প্রসব-বেদনা নিয়ে সাত কিলোমিটার হেঁটেও মিলল না হাসপাতাল, লকডাউনে কোথায় জন্মালো এই একরত্তি

লকডাউনে নেই কোনও অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়ি

সাত কিলোমিটার যেতে হল পায়ে হেঁটে

তারমধ্যে মিলল না একটিও হাসপাতাল বা ক্লিনিক

শেষে কোথায় জন্ম নিল এই একরত্তি

 

amartya lahiri | Published : Apr 19, 2020 10:39 AM IST / Updated: Apr 20 2020, 01:55 PM IST

বাংলায় তাও বলা হয় দাঁতের ডাক্তার। ইংরাজিতে কথাটা ডেন্টিস্ট, সঙ্গে ডাক্তার শব্দটাই নেই। চিকিৎসা শাস্ত্রের অন্যান্য বিভাগের থেকে আলাদা করে পড়ানো হয় এই বিষয়। তাই অনেকেই ডেন্টিস্টদের ঠিক ডাক্তার মনে করেন না। এই নিয়ে কেউ কেউ মজাও করে থাকে। তবে লকডাউনের মধ্যে এক ডেন্টিস্ট-ই এক গর্ভবতী মহিলার একমাত্র সহায় হয়ে উঠলেন। তাঁর হাতেই জন্ম নিল ফুটফুটে একরত্তি। তবে এই মন ভালো করে দেওয়া কাহিনির নেপথ্যে কিন্তু, গাফিলতির অন্ধকারও রয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকে। এদিন লকডাউনের মধ্যে চরম সমস্যায় পড়েছিলেন এক গর্ভবতী মহিলা। প্রসব বেদনা শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ, কোনও হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার মতো অ্যাম্বুল্যান্স তো দূর, গাড়িই পাননি তিনি। স্বামীর সঙ্গে ওই অবস্থায় তাঁকে প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা হাঁটতে হয়। কর্নাটকের কোনও গ্রামের নয়, এই ঘটনা খোদ বেঙ্গালুরু শহরের। অতটা রাস্তা হেঁটে এসেও তারমধ্যে কোনও হাসপাতাল বা ক্লিনিক পাননি তাঁরা।

শেষে, ডাক্তার রম্যা নামে এক ডেন্টিস্টের ক্লিনিক খোলা পেয়ে সেখানেই প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকা ওই মহিলাকে নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন তাঁর স্বামী। দাঁতের ডাক্তার হওয়ার পর, রম্যা নিশ্চিতভাবে কখনও কল্পনাও করতে পারেননি, তাঁকে কোনও গর্ভবতীর চিকিৎসা করতে হবে। কিন্তু, করোনা-পররবর্তী পৃথিবীতে এমন অনেক কিছুই করতে হচ্ছে, যা আগে করার কথা ভাবা যায়নি। তাই ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীকে ফিরিয়ে দেননি তিনি।

কোভিড-১৯ হটস্পটে হানা রহস্যময় গাড়ির, ছড়িয়ে দেওয়া হল হাজার হাজার টাকা

করোনা-কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যৌন কেলেঙ্কারি, রোগীরাই মিলিত হচ্ছেন একে অপরের সঙ্গে

এবার আশঙ্কা আফ্রিকাকে ঘিরে, করোনার প্রকোপে ছাড়খাড় হতে পারে গোটা মহাদেশ

ডাক্তার রম্যার তত্ত্বাবধানেই জন্ম নেয় ওই শিশুটি। ওই ডেন্টিস্ট পরে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'জন্মের শিশুটি প্রথমে সাড়া দিচ্ছিল না। আমরা ভেবেছিলাম, শিশুটি বোধহয় মারা গিয়েছে। কিন্তু একটু পরেই আমরা ওর শ্বাস-প্রশ্বাস চালু করতে সক্ষম হই। তারপর মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করে নিজেই তাঁদের কাছের এক হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছেন ডাক্তার রম্যা। তারা দুজনেই এখন বেশ ভালো আছে বলেই জানা গিয়েছে।

এই ঘটনার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় জেনে অনেকেই ডাক্তার রম্যাকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, অনেকের মতো তিনিও এক করোনা-যোদ্ধা। কেউ কেউ বলেছেন, রম্যা বুঝিয়ে দিলেন ডেন্টিস্টদের নিয়ে মজা করাটা একেবারেই অনুচিত। আর কেউ কেউ আলো ফেলেছেন ওই গর্ভবতী মহিলার ৭ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে এসেও হাসপাতাল বা ক্লিনিক না পাওয়ার যন্ত্রনার উপর। অনেকেই বলছেন, বাড়ির সাত কিলোমিটারের মধ্যেও একটিও হাসপাতাল বা ক্লিনিক নেই, এর থেকেই সরকার কেমন পরিষেবা দিচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে। স্থানীয় ও রাজ্য প্রশাসনের কাছে এর জবাব চেয়েছেন তাঁরা।  

 

 

Share this article
click me!