সংক্ষিপ্ত
এশিয়া ইউরোপ, আমেরিকার পর এবার আফ্রিকায় জাঁকিয়ে বসছে করোনাভাইরাস
অন্তত ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছে রাষ্ট্রসংঘ
সেইসঙ্গে আরও ২ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষ প়তে চলেছেন চরম দারিদ্র্যের মুখে
তাই এই মহাদেশের জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের সুরক্ষা প্রয়োজন
শনিবারই, বিশ্বব্যপী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাটা দেড় লক্ষ ছাড়িয়েছে। 'ওয়ার্ল্ডোমিটার' অনুযায়ী রবিবার বিকেলে করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ১ লক্ষ ৬০ হাজারের কিছু বেশি, আর মোট আক্রান্তের সংখ্যাটা সাড়ে তেইশ লক্ষের মতো। এরমধ্যে আফ্রিকা মহাদেশের ৫৪টি দেশ থেকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা মাত্র ২০০০০-এর মতো। অর্থাৎ গোটা বিশ্বের নিরিখে আফ্রিকায় করোনাআক্রান্তের সংখ্যা ১ শতাংশেরও কম। কিন্তু,সামনের কয়েক মাসে ছবিটা বদলে যাবে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রাষ্ট্রসংঘ। আফ্রিকা মহাদেশ ছাড়খাড় করে দিতে পারে করোনা। এমনটাই আশঙ্কা তাদের।
গত সপ্তাহেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সাবধান করেছিল, এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার পর করোনাভাইরাস ক্রমে জাঁকিয়ে বসছে আফ্রিকা মহাদেশে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, আগামী ৬ মাসে এই মহাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ মিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ১ কোটিতে পৌঁছে যাবে। এবার রাষ্ট্রসংঘের ইকোনমিক কমিশন অফ আফ্রিকা বা ইউএইসিএ জানিয়ে দিল, কোভিড-১৯ মহামারীতে আফ্রিকা মহাদেশে অন্তত ৩,০০,০০০ মানুষের মৃত্যু হতে চলেছে। আরও ২ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষ-কে ঠেলে দেবে চরম দারিদ্র্যের দিকে। তাই তারা এখন থেকেই এই মহাদেশের জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের সুরক্ষা জাল তৈরি রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
ইউএনইসিএ-র এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার সার্বিক সমৃদ্ধি রক্ষা এবং উন্নয়নের জন্য অবিলম্বে স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা জাল তৈরির জন্য কমপক্ষে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। একই সঙ্গে এই আন্তর্দাতিক আর্থিক কমিশন আফ্রিকার অর্থমন্ত্রীদের অতিরিক্ত ১০০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার আহ্বানকেও সমর্থন করেছে। এর মধ্যে সমস্ত ঋণশোধ আপাতত বন্ধ রাখার বিষয়ও ধরা হয়েছে।
কোভিড-১৯ হটস্পটে হানা রহস্যময় গাড়ির, ছড়িয়ে দেওয়া হল হাজার হাজার টাকা
করোনা-কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যৌন কেলেঙ্কারি, রোগীরাই মিলিত হচ্ছেন একে অপরের সঙ্গে
ফোন বিক্রি করে কিনলেন চাল-আটা-চিনি, তারপর নিঃশব্দে ঝুলে পড়লেন টিনের ঘরের চাল থেকে
আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সরকারের করোনাভাইরাস প্রতিরোধের বিভিন্ন ব্যবস্থার ভিত্তিতে চারটি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে ইউএইসিএ-র প্রতিবেদনে। সেই মডেল অনুযায়ী, ১৩০ কোটি জনসংখ্যার আফ্রিকায় কোনও ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপ না হলে এই বছর ১২০ কোটি আফ্রিকান আক্রান্ত হবেন এবং মৃত্যু হবে ৩৩ লক্ষের। আর পরিস্থিতি যদি সবচেয়ে ভালো হয়, মানে সরকার খুব কডড়াভাবে পদক্ষেপ নেয়, তাহলেও ১২ কোটি ২৮ লক্ষ আফ্রিকানের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমাতি হবে, আর ২৩ লক্ষের কাছাকাছি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। আর মৃত্যু হবে অন্তত ৩ লক্ষ আফ্রিকান-এর।
আফ্রিকায় করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা অনেক কঠিন, কারণ ৩৬ শতাংশ আফ্রিকানদেরই বাড়িতে স্নান বা জামাকাপড় কাচার সুবিধা নেই। আর এই মহাদেশে প্রতি ১০০০ লোত পিছু হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ১.৮ টি। যা বিশ্বের উন্নত এবং অনেক উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় অনেক কম। তাই 'সর্বোত্তম পরিস্থিতি'তেও কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য, ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম এবং হাসপাতালে ভর্তি থাকা ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্যই ৪৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। সেই অর্থ আফ্রিকার হাতে নেই। সেইসঙ্গে এই সংকটে এই মহাদেশের অর্থনীতি আরও ২.৬ শতাংশ পর্যন্ত পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।