কলকাতার বুকে গোলি মারো স্লোগান, রাজ্য়পাল বললেন ০.১ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ

  • 'গোলি মারো' স্লোগান মিডিয়ার কাছে বড় বিষয়
  • কিন্তু রাজ্য়পালের কাছে এই বিষয়টা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়
  •  সংবাদ মাধ্য়ম এই খবর ১০০ শতাংশ সেনসেশনাল হতে পারে
  • কিন্তু তাঁর জীবনে এই স্লোগানের গুরুত্ব ০.১ শতাংশ

Asianet News Bangla | Published : Mar 2, 2020 6:59 PM IST / Updated: Mar 03 2020, 12:32 AM IST

'গোলি মারো' স্লোগান মিডিয়ার কাছে বড় বিষয় হলেও তাঁর কাছে ততটা  গুরুত্বপূর্ণ নয়। সংবাদ মাধ্য়ম এই খবর ১০০ শতাংশ সেনসেশনাল হতে পারে। কিন্তু তাঁর জীবনে এই স্লোগানের গুরুত্ব ০.১ শতাংশ। সোমবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-এ জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্য়াকাণ্ডের প্রদর্শনীর উদ্বোধনীতে এসে এমনই মন্তব্য় করলেন রাজ্য়পাল জগদীপ ধনখড়।

ট্রাম্পের বিবেকানন্দ উচ্চারণে হোঁচট,মোদী সরকারকেই বিঁধলেন মমতা

এদিন তিনি বলেন, ভারত ইতিবাচক ভাবধারার দেশ। সেখানে দাঁড়িয়ে এই ধরনের লঘু বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। এরকম একটা সময়ে সংবাদ মাধ্য়মকেও কোন খবর দেখাবে আরা কোন খবর দেখাবে না তা নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত। আমি জানি এই রকম একটা স্লোগানের খবর মিডিয়ার কাছে ১০০ শতাংশ সেনসেশনাল। কিন্তু তাদেরও নিজেদের কর্তব্য়ের বিষয়ে ওয়াকিবহাল হওয়া উচিত।  

দিল্লি হিংসার প্রতিবাদ, রাজ্য়জুড়ে 'ছিঃ ছিঃ' করবে তৃণমূল

'গোলি মারো' স্লোগান ঘিরে তুঙ্গে রাজ্য় রাজনৈতিক তরজা। নাম না করে অমিত শাহের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যর্থতার আঙুল তুললেন তৃণমূল নেত্রী। নেতাজি ইন্ডোরের সভায় গেরুয়া শিবিরকে ঠুকে মমতার বক্তব্য়, ' দিল্লির গোলি মারো স্লোগান এখানে চলবে না, যারা বলেছে রাতেই গ্রেফতার করেছি।' 

তৃণমূল থেকে রাজ্য়সভায় প্রশান্ত কিশোর, এখনও সিদ্ধান্ত নেননি বললেন পিকে

বাংলায় সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের জায়গা নেই, বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির জেরেই দেশে ক্রমেই সাম্প্রদায়িক গন্ডগোল মাথাচাড়া দিচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেত্রীর। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে বিজেপি মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ তৈরি করছে বলেও সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের সভায় মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেরকম সময়ে রাজ্য়পাল জগদীপ  ধনখড়ের মন্তব্য় ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। 

গতকাল অমিত শাহের সফরে কলকাতায় 'গোলি মারো' স্লোগান ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ধর্মতলা চত্বরে। শহরের রাজপথে উস্কানিমূলক মন্তব্যের ঘটনায় সক্রিয় হয়েছে পুলিস। রবিবার রাতেই নিউ মার্কেট থানায় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৫৩-এ, ৫০৫, ৫০৬,  এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। যার মধ্যে দুটি জামিনযোগ্য ধারাও রয়েছে। এরপরই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। রাতভর অভিযান চালিয়ে ৩ বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

সূত্রের খবর, ধৃতেরা হল সুরেন্দ্র কুমার তিওয়ারি, ধ্রুব বসু এবং পঙ্কজ প্রসাদ। এরা তিনজনই পদ্ম শিবিরের আইনজীবী সেলের সদস্য।  সদর স্ট্রিট লাগোয়া টোটি লেন থেকে সুরেন্দ্র তিওয়ারি, হরিদেবপুর থেকে ধ্রুব বসু এবং পঙ্কজ প্রসাদকে ভবানীপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করা হবে। 

রবিবার সিএএ-র সমর্থনে কলকাতায় সভা করতে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যেখানে দেখা যায়, সভাস্থলে যাওয়ার আগে বিজেপি কর্মীদের মুখে ওঠে অনুরাগ ঠাকুরের স্লোগান। প্রকাশ্যে 'দেশ কে গদ্দারো কো-গোলি মারো সালো কো' বলতে শোনা যায় বিজেপি কর্মীদের। সেই অভিযোগেই এই কর্মীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দিল্লি নির্বাচনের প্রচারপর্বে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর প্রথম এই স্লোগান তুলেছিলেন। পরবর্তীকালে এই স্লোগান নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। 

সম্প্রতি হিংসার আগুনে পুড়েছে উত্তরপূর্ব দিল্লি। যার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৬ জন। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে তিনশো-রও বেশি। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বহু ঘরবাড়ি, ধর্মীয় স্থান, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে প্রচুর যানবাহনেও। এর পিছনে বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তৃতা ও স্লোগান-কে দায়ী করা হয়েছে। দিল্লি হাইকোর্টে এই স্লোগান দেওয়ার জন্য অনুরাগ ঠাকুরদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েক করার আবেদনও করা হয়েছে। এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আদালত পুলিশ-কে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে। 

শনিবার দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে ৬ জনকে। যাদের মুখে শোনা গিয়েছে, দেশ কে গদ্দারো কো, গোলি মারো শালো কো স্লোগান। দিল্লির রাজীব চক মেট্রো স্টেশনে এই স্লোগান শোনা গিয়েছে। আর তার জেরেই এই ছ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

Share this article
click me!