হাঁসখালিধর্ষণকাণ্ডে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান অন্যোন্যা চক্রবর্তী হাঁসখালি এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এদিকে এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে রাজ্যে।মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য তদন্তকে প্রভাবিত করবে কিনা, প্রশ্ন এড়ালেন তিনি।
হাঁসখালিধর্ষণকাণ্ডে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তবে এখানেই শেষ নয়, ঘটনার জল গড়িয়েছে অনেকদূর। প্রমাণ ঢাকতে না জানিয়ে ওই কিশোরীর মৃতদেহ দাহও করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে রাজ্যে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেছেন, রেপড, প্রেগন্যান্ট নাকি লাভ অ্য়াফেয়ার্স। এই মন্তব্যের পরেই বিশেষ করে উত্তাল হয়ে সারা বাংলা। এদিকে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান অন্যোন্যা চক্রবর্তী হাঁসখালি এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য তদন্তকে প্রভাবিত করবে কিনা, প্রশ্ন এড়ালেন তিনি।
রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান অন্যোন্যা চক্রবর্তী এদিন বলেন, 'পুলিশের ভূমিকায় যথেষ্ট সন্তুষ্ট। এফআইআর হওয়ার আগেই পুলিশ প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। জেরা করেছে অনেকজনকে। মুখ্যমন্ত্রীর বয়ান কি তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে, এই প্রশ্নের উত্তরে অন্যোন্যা চক্রবর্তী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর বয়ান নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। আমি মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্যপাত্র নই। আমি এখানে শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ার পার্সন হিসেবে এসেছি। আমি চাই বাচ্চাটা যাতে সুবিচার পায়। দেহ সৎকার হয়ে গিয়েছে। বাবা-মা জামাকাপড়ও ধুয়ে ফেলেছেন। ফলে কিছু প্রমাণ নষ্ট হয়েছে। তবে পুলিশ যথেষ্ট ভাল কাজ করেছে। পুলিশের ভূমিকায় যথেষ্ট সন্তুষ্ট। তার চরিত্র কেমন ছিল, কি ছিল, এর উত্তর দেব না। এটা একটা পকসো কেস। তার দন্ডগুলি যাতে দেওয়া হয়, সেগুলিই আমরা দেখবো।'
আরও পড়ুন, 'ভালোবাসার পর তাঁকে পুড়িয়ে ফেলার অধিকার আছে কি', ধর্ষণকাণ্ডে মমতাকে প্রশ্ন তনুজার
প্রসঙ্গত, সোমবার বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে হাঁসখালির ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন , হাঁসখালিতে ধর্ষণ বলবেন না কি প্রেম না অন্তঃসত্ত্বা নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন। আমি পুলিশকে বলেছি, ঘটনাটি কী। ঘটনাটা অত্যন্ত খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু, শুনেছি ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটির নাকি লাভ অ্যাফেয়ার ছিল।' এরপরই 'মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখে। অভিযোগ জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন', প্রশ্ন তোলেন মমতা। তিনি আরও বলেন, 'কাউকে কিছু না জানিয়ে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কী ভাবে এর তদন্ত করবে পুলিশ'।
আরও পড়ুন, ধৃত সত্যবানের হোটেল থেকেই কি তপন কান্দু খুনের ষড়যন্ত্র ? বিস্ফোরক তথ্যের তদন্তে সিবিআই
পরিবারের লোকজন তৃণমূলের সদস্য হিসেবে অভিযোগ ওঠার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন,'কারও বাবা-দাদা যদি তৃণমূল করে আর সেই ছেলে যদি প্রেম করে তাহলে কার কী করার আছে। বাংলার রাজ্যটায় সবাই তৃণমূল। কী করবেন বলুন। তৃণমূলকে টানার কী দরকার। তৃণমূল শুনলেই চোখে সর্ষে ফুল দেখছে।'এই ঘটনার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের তুলনা টেনে আরও বলেন, 'এটা কি উত্তরপ্রদেশ যে আমরা লাভ জেহাদ নিয়ে আলোচনা বসাব, এটা বাংলা। গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনওরকম রং না দেখেই গ্রেফতার করা হয়েছে।' তবে মমতার এই মন্তব্যের পর থেকেই বিতর্কের ঝড় রাজ্যে।