জোড়াবাগান কাণ্ডে এবার নয়া মোড়। ৯ বছরের নাবালিকার যৌন নির্যাতন করে শিশু খুনের কাণ্ডে আটক করা হয়েছে বাড়ির কেয়ারটেকারকে। কেয়ারটেকারকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনার রাত থেকে সকাল অবধি কে বা কারা বাড়িতে ঢুকেছিল, বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়। মূলত বয়ানে অসঙ্গতি থাকাতেই কেয়ারটেকারকে আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনার তদন্তের ভার নিয়েছে লালবাজার গোয়েন্দা বিভাগ।
আরও পড়ুন, জ্য়োতি বসুর দেখানো পথেই মমতা, আজ রাজ্যের বাজেট পেশ করবেন 'দিদি'
ময়নাতদন্তে রিপোর্টে উঠে এসেছে, নির্যাতিতার শরীর থেকে বিরিয়ানি ও চিপসের খাদ্যবশেষ পাওয়া গিয়েছে। অনুমান, বিরিয়ানি এবং চিপসের লোভ দেখিয়ে মাদক মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নাবালিকাকে। এর পরই অচৈতন্য করা হয় তাকে। এখানেই শেষ নয়, কেয়ারটেকারের মোবাইলে পর্ণোগ্রাফিও পাওয়া গিয়েছে। এখানেও অনুমান করা হয়েছে ওই কেয়ার টেকার মদ্যপ অবস্থায় পর্ণোগ্রাফি দেখে তারপরই উত্তেজিত অবস্থায় নাবালিকাকে ছাদে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন, শনিবার মালদা আসছেন জেপি নাড্ডা, তিন হাজার কৃষকের সঙ্গে সারবেন 'সহভোজ'
ঘটনাস্থল ঘুরে নমুনা সংগ্রহের পর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রথমে ওই ৯ বছরের নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়। তারপর ওই নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ফের গলায় উপর আড়াআড়ি ছুরি চালানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেই ছুরিও। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, নাবালিকার ৪টি দাঁত ভেঙে ঘটনাস্থলে পড়েছিল। এমনকি ওই নাবালিকার মাথার পিছন থেকেও চুল টেনে ছেড়া হয়েছে।
আরও পড়ুন, সই নকল নথি জালের অভিযোগ, ED-র প্রাক্তন অফিসার মনোজ কুমারকে তলব বিধাননগর কমিশনারেটের
অপরাধীর হাত থেকে বাঁচার জন্য বছর ৯ এর ওই মেয়েটি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। কারণ ঘটনাস্থল থেকে প্রচুর ধস্তাধস্তির চিহ্ন মিলেছে। এমনকি নিম্নাঙ্গের বস্ত্র এবং অন্তর্বাস পরনে থাকলেও গোপনাঙ্গ উন্মুক্ত ছিল। ছাদে হাওয়াই চটি ও খালি পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। এদিকে অভিযুক্তের পাশাপাশি বহু মানুষও খোঁজাখুঁজি করতে ছাদে উঠেছিলেন। ফলে প্রচুর পায়ের চাপে অপরাধী একজনই নাকি আরও অনেকে ছিল তা বোঝা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন, গরু পাচার কাণ্ডে নয়া মোড়, এবার এনামুল ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীকে তলব করল CBI
নাবালিকার পরিবার সূত্রে খবর, তিন বোনের মধ্যেই সেই ছিল সবচেয়ে ছোট। বছর নয়ের ওই মেয়েটি কলেজ স্ট্রিটের একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে পাঠরত ছিল। নাবালিকার বড় মামি জানান, বুধবার রাত ৮ নাগাত, ১৬ বছর বয়সী মেজো দিদির সঙ্গে মামা বাড়ি এসে ছিল সে। এরপর রাত ৮ টার পর থেকেই তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাতেই জোড়াবাগান থানা এলাকায় মিসিং ডায়েরি করে পরিবারের লোকেরা। এরপর রাত পেরোতেই বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা নাগাদ মামা বাড়ির কাছেই জোড়াবাগানের বৈষ্ণব শেখ স্ট্রিটর একটি তিন তলা বাড়ির ছাদে ওই বিবস্ত্র ও গলা কাটা অবস্থায় ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধার করা হয়। যৌন নিগ্রহ করে খুনের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।