মুখে পাইপ চেপে ধরে ঢালা হল স্যানিটাইজার, যোগী রাজ্যে বর্বরোচিত হত্যা তরুণ করোনা-যোদ্ধার

মোরাদাবাদে চিকিৎসাকর্মীদের উপর পাথর ছোঁড়া হয়েছিল

এবার রামপুরে হত্যাই করা হল এক সাফাইকর্মীকে

তাকে জোর করে এক সিলিন্ডার স্যানিটাইজার খাওয়ানো হয়

তরুণ সাফাইকর্মীর দোষ কী ছিল জানেন

amartya lahiri | Published : Apr 19, 2020 2:00 PM IST / Updated: Apr 20 2020, 01:53 PM IST

উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে দিন কয়েক আগে করোনাভাইরাসের রোগীদের সনাক্ত করতে যাওয়া চিকিৎসকদের উপর পাথর ছুঁড়তে দেখা গিয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। কিন্তু, রবিবার সকালে সেই মোরাদাবাদ থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরের শহর রামপুর থেকে যে নক্কারজনক ঘটনার খবর প্রকাশিত হল, তা আগের সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার। জানা গিয়েছে, গত ১৪ এপ্রিল থেকে, এক সহ্গীকে নিয়ে রামপুরের পেমপুর গ্রামে স্যানিটাইজেশনের কাজ করছিলেন কুনওয়ারপাল নামে ২১ বছর বয়সী এক যুবক। ১৭ এপ্রিল বিকালে তাঁরা যখন কাজ করচেন, সেই সময়ই সেখানে এসে উপস্থিত হন ওই গ্রামের বাসিন্দা ইন্দ্রপাল ও তার বন্ধুবান্ধব। জানা গিয়েছে, কাজ করতে করতে আচমকা কুনওয়ারপালের হাতে থাকা স্যানিটাইজার যন্ত্র থেকে কয়েক ফোঁটা স্যানিটাইজার রাসায়নিক ছিটকে পড়ে ইন্দ্রপাল এবং তার সঙ্গীদের গায়ে।

আর তার থেকেই কুনওয়ারপালের উপর চড়াও হয় ইন্দ্রপাল ও তার দলবল। জানা গিয়েছে ইন্দ্রপালরা তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার পর কুনওয়ারপাল বারবার করে তাদের বুঝিয়েছিলেন, পোশাকের উপর পড়া রাসায়নিক স্যানিটাইজার, কোনও বিষ নয়। সামান্য বিষাক্ত, তবে তা পোশাকে পড়লে পোশাকটা জীবানুমুক্ত হবে, কোনও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। কিন্তু, তার সেই কথায় কান দেয়নি ইন্দ্রপালের দলবল। কুনওয়ারপালের মৃত্যুতেই তাদের ক্রোধ শান্ত হয়েছিল।

জানা গিয়েছে কুনওয়ারপাল নিজেই ইন্দ্রপালের হাতে স্যানিটাইজার যন্ত্রটি তুলে দিয়েছিলেন, জিনিসটি বিষাক্ত নয় তা বোজানোর জন্য। ফল হয় অন্যরকম। ইন্দ্রপাল ও তার বন্ধুরা প্রথমে স্যানিটাইজেশন যন্ত্রেরর পাইপটি কুনোয়ারপালের মুখে একেবারে গলা পর্যন্ত ঢুকিয়ে দেন এবং তারপর ওই রাসায়নিকের পুরো সিলিন্ডারটি তার মুখে ঢেলে দেন। বিষক্রিয়ায় করোনা-যোদ্ধা কুনওয়ারপাল ছটফট করতে শুরু করলে, ইন্দ্রপাল ও তাঁর সঙ্গীরা সেখান থেকে চম্পট দেয়।

প্রথমে কুনওয়ারপাল-কে ভর্তি করা হয়েছিল বিলাসপুরের এক হাসপাতালে। কিন্তু তার শারীরিক অবনতি হতে থাকায় তাকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মোরাদাবাদের টিএমইউ হাসপাতালে। শুক্রবার গবীর রাতে চিকিৎসা চলাকালীনই এই তরুণ করোনা-যোদ্ধার মৃত্যু হয়।

কোভিড-১৯ হটস্পটে হানা রহস্যময় গাড়ির, ছড়িয়ে দেওয়া হল হাজার হাজার টাকা

করোনা-কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যৌন কেলেঙ্কারি, রোগীরাই মিলিত হচ্ছেন একে অপরের সঙ্গে

এবার আশঙ্কা আফ্রিকাকে ঘিরে, করোনার প্রকোপে ছাড়খাড় হতে পারে গোটা মহাদেশ
কুনওয়ারপালের মৃত্যুর পরে শুধু তার বাড়ির লোকজনই নয়, রামপুরের যে মুটিয়াপুরা গ্রামে তাঁর বাড়ি, সেই মুটিয়াপুরারও অনেকে স্থানীয় থানায় তাঁর দেহ নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ তার দেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠায়। যাবতীয় অভিযোগ নথিভুক্ত করে পুলিশ একটি এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে অভিযুক্তরা পলাতক, তাদের সন্ধান শুরু করা হয়েছে। তবে মুটিয়াপুরা গ্রামের সকলেরই একটাই প্রশ্ন, লকডাউনে যখন সবাই বাড়িতে বন্দি থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখছেন, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্য়ানিটাইজেশনের কাজ করছিল কুনওয়ারপাল। কোন দোষে এই তরুণ ছেলেটিকে মরতে হল?

 

Share this article
click me!