মাথা ফাটার পর রাজ্য রাজনীতিতে অ্যাডভান্টেজে ছিলেন। এবার বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজই কাল হতে চলেছে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের। তেমনই দাবি করছে পুলিশ।
পুলিশের লাঠির ঘায়ে তাঁর মাথা ফেটেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন আগেই। শ্য়ামনগর, জগদ্দলে অশান্তির পিছনে পুলিশের উস্কানিই দায়ী বলেছিলেন এই বিজেপি নেতা। কিন্তু সোমবারই পুলিশের তরফ থেকে অন্য দাবি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, অর্জুন সিংয়ের মজদুর ভবনের ফুটেজ দেখে পাল্টা এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর জন্য় সাংসদকেই দায়ী করছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, মজদুর ভবনের ফুটেজ দেখে তাঁরা নিশ্চিত, অর্জুন সিংয়ের মাথা ফাটার দিন মুখ ঢাকা কিছু ছেলেকে অর্জুনের বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা যায়। এদের একজনের হাতে বোমা ভর্তি প্লাস্টিকের ব্যাগ ছিল। সিআইএসএফ জওয়ানদের সামনেই এলাকার নাম করা দুষ্কৃতীরা অর্জুনের বাড়ি থেকে বেরোয়। পরে তারাই অর্জুনের আত্মীয় সঞ্জয় সিংয়ের অফিস লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ। পরে সেফ শেল্টার অর্জুনের বাড়িতেই তারা ঢুকে যায়। অর্জুন সিং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও এখনও তৃণমূল কংগ্রেসেই রয়েছেন সঞ্জয়।
আরও পড়ুন :সক্রিয় রাজভবন, ভাটপাড়া কাণ্ডের জেরে ডিজি-কে তলব করলেন রাজ্যপাল
আরও পড়ুন : অশান্তির মূলে অর্জুন পুত্র পবন, ব্যারাকপুরের সিপি-র পাশেই নবান্ন
এদিকে জগদ্দল-শ্য়ামনগরে অশান্তি তথা অর্জুন সিংয়ের মাথা ফাটানোর প্রতিবাদে সোমবার ১২ ঘণ্টা পথ অবরোধ করে বিজেপি। যদিও এই অশান্তির পিছনে অর্জুন সিংয়ের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অর্জুন ও তাঁর বিধায়ক পুত্র পবন সিংয়ের নামে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি,এই দুজনের প্ররোচনাতেই যাবতীয় গন্ডগোলের সূত্রপাত হয়েছে। প্রথম থেকেই মজদুর ভবনে দুষ্কৃতীরা লুকিয়ে আছে বলে খবর আসে পুলিশের কাছে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন ব্যারাকপুর ডেপুটি কমিশনার জোন ওয়ান অজয় ঠাকুর। এরপরই দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করেন বলে দাবি। এমনকী অজয় ঠাকুর মজদুর ভবনে ঢুকতে গেলে অর্জুনের আত্মীয়রা বাড়ির গেট আটকে দেন। পুলিশ নাছোড়বান্দা মনোভাব নিলে হামলা করা হয় পুলিশের ওপর।
আরও পড়ুন :দফায় দফায় সংঘর্ষ, বনধ ঘিরে অশান্তির আগুন গোটা ব্যারাকপুরে
আরও পড়ুন :খাসতালুকে রক্ত ঝরল অর্জুনের, গুরুতর আহত সাংসদকে আনা হল কলকাতায়
এদিকে, সিসিটিভি ফুটেজের খবর প্রকাশ্য়ে আসতেই ভাটপাড়া বিধানসভার তৃণমূলের এক নেতা বলেন, প্রথম থেকেই ঘটনার পিছনে অর্জুন সিংয়ের প্রত্যক্ষ মদতের কথা বলে আসছিলাম আমরা। এবার সিসিটিভি ফুটেজই তা প্রমাণ করে দিল। এদিকে অর্জুনের মাথাফাটা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। সরাসরি অর্জুন সিংকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মমতার নাম এনেছেন মুকুল রায়। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ,রাজ্য়কে বিজেপিমুক্ত মুক্তাঞ্চল বানাতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। সেকারণে বিজেপির নেতা কর্মীদের ওপর সরাসরি আক্রমণ করা হচ্ছে। খোদ রাজ্য বিজেপির সভাপতির চা চক্রে হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়,রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থা।