কোটি কোটি টাকা ঢুকছে অ্যাকাউন্টে, ৩০ টি গ্রুপের অ্যাডমিন 'জঙ্গি যুবতী'

  • মাত্র ২১ বছর বয়সেই ঢুকে গিয়েছিল সন্ত্রাসের বিষ
  • রাজ্য়ে বসে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠীর লিঙ্কম্যান
  • বাদুড়িয়ার যুবতীj অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন
  •   পুলিশের কাছে কীভাবে ধরা পড়ল যুবতীর জঙ্গি যোগ

Asianet News Bangla | Published : Mar 20, 2020 12:23 PM IST / Updated: Mar 20 2020, 06:16 PM IST

মাত্র ২১ বছর বয়সেই ঢুকে গিয়েছিল সন্ত্রাসের বিষ। যার জেরে রাজ্য়ে বসে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠীর লিঙ্কম্যানের কাজ করছিল  বাদুড়িয়ার যুবতী। অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি  টাকা লেনদেন  হওয়াতেই প্রথমে সন্দেহ হয় কলকাতা পুলিশের। এরপর যুবতীর ওপর নজর রাখা শুরু করে স্পেশ্য়াল টাস্ক ফোর্স। তারপরই বেরিয়ে আসে জঙ্গি যোগ।

পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ, রাজ্য়ে ধৃত 'লস্করের রিক্রটার'

জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই-এর যোগ রয়েছে কলেজ ছাত্রীর। নতুন লিঙ্কম্য়ান তৈরি করতে ৩০টিরও বেশি গ্রুপের অ্যাডমিন ছিল তানিয়া পারভিন। মূলত, হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকের মাধ্যমে জিহাদি বার্তা ছড়াচ্ছিল এই কলেজ ছাত্রী। বৃহস্পতিবারই কলকাতা এসটিএফ-এর জালে ধরা পড়েছিল এই যুবতী। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্য়েই তাকে জেরা  করে আরও এক ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে,অভিযুক্ত যুবতী তানিয়া পারভিনের সঙ্গে একই কলেজে পড়াশোনা করে প্রথম বর্ষের ছাত্র মনাজিরুল ইসলাম মন্ডল। 

আরও ১ করোনা আক্রান্ত কলকাতায়, ভয়ে কাঁপছে মহানগর

গতকালই আদালতের নির্দেশে জঙ্গি সন্দেহে ছাত্রীকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে হয়েছে। এরপরই জেরায় বেরিয়ে এসেছে একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের তথ্য়।  জানা গিয়েছে কমবয়সীদের মগজ ধোলাই শুরু করেছিল ওই ছাত্রী। তার সঙ্গে জুড়ে যায় একই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র মনাজিরুল ইসলাম মন্ডল। খবর জানতে পেরেই দেগঙ্গা থানার হাঁদিপুর গ্রাম থেকে যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছাত্রের বাবা রুহুল আমিন ইসলাম স্থানীয় এক মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আটক করা হয় ছাত্রকে। 

দ্বিতীয় করোনা আক্রান্তও শহরে ঘুরলেন বেপরোয়াভাবে, আতঙ্কে কাঁটা কলকাতাবাসী

ধৃত ছাত্রের কাছ থেকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ বেশ কয়েকটি মোবাইল ও গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেছে। পাকিস্তান সহ বেশ কয়েকটি দেশের জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তথ্য আদান প্রদান সহ ফেসবুক গ্রুপে একাধিকবার যোগাযোগ করে ওই ছাত্র। রাজ্য়ে  ধর্মীয় উস্কানিমূলক কাজ ও যুবক-যুবতীর দেশবিরোধী কাজের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করাই ছিল তার কাজ। রাজ্য়ে বিরোধীরা বার বার বলে এসেছে, মাদ্রাসা থেকে জঙ্গি সংগঠনগুলি কমবয়সী পড়ুয়াদের মগজ ধোলাই করে। ধর্মীয় উস্কানিকে কাজে লাগিয়ে দেশ বিরোধী শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে জঙ্গিরা। এবার তার সরাসরি প্রমাণ পাওয়া গেল।

বৃহস্পতিবার বসিরহাটের মালেয়াপুরে গ্রেফতার হয়েছে লস্করের লিঙ্কম্যান একুশ বছরের যুবতী তানিয়া পারভিনকে । তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আন্তর্জাতিক স্তরে বিশেষ করে পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবা তার সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্য়মে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করেছে । গ্রেফতারের সময় যুবতীর থেকে বেশ কিছু টাকা  ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস পাওয়া গিয়েছে। 

সূত্রের খবর, মুসলিম যুবক যুবতীদের জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করা ও ধর্মীয় কাজে লাগানোর জন্যই ওই যুবতীকে তৈরি করছিল লস্করের জঙ্গিরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যোগাযোগ তৈরি করত পারভিনকে  ব্যবহার করছিল তারা। অভিযোগ, লস্করের  কাজে বেশ কয়েকবার দিল্লি, মুম্বই ও কাশ্মীরেও গিয়েছে ওই ছাত্রী। ধৃত  যুবতীকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে তুললে তাকে ১৪দিনের  পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে যায় কলকাতা এসটিএফ। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী কাছ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে। তা থেকে পাওয়া পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবার বেশকিছু মোবাইল নম্বর ও জঙ্গিদের ছবি ছাড়াও কিছু ধর্মীয় বই পাওয়া গিয়েছে।

প্রায় দেড় থেকে দু-বছর ধরে ওই যুবতীকে এই জিহাদি কাজে উদ্বুদ্ধ করছিল জঙ্গিরা। মূলত, ধর্মীয় উন্মাদনার মাধ্য়েম যুবক-যুবতীদের জিহাদি কাজের সঙ্গে উদ্বুদ্ধ করতেই  যুবতীকে  কাজে লাগানো হচ্ছিল। জঙ্গি গোষ্ঠীর নির্দেশ মেনে আরও লিঙ্কম্যান তৈরিই  মূল উদ্দেশ্য ছিল যুবতীর।  তানিয়া পারভিন-এর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা সহ  ধর্মীয় উস্কানিমূলক উন্মাদনা তৈরি করার বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। 

এ প্রসঙ্গে বসিরহাট মহকুমার আদালতের সরকারি আইনজীবী অরুণ কুমার পাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই ছাত্রী পুলিশের নজরদারিতে  ছিল। যুবতীর ফোন ট্র্যাক করে পাকিস্তান সব বেশ কিছু দেশের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ পায় এসটিএফ।  এই যুবতীর বিরুদ্ধে মূলত রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ষড়যন্ত্র এবং অসামাজিক কাজ সহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে । অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১২১ এ, ১২৪ এ, ১২০বি, ৪১০, ৪২০ আইপিসি সহ আরও কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। 

Share this article
click me!