তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ভিকি সঙ্গীদের সঙ্গে নেই। সে আলাদাই রয়েছে। বরং এভাবে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। একের পর এক জায়গা পরিবর্তন করছে। কিন্তু, কোনও আত্মীয় বা পরিচিতের বাড়িতে থাকছে না।
গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়ায় (Kankulia road) জোড়া খুনের (Gariahat Double Murder) ঘটনার তদন্তে প্রতিদিনই একের পর এক নতুন তথ্য তদন্তকারীদের হাতে আসছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মূল অভিযুক্ত ভিকির আরও দুই সঙ্গীকে আটক করেছে পুলিশ (Police)। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে জাহির গাজী ও বাপি মণ্ডল। জোড়া খুনের ঘটনায় ভিকিকে তারা সঙ্গ দিয়েছিল বলে অনুমান পুলিশের। শুক্রবার ভোরে সুন্দরবন পুলিশ জেলার গোবর্ধনপুর কোষ্টাল থানার বুড়োবুড়ির টট এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মিঠু হালদারের (Mithu Haldar) ছেলে ভিকি গ্রেফতার (Arrest) হয়নি।
তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ভিকি সঙ্গীদের সঙ্গে নেই। সে আলাদাই রয়েছে। বরং এভাবে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। একের পর এক জায়গা পরিবর্তন করছে। কিন্তু, কোনও আত্মীয় বা পরিচিতের বাড়িতে থাকছে না।
আরও পড়ুন- কলকাতা সহ রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ, কোভিডের বলি ১৪, কমল সুস্থতার হারও
রবিবার গড়িয়াহাট থানা এলাকার ৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে সুবীর চাকি (Subir Chaki) ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের (Rabin Mondal) রক্তাক্ত ও ক্ষত-বিক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয়। এরপরই পরিচারিকা মিঠু হালদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, খুনের পর বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেলে ভিকির রক্তমাখা জামা নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের বাড়িতে ফিরে গিয়েছিল মিঠু। এরপর প্রমাণ লোপাটের জন্য সে জামা ধুতে যায়। তখনই সন্দেহ হয় বাড়ির মালিকের। তখন থেকেই ধীরে ধীরে অপরাধের পর্দা ফাঁস হতে শুরু করে।
আরও পড়্ন- বিয়ের পর থেকে লেগেই ছিল অশান্তি, ঘুমন্ত স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে আত্মসমর্পণ যুবতীর
মঙ্গলবার সকালে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা কাঁকুলিলায় সুবীর চাকির বাড়িতে যান। এরপর থ্রিডি স্ক্যানারে ঘটনার পুনর্নির্মাণের মধ্যে দিয়েই একাধিক আততায়ীর উপস্থিতির বিষয়ে নিশ্চিত হন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বাড়ি বিক্রির বিষয়টি জানতে পারেন।
আরও পড়ুন- পারদ পতন শহরে, শীতের আমেজের অপেক্ষায় শহরবাসী, বৃষ্টি নিয়ে কী বলছে হাওয়া অফিস
এদিকে বুধবার মিঠুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর থেকেই ভিকি ও তার সঙ্গীদের ফোন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তারা ঠিক কোথায় রয়েছে তা বুঝতে পারছেন না তদন্তকারীরা। তবে জেরার সময় মিঠু জানিয়েছে, ভিকির খুন করার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। ঘটনার পর গড়িয়াহাটের ওই বাড়ি থেকে ফোন করে তার মাকে বলেছিল 'মেরে ফেলেছি'।
তবে এটাই প্রথমবার নয় এর আগেও মা ও ছেলে খুনের চেষ্টার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে জানিয়েছে অভিযুক্তের কাকা। পারিবারিক কোন্দলের জেরে ভিকির বাবা থাকতেন কাঁকুলিয়ায়। অভিযুক্তদের কাকার অভিযোগ, বছরখানেক আগে বাবার কাছে হাজির হয়েছিল ভিকি। মাধ্যমিক ফেল ভিকি তখন তুখোর ইংরেজিতে কথা বলেছিল। এমনকী, নিজেকে মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ার বলেও পরিচয় দিয়েছিল সে। সবসময় স্যুট-বুট পরে গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াত। এরপর বাবাকে ছলেবলে ডায়মন্ড হারবারে নিয়ে যায় সে। আর সেখানে গিয়ে খুনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার সঙ্গেও তার মা মিঠু জড়িত ছিল। সেই নিয়ে ডায়মন্ড হারবার থানায় মামলাও চলে। যদিও সুবীর চাকি হত্যা মামলায় এখনও ভিকির নাগাল পায়নি পুলিশ। তার খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।