বাংলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা নির্ধারণ নিয়ে এবার নবান্নের কাছে একাধিক প্রশ্ন করল কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল। যার জেরে রাজ্য়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ঘোষণা করেও প্রশ্নবাণে জর্জরিত রাজ্য় সরকার। নতুন করে রাজ্য়কে কী জিজ্ঞাসা করেছে কেন্দ্রীয় দল।
কেন্দ্রের রিপোর্টেও রাজ্য়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৮,আক্রান্ত ৫৭১.
শুক্রবার বিকেলে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৫১ জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ৩৮৫। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১০৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। করোনায় মডৃতের সংখ্যা নির্ধারণকারী কমিটি জানিয়েছে, ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত করোনার কারণে। বাকি ৩৯ জনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে কোভিড পজিটিভটা ইন্সিডেন্টাল ছিল বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।
'কাজে না আসলেই চাকরি থেকে বরখাস্ত', করোনা সঙ্কটে পুর চিকিৎসক-স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কড়া বার্তা.
বরাবরই রাজ্য়ে সরকারের বিরুদ্ধে করোনায় মৃতের সংখ্যা লুকোনোর অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। সম্প্রতি যা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে মুখ্যসচিব। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনও রোগী মারা গেলে তাঁর মৃত্যু করোনার কারণেই হয়েছে, নাকি অন্য কোনও কারণে, তা খতিয়ে দেখতে ৩ এপ্রিল বিশেষ কমিটি গড়েছিল রাজ্য সরকার। সেই কমিটিতে এখনও পর্যন্ত ৫৭টি করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, আন্তঃমন্ত্রক টিমের প্রধান অপূর্ব চন্দ্রকে করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে ইতিমধ্য়েই ব্যাখ্যা চিঠি দেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব অপূর্ব চন্দ্রেকে স্ব্স্থ্য় দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বলেছেন, যদি কোনও কোভিড রোগী পথ দুর্ঘটনায় মারা যান, তা হলে বলা যায় না তাঁর কোভিডে মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের এহেন যুক্তি শুনে বেজায় চটেছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা।
সংক্রামিত সন্দেহে আইডি-র ১৩ জন ইন্টার্ন কোয়ারেন্টাইনে, পরিষেবা নিয়ে চিন্তায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ.
এ নিয়ে পাল্টা মুখ্য়সচিবকে চিঠি দিয়েছেন অপূর্ব চন্দ্র। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু আর রোগের কারণে হাসপাতালে মৃত্যুর মধ্যে তো কোনও তুলনাই চলে না। এরপরই রাজ্য়ে করোনায় মৃত্যু নির্ধারণকারী কমিটি কীসের ভিত্তিতে সংখ্যা নির্ধারণ করছেন তা নিয়ে জানতে চাওয়া হয় মুখ্য়সচিবের কাছে। সূত্রের খবর, নতুন প্রশ্নমালায় অস্বস্তি বাড়তে পারে নম্বান্নের। ইতিমধ্য়েই করোনার মৃত্যু নির্ধারণের জন্য় রাজ্য় সরকার যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছ তার বিজ্ঞপ্তি প্রতিলিপি চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় দল।
যে কোভিড আক্রান্তরা অন্য কারণে মারা গিয়েছে, তাদের কেস স্টাডি চেয়েছে আন্তঃমন্ত্রক পর্যবেক্ষক দল। এখানেই শেষ। কোভিড আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু নির্ধারণে কত সময় নিয়েছে কমিটি তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। রাজ্য়ে অন্য কারণে মৃত্যু হলেও কি একই ভাবে মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হয়, তা জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় দল। সর্বশেষ যে বিশেষ পদ্ধতিতে রাজ্য়ে করোনায় মডৃতের সংখ্যা নির্ধারণ হচ্ছে, তা আইসিএমআর-এর গাইডলাইন মেনে হচ্ছে কিনা তাও রয়েছে কেন্দ্রের প্রশ্নাবলীতে।