ভুগাই গ্রামের বাসিন্দা রীতা নামে এক মহিলা মৈনপুরীর রাধারমন রোডে অবস্থিত সাই হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। সি-সেকশনের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। জন্ম থেকেই শিশুটির শরীরে কিছু সমস্যা ছিল। এই কারণে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, প্রতিদিন আধঘণ্টা করে রোদে রাখতে হবে। এই পরামর্শ মেনে শিশুটিকে রোদে রাখেন পরিজনরা। এর ফলেই শিশুটি প্রাণ হারাল।
পুলিশে অভিযোগ শিশুটির পরিবারের
শিশুটির মৃত্যু হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, চিকিৎসকের পরামর্শ মানতে গিয়েই চরম ক্ষতি হয়ে গেল। হাসপাতাল প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর পর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন শিশুটির পরিবারের সদস্যরা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশে হাসপাতালটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এই ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাঁরা কেন শিশুটিকে দীর্ঘক্ষণ রোদে রাখলেন, সেটা স্পষ্ট নয়।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
সেলাই ছিঁড়ে ফের শিশুমৃত্যু এনআরএসে, নিম্নমানের সুতো দিয়ে অস্ত্রোপচারের অভিযোগ
নেপথ্য়ে শিশুমৃত্য়ু, জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হল ইকোপার্কের জলাশয়
অজানা রোগে শিশুমৃত্যু, পরিবারকে আর্থিক অনুদানের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি বিধায়কের