২০১১ সালে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতা দখল করেছিলেন কিম জং উন। ততারপর থেকে স্বৈরশাসক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চক্রান্তের আশঙ্কায় নিজেকে ক্রমশই রহস্যাবৃত করে রেখেছে।
দেখতে দেখতে ক্ষমতার শিখরে থাকার ১০ বছর পূর্ণ করতে চলেছেন উত্তর কোরিয়ার (North Korea)নেতা কিম জং উন (Kim Jong Un)। চলতি সপ্তাহে তাঁর ক্ষমতা দখলের ১০ বছর পূর্ণ হবে। তাই অভিজ্ঞতার নিরীখে তিনি বর্তমানে বিশ্বের অভিজ্ঞ নেতাদের মধ্য একজন বলা যেতেই পারে। কিম জং উন কয়েকজন বিশ্বমানের নেতাদের মধ্যে অন্যতম, যিনি সর্বদা আলোচনায় থাকেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি নিজেকে রহস্যে আবৃত করে রাখতে পেরেছেন। সবমিলিয়ে ক্ষমতার শিখরে থাকার ১০ বছর পরেও যথেষ্ট অলোচনা হয় কিম জং উনকে নিয়ে।
২০১১ সালে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতা দখল করেছিলেন কিম জং উন। ততারপর থেকে স্বৈরশাসক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চক্রান্তের আশঙ্কায় নিজেকে ক্রমশই রহস্যাবৃত করে রেখেছে। দেশের মানুষের কাছে তো বটেই বিশ্বের অধিকাংশ দেশ তাঁর ওপর নজরদারী চালালেও তিনি নিজেকে স্বাচ্ছন্দ্যে আড়ালে রাখতে পেরেছেন। তাঁর পরমাণু অস্ত্রাগার নিয়ে আমেরিকার পাশাপাশি পাশ্চাত্যের দেশগুলির যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে। কিন্তু তিনি তাঁদের মোহভঙ্গ করতে রাজি নন। মাঝে মাঝে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে দেখেন। বলা ভালে বিশ্ববাশীকে দেখেন তাঁর পরমাণু অস্ত্রাগেরর একটি ছোট্ট নিদর্শন।
৩৭ বছরের কিম জং উন আগামী আরও বেশ কয়েক বছর দেশের শাসনভার সামলাবেন বলেও মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ এখনও উত্তর কোরিয়ায় তাঁর সমকক্ষ কোনও নেতার উত্থান হয়নি। তিনি এতটাই স্বৈরতান্ত্রিক যে তিনি তা হতেও দেননি। তবে একমাত্র উদ্বেগের বিষয় হল তাঁর স্বাস্থ্য। গতবছরই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন শাসনক্ষমতার বাইরে ছিলেন। শারীরিক অবস্থা এতটাই সংকটজনক হয়েছিল তাঁর মৃত্যুর গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়েছিল।
উত্তর কোরিয়ার নিয়ে যেসব বিশেষজ্ঞ চর্চা করেন তাঁরা মনে করছেন বিচ্ছিন্নতা থেকে পরমাণু উন্নয়ন, পাশাপাশি বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী নেতাদের সঙ্গে কূটনৈতিক মঞ্চ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য কিম তাঁর প্রথম ১০ বছরের শাসনভারকে আগামী দিনে কাজে লাগাবেন। কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশানাল ইউনিফিকেশনের গবেষক কিম জিন হা বলেন, উত্তর কোরিয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের অবস্থায় বজায় রাখবে। কৌশলগতভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেবে। কিম এখনই তার নিজের লাইন থেকে সরে আসবেন না।
বাবা কিম ইল জন-এর মৃত্যু হয়েছিল ১৭ ডিসেম্বর ২০১১ সালে। তারপরই উত্তর কোরিয়ার শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন তিনি। কিন্তু শাসন ক্ষমতা দখলের ৬ বছরের মধ্যে নিজের গতিবিধি উত্তর কোরিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। কোনও বিদেশি রাষ্ট্রনায়কের সঙ্গে দেশে অথবা দেশের বাইরে দেখা করেননি। এই সময়টায় তিনি কঠোরভাবে নিজের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেন। তার পথের কাঁটা কাকেই রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে সৎ ভাই কিম জং ন্যামকে হত্যার অভিযোগও রয়েছে। কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে নার্ভ এজেন্ট দিয়ে ন্যামকে হত্যা করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি একটি সময় উত্তর কোরিয়ার নিষিদ্ধ অস্ত্র কর্মসূচিও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যান তিনি।
কিম পরমাণু কর্মসূচি রীতিমত ত্রাস গোটা বিশ্বের কাছে। তাঁর হাতে থাকা ৬টি পারমাণবিক পরীক্ষার মধ্যে চারটি পরিচালনা করেছেন। ২০১৭ সালে ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছেন। যা মার্কিন ভূকণ্ড তছনছ করে দিতে পারে বলেও দাবি কিমের।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংঘাতে গেলেই আলোচনার টেবিলেও বসেছিলেন কিম জং উন। সেই বৈঠকের দিকে লক্ষ্য ছিল গোটা বিশ্বের। যাই হোক প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুন জায়ে ইন-এর সঙ্গে এক টেবিলে বসেছিলেন তিনি।
তবে কিমের শাসনকালের সবথেকে অসফল দিক হল অর্থনীতি। বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রসত। কিম তা প্রাকাশ্যে আনতে না চাইলেই মাঝে মাঝে সেই ছবি প্রকাশ্যে আসে। মার্কিন অর্থনৈতিক অবরোধ জারি রয়েছে। গোটা দেশেই চরম সংকটের প্রান্ত রেখায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। তবে কিম শুধুমাত্র তার পারমাণবিক অস্ত্রগার দিয়েই নিজের ওজন বাড়িয়ে চলেছেন গোটা বিশ্বের কাছে। সিওলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পার্ক ওয়ান গন বলেছেন এটাই পিয়ংইয়ং-এর সবথেকে বড় সাফল্য বলে তিনি মনে করেন।
Sikkim Crime: বান্ধবী ফোন ধরেনি, 'রাগে' হাসপাতালের ডাক্তারকে কোপাল 'বন্ধু'
Taliban: আবার ভারতের দ্বারস্থ তালিবান সরকার, দাবি আফগান ছাত্রদের ভিসা
Pfizer Covid Pill: করোনাবিশ্বে আশার আলো ফাইজারের কোভিড বড়ি, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ