যিনিই শিব-তিনিই কি শঙ্কর, না নাম মাহাত্ম্যে রয়েছে অন্য কোনও ধাঁধা

  • শিবনাম নিয়ে একের পর এক মাহাত্ম্য
  • এই নিয়ে কৌতুহলেরও শেষ নেই
  • কেন শিব ও শঙ্কর দুই নামের দাপট
  • এর ব্যাখ্যাও রয়েছে পুরাণে 

Asianet News Bangla | Published : Feb 21, 2020 9:48 AM IST / Updated: Feb 21 2020, 03:23 PM IST

শিব ও শঙ্কর এই দুটি সবচেয়ে বেশি করে হিন্দু সমাজে ঘোরাফেরা করে। বিশেষ করে যারা ধর্মীয় ভাবাবেগকে দর্শন করে ঈশ্বর কল্পনায় মূর্ত হন তাদের কাছে শিব ও শঙ্কর নাম দুটি নিয়ে প্রবল ধাঁধা রয়ে গিয়েছে। কারণ, শিব ও শঙ্কর নাম দুটি-তে যে মানুষটির আদল বা ধারণা পাওয়া যায় তিনি হলেন শিব। কিন্তু, শিব  ও শঙ্কর নাম-এর পিছনে রয়েছে কোনও মাহাত্ম্য? এটা জানতে হলে নজর দিতে নিম্ন বর্ণিত কিছু কাহিনির উপরে।  

আরও পড়ুন- মহা শিবরাত্রি পালন করছেন, তবে জেনে নিন এই শক্তির জন্ম রহস্য

শিব-এর নাম মাহাত্ম্য নিয়ে একাধিক বইও রয়েছে। এর মধ্যে দুটি বই খুব-ই জনপ্রিয়। একটি হল শিবপুরাণ এবং অন্যটি হল শৈবাগম শাস্ত্র। 

এই বই দুইটি-তে বলা হয়েছে শিব নামটি-র সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিবলিঙ্গের কথা। অন্যদিকে শঙ্কর নামটি হল ভগবানরূপে কল্পিত শিব-এর মানবরূপী পরিচয়। যার ফলে শিব পূজোয় যখন কল্পিত আচার পালন হয় সেখানে শিবকল্প ও শঙ্করকল্পের মধ্যে আচার-বিধি-র ফারাক নজরে আসে।  

আরও পড়ুন- শিবের নটরাজ রূপ, বিশ্ব ধ্বংসের উদ্দেশ্যে এই নৃত্য করেছিলেন তিনি

শৈবাগম শাস্ত্র বলছে, শিব একটি পরমসত্তা। তিনি মহাজাগতিক চৈতন্য বা পরাচৈতন্যের প্রতিভূ। শিবলিঙ্গের অবয়ব সে সত্তা-কে স্মরণ করে। যা সৃষ্টিরকাশে এক পরমপূজ্য মূর্তভাব-কে তুলে ধরে। শিবলিঙ্গের আকার প্রসঙ্গেও শৈবাগম শাস্ত্র জানিয়েছে যে ডিম্বাকৃত লিঙ্গটি মহাজগতের বিশালাকার ব্যপ্তি-কেই ব্যাখ্যা করেছে। 

এই পুরাণ কাহিনি-তে এটাও বর্ণিত হয়েছে যে শঙ্কর হল শিবের একটি মানবায়িত রূপ। সেইসঙ্গে তিনি সুক্ষ্মদেহ সম্পন্ন এক সত্তা। তিনি ধ্যানরূপেণ পূজিত হন। মাথায় অর্ধচন্দ্র, কন্ঠে সর্পাহার এবং জটায় গঙ্গাকে ধারণ করেছেন।  

আরও পড়ুন- কাশী মহাকাল এক্সপ্রেসে যাত্রী স্বয়ং ভগবান শিব, থাকছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি

শঙ্করেরর মূর্তিকল্পে যে যে বিষয়গুলির উপরে নজর দিতে হয় সেগুলি হল অর্ধচন্দ্র, যা মাথার জটার মধ্যে থাকে। এর অর্থ হল জ্ঞানের প্রতীক। হাতে থাকে ডমরু। এর অর্থ হল অদ্বৈত। গলায় থাকে সাপের কুন্ডল। এর মানে এটি হল কুলকুন্ডলিনীর প্রতীক। ত্রিশূল কখনও ত্রিগুণ, কখনও ত্রিকাল, কখনও বা সৃষ্টি-স্থিতি-লয়ের যে তিন তত্ত্ব আছে তাকে ব্যাখ্যা করে। গঙ্গা বিশুদ্ধতার প্রতীক। যা বিশুদ্ধ জ্ঞানকে সংযোগ করে। তৃতীয় নয়ন মানে হল ত্রিকাল দর্শন। 

দুই পুরাণ গ্রন্থে এমন কাহিনিও রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে শিব ব্রক্ষ্মার মাধ্যমে সত্যযুগের সৃষ্টি করেছিলেন। এবং শঙ্কর-কে তিনি মানবরূপে  নিয়ে এসেছিলেন কলিযুগে যাতে তিনি সৃষ্টি-কে সংহার করতে পারেন। তাই শিব ও শঙ্কর এক হলেও দুজনের নামের পিছনে রয়েছে দুই বিশেষ কাহিনি। তাই বলা হয় শিব হল দৈব্যভাবের প্রতীক। আর শঙ্কর মানে আদি ও বিমূর্ত রূপকেই বোঝায়। 

Share this article
click me!