শুক্রবার বিশ্বকর্মা পুজো থাকায় আইন-শৃঙ্খলার যুক্তি দেখিয়ে পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া হল না। তাই ত্রিপুরা নিয়ে এবার নতুন স্ট্র্যাটেজি নিতে চলেছে তৃণমূল।
বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগরতলায় পদযাত্রা করার অনুমতি দিল না ত্রিপুরা পুলিশ। শুক্রবার বিশ্বকর্মা পুজো থাকায় আইন-শৃঙ্খলার যুক্তি দেখিয়ে পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া হল না। তাই ত্রিপুরা নিয়ে এবার নতুন স্ট্র্যাটেজি নিতে চলেছে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগাম অনুমতি চাওয়ার পর যখন অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না তখন আর জানিয়ে নয়। এবার না জানিয়ে সে রাজ্যে সারপ্রাইজ ভিজিট করা হবে। তৃণমূলের প্রতিনিধিরা আগেই ত্রিপুরায় পৌঁছে যাবেন। তারপর সেখানে গিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
আরও পড়ুন- রোমা ঝাওয়ারকাণ্ডে ১৬ বছর পর সাজা ঘোষণা, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড গুঞ্জন সহ ৪ জনের
আগরতলার রবীন্দ্রভবন থেকে চৌমোহনী পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল অভিষেকের। ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টোয় এই পদযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ওই রুটে ওই দিন অন্য রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ওই কর্মসূচিতে আগেই অনুমতি দেওয়া ছিল বলে উল্লেখ করে তারা। তাই তৃণমূলকে এই পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া যাবে না বলে ত্রিপুরা পুলিশের তরফে জানানো হয়। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ার পরই পদযাত্রার দিন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। এই কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সেই কর্মসূচিরও অনুমতি মেলেনি। কারণ হিসেবে ত্রিপুরা পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্বকর্মা পুজোয় যানজটের আশঙ্কার জন্য পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন- বুধবারের কর্মসূচিতে মিলল না অনুমতি, বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় পদযাত্রা করবেন অভিষেক
আগরতলার এসডিপিওর (সদর) কার্যালয়ের তরফে তৃণমূলকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাজ্যজুড়ে বিশ্বকর্মা পুজো পালিত হবে। বৃহস্পতিবার মূলত যান চলাচল এবং সার্বিকভাবে আইন-শৃঙ্খলার দিকে নজর থাকবে পুলিশের। তাই বৃহস্পতিবার তৃণমূলকে পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন- অভিষেকের পর এবার আইনমন্ত্রী, কয়লাকাণ্ডে মলয় ঘটককে তলব ইডি-র
এদিকে বুধ ও বৃস্পতিবার পদযাত্রার অনুমতি না মেলায় টুইটারে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক। তিনি লেখেন, "আমি যাতে ত্রিপুরায় প্রবেশ করতে না পারি তার জন্য যথা সম্ভব চেষ্টা করছেন বিপ্লব দেব। চেষ্টা করে যান। কিন্তু, আমাকে আটকাতে পারবেন না। তৃণমূলের প্রতি ভয় থেকেই স্পষ্ট যে সেখানে আপনার সরকারের মেয়াদ আর মাত্র কয়েকদিন। সত্যি বলতে কি, এই ভয় আমার ভালো লেগেছে!"
এ প্রসঙ্গে টুইটারে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ লেখেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এতটাই ভয় যে ১৫ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরার পদযাত্রায় হাস্যকর যুক্তিতে নিষেধ করার পর ১৬ তারিখেও তারিখেও আপত্তি করল ভীত বিজেপির পুলিশ। প্রমাণিত, তৃণমূল কংগ্রেসই এখানে প্রধান প্রতিপক্ষ। তাদের নিয়েই বিজেপির মাথাব্যথা। এভাবে ঠেকানো যাবে না। পরবর্তী পদক্ষেপ তৃণমূল মঙ্গলবার জানাবে।"
২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই ভোটকে পাখির চোখ করে নেমে পড়েছে তৃণমূল। সেখানে নিজেদের জমি শক্ত করতে মরিয়া তারা। এমনকী, ত্রিপুরায় যাওয়ার পর হেনস্থার শিকারও হতে হয়েছে অভিষেকদের। তাঁর কনভয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। বাঁশ দিয়ে তাঁর গাড়িতে আঘাত করা হয়। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন অভিষেক নিজেই। পাশাপাশি একাধিক তৃণমূল নেতা-নেত্রীকে হামলার মুখে পড়তে হয়েছিল সেখানে। এরপর থেকেই ত্রিপুরায় নানা কর্মসূচি নেয় তৃণমূল।