দলের নির্দেশ অমান্য করে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিলেন শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারী। এই দুই সাংসদকে “বিজেপির ঘনিষ্ঠ বন্ধু” বলে কটাক্ষ করেছেন কুণাল ঘোষ। যদিও ভোটদান করা নিয়ে শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বছর দুয়েক ধরেই তাঁরা তৃণমূলে আছেন, নাক বিজেপিতে, নাকি কোনও দলেই নেই, তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি ধোঁয়াশায়। যদিও তাঁরা স্বীকার করতেন যে পরিবারের অন্যতম সদস্য শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে থাকলেও তাঁরা রয়েছেন তৃণমূলেই। তৃণমূল অবশ্য শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের দাবি নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে ইতিমধ্যেই।
এবার প্রকাশ্যে তৃণমূল বিরোধিতার নিদর্শন দিলেন শিশির ও দিব্যেন্দু। দলের নির্দেশ অমান্য করে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিলেন মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারের দুই সদস্য। বিজেপি সূত্রে খবর, ভারতের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারী। এই পদে জগদীপ ধনখড় বনাম মার্গারেট আলভার লড়াইয়ে দলীয় সাংসদদের ভোটদান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন লোকসভার তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই নির্দেশকে বেমালুম তোয়াক্কা করলেন না কাঁথি এবং তমলুকের দুই সাংসদ।
এই প্রসঙ্গে ঘাসফুল শিবিরের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, “যাঁরা দলের প্রতীকে জিতেছেন, তাঁদের উচিত দলের নির্দেশে মান্য করা। সেটা যদিও কেউ না করেন, সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টির দিকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং লোকসভার দলনেতা নিশ্চয়ই নজর রাখছেন।” এই দুই সাংসদকে “বিজেপির ঘনিষ্ঠ বন্ধু” বলেও কটাক্ষ করেছেন কুণাল। যদিও ভোটদান করা নিয়ে শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
সূত্রের খবর, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের লক্ষ্যে শুক্রবার রাতে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছিলেন দুই সাংসদ। সোমবার সাংবাদিকদের এড়িয়ে সংসদে পৌঁছে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা এবং ভাই। ভোটদানও করেছেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, এই নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের তরফ থেকে জানানো হয়, যেভাবে বিরোধীরা তাঁদের শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে বিনা আলোচনাতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আপত্তিজনক। এই বিশেষ বার্তা পৌঁছেছিল অধিকারী পরিবারের কাছেও।
প্রসঙ্গত, দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও খাতায় কলমে শিশির এবং দিব্যেন্দু এখনও তৃণমূলেরই সাংসদ রয়েছেন। যদিও দুজনের বিরুদ্ধেই পদ্মশিবিরের সাথে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের আরজিও জানানো হলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। তাই ভোটদান থেকে বিরত থাকার জন্য দুই সাংসদকে চিঠি দিয়েছিলেন সুদীপ।
আরও পড়ুন-
দিল্লিতে গিয়ে কাকে ভোট দিলেন শিশির অধিকারী? দ্রৌপদী মুর্মু ও জগদীপ ধনখড়ের প্রশংসা তৃণমূল সাংসদের মুখে
শিশির অধিকারীর ছবি ও ফোন নম্বর দিয়ে ‘বাবাকে বলো’ পোস্ট, কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের দিব্যেন্দুর
দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হবেই, বিজেপি শিবিরে ভাঙন আটকাতে মরিয়া চাল শুভেন্দুর