বাঙালির কাছে নারকেল মানেই নাডু়। বাঙালির কাছে মুগের ডাল মানেই নারকেলের বড়া। পিঠে-পুলি থেকে শুরু করে, মুড়ি মাখাতে পর্যন্ত এর ভয়ানক চাহিদা।
শুধু খেতেই ভাল নয়, এর উপকারও অনেক। নারকেল থেকে তৈরি হয় কোকোনাট মিল্ক, কোকোনাট ক্রিম। আবার ড্রায়েড কোকোনাটও পাওয়া যায় আজকাল। নারকেল তেল শুধু গায়ে-মাথায় নয়, দক্ষিণ ভারতে রীতিমতো রান্না হয় এই নারকেল তেলে।
১০০ গ্রামের মতো কাঁচা নারকেলের শাঁস থেকে পাওয়া যায় ৩৫৪ ক্য়ালোরি। আর শুকনো নারকেল বা ড্রায়েড কোকোনাট ৬৫০ ক্য়ালোরি। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা নারকেলে প্রোটিন থাকে ৩ গ্রাম। আর শুকনো নারকেলে থাকে ৭.৫ গ্রাম। কার্বোহাইড্রেট থাকে ১৫ গ্রাম, কাঁচা নারকেলে। শুকনোতে থাকে ২৫ গ্রাম। ফাইবার থাকে কাঁচাতে ৯ গ্রাম। শুকনোতে ১৮ গ্রাম। ফ্য়াট থাকে ৩৩ গ্রাম কাঁচাতে। আর শুকনোতে থেকে ৬৫ গ্রাম।
কাঁচা ও শুকনো, নারকেলের দুই অবস্থাতেই থাকে ম্য়াঙ্গানিজ, কপার, সেলেনিয়াম, ম্য়াগনেশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, পটাশিয়াম। কার্বাহাইড্রেট উচ্চমাত্রায় থাকলেও নারকেলে বেশি মাত্রায় থাকে ফ্য়াট। প্রোটিন ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল থাকে নারকেলে। এতে খুব কম পরিমাণে হলেও থাকে ভিটামিন-বি। শরীরের বিভিন্ন কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে এই মিনারেলগুলো। নারকেলে থাকা উচ্চমাত্রায় ম্য়াঙ্গানিজ হাড়়ের স্বাস্থ্য়রক্ষায় বিশেষভাবে কাজ করে। এবং কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিনের মেটাবলিজমে সাহায্য় করে। নারকেলে থাকা কপার ও আয়রন বিভিন্ন লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য় করে। এতে থাকে সেলেনিয়াম। গুরুত্বপূর্ণ এই অ্য়ান্টি অক্সিডেন্টটি শরীরের কোষকে রক্ষা করে।
শুকনো নারকেলের শাঁস থেকে তৈরি নারকেল তেল, বেলি ফ্য়াট ভুঁড়ি কমাতে সাহায্য় করে। এই ভুঁড়ি কিন্তু হার্ট ডিজিজ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। নারকেলে থাকে উচ্চমাত্রায় অ্য়ামাইনো অ্য়াসিড, হাইফাইবার ও হেলদি ফ্য়াট। যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য় করে। নারকেলের শ্বাসে থাকে অ্য়ান্টি অক্সিডেন্ট ফেনোলিক যৌগ। যা কোষের অক্সিডেটিভ ড্য়ামেজ থেকে রক্ষা করে।
অতএব মুডিতে হোক কি নাড়ু বানিয়ে, নিয়মিত নারকেল খান। তবে কিছু শারীরিক সমস্য়ায় নারকেল খাওয়া যায় না। অবশ্য় ডাক্তার বারণ নাড-করলে নিয়মিত নারকেল খেতে পারেন।