
দীর্ঘদিন ধরে, পাতিপুকুর রেল কোয়ার্টারে (Patipukur Railway Quarters) বসবাস করছেন বেশ কয়েক ঘর গরীব মানুষ। সোমবার সকালে আচমকাই সেই রেল কোয়ার্টার খালি করাতে এল আরপিএফ (RPF)। বাসিন্দারা জমায়েত করে তীব্র প্রতিবাদ জানালেন। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এখানে বসবাস করছেন, তাই কিছুতেই উঠবেন না। এই নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকার পরিস্থিতি। আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার সকালে বুলডোজার, জেসিবি মেশিন এবং বিশাল বাহিনি নিয়ে পাতিপুকুর রেল কোয়ার্টার এলাকায় হাজির হয় রেল পুলিশ। বাসিন্দাদের তারা এলাকা ছেড়ে উঠে যেতে বলেন। জানান, কোয়ার্টার ভাঙা হবে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর আগে আরপিএফ এই বিষয়ে তাদের কিছুই জানায়নি। কোনও নোটিশ দেয়নি। হঠাৎ করেই এদিন তাদের ঘর ভাঙার কথা বলা হচ্ছে। এই নিয়ে এলাকায় রীতিমতো ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন - চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে বিপত্তি, আরপিএফ জওয়ানদের তৎপরতায় রক্ষা যুবকের
রেল পুলিশ সূত্রে খবর, পাতিপুকুর রেল কলোনি এলাকাটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে রেলের পক্ষ থেকে। আগেই বাসিন্দাদের রেল কোয়ার্টার খালি করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কয়েকটি বিপজ্জনক বাড়ি, আগেই ভেঙে দেওয়া হয়। সেখানকার বাসিন্দারা, রেলেরআবার সেখানেই অস্থায়ী ঘর তৈরি করে বাস করতে শুরু করেছেন। রেল যাকে জায়গাটি বিক্রি করেছে, তিনি চুক্তির সম্পূর্ণ অর্থও দিয়ে দিয়েছেন। তিনি এবার জায়গাটির দখল চাইছেন। রেলের উপর মহল থেকে তাই জায়গাটি খালি করানোর চাপ রয়েছে।
বাসিন্দারা অবশ্য একেবারেই বাড়ি ছাড়তে নারাজ। রিঙ্কু দাস, প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তী, ডলি দাসরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই রেল কোয়ার্টারে ৬০-৭০ বছর ধরে আছেন। সকলেই গরীব মানুষ। গৃহপরিচার কাজ করেন, কেউ বা ভ্য়ানচালক কিংবা রিক্সাচালক। এই অবস্থায় হঠাৎ করে এসে তাদের উঠে যেতে বলা হচ্ছে। রেলের পক্ষ থেকে তাদের আগে থেকে কিছু জানানোও হয়নি। কোনও পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। তাঁরা এটা কিছুতেই মানবেন না।
এরপর অবশ্য, অবস্থা কিছুটা শান্ত হয়। বাসিন্দাদের কয়েকজন প্রতিনিধি রেল পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা জানান, এখন করোনার তৃতীয় তরঙ্গের (Covid Third Wave) ভয়ে কেউ কাউকে ঘর ভাড়া দিতে রাজি হবে না। কোনও আত্মীয় পরিজনও তাদের ঘরে আশ্রয় দিতে চাইবে না। কাজেই, এখন তাদের উঠে যেতে হলে, রাস্তায় গিয়ে বসতে হবে। রেল পুলিশের আধিকারিকদের তাঁরা অনুরোধ করেন, উপর মহলের সঙ্গে কথা বলে তাদের কয়েকটা দিন সময় দেওয়ার জন্য। তবে বাসিন্দাদের একাংশ, জায়গা না ছাড়ার বিষয়ে একেবারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।