২০২৬-এর আগেই বিদায় নেবে তৃণমূল, দাবি সুকান্ত মজুমদারের

বাংলায় বিষমদের মৃত্যু থেকে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশকে ‘হাইজ্যাক’ বলে কটাক্ষ, দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার আগে তৃণমূলকে একহাত নিলেন বিজেপির রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

Sahely Sen | / Updated: Jul 22 2022, 12:38 PM IST

রাষ্ট্রপতি পদে দ্রৌপদী মুর্মুর জয় পশ্চিমবঙ্গে কীভাবে পালন করা হবে, সেই প্রসঙ্গে নিউটাউনে নিজের বাসভবন থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দলীয় কর্মসূচিতে হাওড়া ও বর্ধমান যাওয়ার আগে তিনি জানালেন, “প্রত্যেকটা মণ্ডলে আমরা এই জয়কে সেলিব্রেট করব, তার প্রস্তুতি আমাদের কর্মী-সমর্থকরা শুরু করে দিয়েছেন। আমরা বিভিন্ন আদিবাসী গ্রামে গিয়ে তাঁদের সাথে এই আনন্দে সামিল হব। স্বাধীনতার এত বছর পর যে শ্রেণীর মানুষরা সারা বছর কাজ করে গিয়েছেন, অথচ মুখে কোনও কথা বলেননি, তাঁদের মুখের ভাষা ভারতবাসীর সামনে আনার জন্য শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু সাংবিধানিক সর্বোচ্চ পদে বসতে চলেছেন।

এ ছাড়াও, ২০২২-এ তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ ঐতিহাসিক হতে চলেছে, এই দাবিটিকে নস্যাৎ করে তিনি বলেন, “প্রথম কথা হল, এটা হাইজ্যাক করা শহিদ দিবস, আর তা বড় হচ্ছে মানুষকে বিষ মদ খাইয়ে। দেশি মদের তুলনায় যে বিষমদের প্রতি বোতলে এক টাকা থেকে দেড় টাকা পৌঁছচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘ভাইপো’-র কাছে, আর এর ফলস্বরূপ এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে যে ১১ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সঠিক সংখ্যা এখনও আমরা জানতে পারছি না, প্রশাসন এই সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেটারই সেলিব্রেশন হচ্ছে ২১ জুলাইতে।”

তৃণমূলের শহিদ মঞ্চে বিজেপি নেত্রী মানেকা গান্ধির  যোগদান করার সম্ভভাবনা প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “ সেটা তাঁদের ব্যাপার।  তাঁরা কোথায় যোগদান করবেন, বিজেপির সেই নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই।”

হাওড়ার বিষমদ কাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাওয়ার আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানালেন, “বারবার পশ্চিমবঙ্গে দেশি মদ খেয়ে মারা যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গরিব মানুষ মারা যাচ্ছেন এবং প্রত্যেকটি মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। এই মৃত্যুর জন্য তৃণমূল কংগ্রেসই দায়ী। বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ আস্তে আস্তে জোগাড় করার চেষ্টা করছি, আমাদের কাছে খবরও এসেছে যে, প্রতি বোতল পিছু এক্সাইজ অফিসাররা অনৈতিকভাবে দুই টাকা করে তুলছেন, সেই টাকা হাত ঘুরে পৌঁছে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পর্যন্ত। তার ফলে, যে মদের দাম ৩০ টাকা হওয়া উচিত, সেটা ৩৪ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। লাভ করার জন্য সেই ভাটির মালিকদেরকে কাঠে ভার্নিস করার স্পিরিট মেশাতে হচ্ছে মদের সাথে। মৃত্যু এমনি এমনি হচ্ছে না, এটা খুন। এইভাবে গরিব মানুষদেরকে মেরে ফেলা হচ্ছে। আগামি দিনে আরও যে সমস্ত গরিব জেলা আছে, যেমন পুরুলিয়া, জঙ্গলমহল, যেসব জেলায় অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ, সেখানে আরও মৃত্যু ঘটবে। আমি এই ভবিষ্যৎবাণী করলাম, ভবিষ্যতে মিলিয়ে নেবেন।”

বর্ধমানের পর আবার হাওড়ায় বিষ মদের ছায়া।  রাজ্যে প্রায়ই ঘটে চলা এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি আগেই বলেছি প্রতি বোতলে যে পরিমাণ টাকা তোলা হচ্ছে তোলাবাজির জন্য, সেই টাকা সম্বন্ধে এর আগে খবর ছড়িয়েছিল সংবাদমাধ্যমে। যাঁরা ভাটির মালিকদের কাছ থেকে টাকা তুলে আনছেন, সেই ব্যবসায় লাভের অঙ্ক বাড়াতে গিয়ে মালিকেরা স্বাভাবিকভাবেই খুব বেশি নেশা ধরানোর জন্য রং করার স্পিরিট কেমিক্যাল মিশিয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সেইজন্যেই এতও মানুষের মৃত্যু ঘটছে। আগামি দিনেও ঘটবে যদি তোলাবাজি বন্ধ না হয়। রাজ্যে গরিব মানুষদের জোর করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।


একুশের শহীদ মঞ্চে যাওয়ার জন্য পুলিশের তরফ থেকে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কাছে ফোন গেছে, এই দাবি করে সুকান্ত মজুমদার জানান, “পুলিশ এখন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মচারীর মতো কাজ করছে। বাংলায় পুলিশ ছাড়া কিছু নেই। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ যদি অন্যান্য রাজ্যের পুলিশের মত নিরপেক্ষ হয়ে যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের ১৫ মিনিটও লাগবে না ঘরে ঢুকে তালা বন্ধ করে বসে থাকতে। বহু নেতা আছেন যাঁরা রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যাবেন, এত টাকা রোজগার করেছেন।”

২১ জুলাইয়ের জনসমাবেশে ২ লক্ষ লোক জমায়েত হয়েছেন শুনে বিজেপি রাজ্যসভাপতির বক্তব্য, “আপনাদের শুধু এটাই বলব, বামফ্রন্টের ২০০৯-এর ধর্মতলার সভার ছবি দেখে নেবেন। কার্যত সময় লাগেনি সেই সরকার উঠে যেতে। এই সরকারেরও তাইই হবে। ২০২৬ অবদি অপেক্ষা করতে হবে না।”

আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর জন্য সাঁওতালদের প্রার্থনা, টুইটারে আশার বার্তা সুকান্তর
আরও পড়ুন- 'মা দুর্গার চরণ তলে দাঁত বের করা সিংহ-ই থাকে' 'অশোক স্তম্ভ বিতর্কে'মন্তব্য বিজেপির রাজ্য সভাপতির
আরও পড়ুন- 'ওনার মনেও মমতা ব্যানার্জির ভক্তি রয়েছে এখনও' কার উদ্দেশ্যে বললেন দেবাংশু ভট্টাচার্য

Read more Articles on
Share this article
click me!