উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন ২০২২ (Uttar Pradesh Elections 2022)'এর আগে দল ছাড়লেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা হেভিওয়েট কংগ্রেস (Congress) নেতা আরপিএন সিং (RPN Singh)। পরে ধর্মেন্দ্র প্রধান (Dharmendra Pradhan), জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার (Jyotiraditya Scindia) উপস্থিতিতে বিজেপিতে (BJP) যোগ দেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন (Uttar Pradesh Elections 2022) যত এগোচ্ছে ততই বাড়ছে দলবদলের গতি। এবার জোর ধাক্কা কংগ্রেসে (Congress)। মঙ্গলবার, দল ছাড়লেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দ্বিতীয় প্রজন্মের হেভিওয়েট কংগ্রেসি নেতা আরপিএন সিং (RNP Singh)। সোমবারই, তাঁকে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে তারকা প্রচারক হিসাবে ঘোষণা করেছিল দল। এমনকী তাঁকে প্রার্থী করার কথাও শোনা যাচ্ছিল। নিঃসন্দেহে এটা কংগ্রেস দলের জন্য বিরাট বড় ধাক্কা। টুইট করে তিনি বলেছেন, এদিন থেকে তিনি তাঁর 'রাজনৈতিক জীবনের নতুন অধ্যায়' শুরু করতে যাচ্ছেন। বিকালেই বিজেপিতে (BJP) যোগ দিলেন তিনি।
আরপিএন সিং, কংগ্রেসের শুধু উত্তরপ্রদেশের নেতা নন, ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) কংগ্রেসের ইনচার্জ পদেও ছিলেন। শোনা যাচ্ছিল, আসন্ন নির্বাচনে কুশিনগরের পদরুনা (Padruna) আসন থেকে আরপিএন সিং-কে প্রার্থী করবে কংগ্রেস। ২০১৭ সালে, এই আসন থেকেই লড়ে হেরে গিয়েছিলেন। এবার, এই কেন্দ্রে সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party) প্রার্থী হয়েছেন, সদ্য বিজেপি থেকে সপাতে যোগ দেওয়া যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট অনগ্রসর জাতির নেতা স্বামীপ্রসাদ মৌর্য (Swami Prasad Maurya)। কিন্তু, তার আগেই দলীয় সব পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন - UP Elections 2022: 'লুঙ্গিছাপ' থেকে 'গজনি', উত্তরপ্রদেশে পাল্টাচ্ছে বিজেপি নেতাদের ভাষা
প্রথমে টুইটারে তাঁর বায়ো থেকে কংগ্রেস সদস্য হিসাবে তাঁর পরিচয় সরিয়ে নেন। তার বদলে লেখেন, 'আমার নীতিবাক্য, সর্বদা প্রথমে ভারত'। এর কিছুক্ষণ পরই, তিনি টুইটারেই কংগ্রেস থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করেন। বলেন, 'আমি আমার রাজনৈতিক যাত্রার একটি নতুন অধ্যায় শুরু করছি। জয় হিন্দ।' এর কয়েক ঘণ্টা পর, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান (Dharmendra Pradhan), দলের প্রাক্তন সহকর্মী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া (Jyotiraditya Scindia) এবং অন্যান্য বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেন তিনি।
গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন আরএনপি সিং। তার বাবা সিপিএন সিং-ও (CPN Singh) ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক। একসময় আরএনপি সিং ছিলেন উত্তরপ্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি। পরে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (AICC) সেক্রেটারির দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৯৬ সালে পদরুনার বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। পরে পদরুনা থেকেই সাংসদ হন। ইউপিএ সরকারের তিনি সড়ক, পরিবহন ও মহাসড়ক প্রতিমন্ত্রী, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রতিমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তাহলে সমস্যা কী হল? আরএনপি-র ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, ইদানীং কংগ্রেস তিনি পার্টির মধ্যে একঘরে বোধ করছিলেন। তিন দিন আগেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময়ই বিজেপি-তে যোগদানের বিষয়ে কথাবার্তা পাকা হয়ে গিয়েছিল। গত সপ্তাহে যদিও তিনি সাংবাদিকদের সামনে বিজেপি কোনও নেতার সঙ্গে কোনও কথা বলার বিষয়ই অস্বীকার করেছিলেন। সম্প্রতি, রাজ্যের আরেক প্রাক্তন হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা জিতিন প্রসাদও (Jitin Prasad) বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কাজেই, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সুরু হওয়া সাত দফার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর (Priyanka Gandhi Vadra) সমস্যা আরও বাড়ল।