কেন্দ্রীয় বাহিনীর পরিবর্তে পুরোভোট হয়েছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ দিয়ে। এদিকে প্রথম থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করেছিল বিজেপি। রবিবার সকাল থেকে পুরভোটকে কেন্দ্র করে কলকাতায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সরব হয় বিজেপি।
কলকাতা পুরভোটকে (KMC Election) কেন্দ্র করে রবিবার গোটা দিনই রাজ্য রাজনীতিতে (State Politics) উত্তেজনার পারদ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ভোট নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা (Opposition)। ভোটের (Vote) নামে প্রহসন হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপি (BJP)। সব অভিযোগ নিয়ে রবিবার সন্ধেতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও (Suvendu Adhikari)। কিন্তু, কমিশনের অফিসে যেতে গিয়ে চরম হেনস্থার শিকার হতে হয় তাঁকে। কমিশনের অফিসে যাওয়ার সময় বাধা দেওয়া হয় বিজেপির প্রতিনিধি দলকে। সে সময় পুলিশের (Police) সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। অভিযোগ, ওই সময় পুলিশের তরফে শুভেন্দুর গায়ে হাত দেওয়া হয়। স্বাধীনতার পর (After Independent) পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ প্রথম কোনও বিরোধী দলনেতার গায়ে হাত দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Force) পরিবর্তে পুরোভোট হয়েছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ দিয়ে। এদিকে প্রথম থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করেছিল বিজেপি। রবিবার সকাল থেকে পুরভোটকে কেন্দ্র করে কলকাতায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সরব হয় বিজেপি। এমনকী, এর প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তা অবরোধ করে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। তারপর ভোটে হওয়া অশান্তি নিয়ে অভিযোগ জানাতে প্রথমে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) দ্বারস্থ হয় বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। এরপর সেখান থেকে সোজা রাজ্য নির্বাচন কমিশের অফিসে যান তাঁরা। আর সেখানে গিয়েই চরম হেনস্থার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। বিজেপির প্রতিনিধি দল সেখানে পৌঁছানোর ঠিক আগেই কমিশনের অফিসের সামনে বাড়িয়ে দেওয়া হয় নিরাপত্তা। তারপর শুভেন্দুদের সেই অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে বচসা ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায় তাঁদের। সেই ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যান্ডেল থেকেও শেয়ার করেন শুভেন্দু। ওই পরিস্থিতিতে এক পুলিশকর্মী তাঁর গায়ে হাত দেয় বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতার। তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে বচসা চলার পর সবশেষে কমিশনের অফিসে ঢুকতে পারেন শুভেন্দুরা। শাসকদলের বিরুদ্ধে নালিশ ঠোকেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- ‘কোনও বুথেই পুনর্নির্বাচন হবে না’, সাফ জানাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন
এরপর কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, "সংবিধানকে সামনে রেখে আমি শপথ নিয়েছি। আমার গায়ে হাত দিয়েছে। এগুলো বাংলার মানুষ দেখছেন। স্বাধীনতার পরে পশ্চিমবঙ্গে কোনও বিরোধী দলনেতার গায়ে হাত দেওয়া হয়নি। কলকাতা পুলিশ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতগুলি বিধায়ক ও নেতাদের সামনে বিরোধী দলনেতার গায়ে হাত দিয়েছে। এর বিহিত ঠিক হবেই। কারণ পৃথিবীটা গোল।" রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, "আমি তোলামূল পার্টিকে বলে রাখি কংগ্রেস ও সিপিএম যেমন বিধানসভায় শূন্য হয়েছে এদের কপালেও ভবিষ্যতে ঠিক তেমনই আছে। পিসি ভাইপো বালির বাঁধ দিয়ে এই জিনিস বেশিক্ষণ চালাতে পারেন না। এটা বেশিদিন চলবে না। এর পতন অনিবার্য।"
আরও পড়ুন- কমিশনের অফিসের সামনে শুভেন্দুকে 'হেনস্থা' পুলিশের, নিন্দা জেপি নাড্ডার
তবে শুধুমাত্র তৃণমূল বা মমতার বিরুদ্ধেই নয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, "আমরা কমিশনকে বলেছি, যদি দম থাকে তাহলে ভোট বাতিল করে পুর্ননির্বাচন করুন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ধুলো মিশিয়ে দিয়েছেন। আমার কাছে একশোর বেশি ফুটেজ রয়েছে। ছাপ্পা ভোটের, নকল ভোটের, সিসিটিভি বন্ধ করার। এসব কমিশনে দিয়ে জানি কিছু হবে না, তবু আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।" পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ল্যাবে ৬ হাজার বুথের সিসিটিভির ফরেন্সিক অডিট করার দাবিও জানান তিনি।