
ব্যস্ততার যুগে আলাদা করে সময় বের করে বা টাকা দিয়ে শরীরচর্চা করার সময় বা ক্ষমতা অনেকেরই থাকেনা। অথচ খাদ্যভাসের যা হাল, মেদ না ঝরালে রোগের ঝুঁকি বাড়বে ক্রমশ। দৈনিক শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরির থেকে বেশি ক্যালোরি পরিশ্রমের মাধ্যমে ঝরাতে পারলে ওজন বৃদ্ধি হয় না। নিয়ম মেনে কঠিন শরীরচর্চা বা জিমে না গিয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
শরীরচর্চার অভাবে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
১. অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি ও মোটা হয়ে পড়ার সম্ভাবনা
২. টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি
৩. হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা
৪. পেশি ও হাড় দুর্বল হওয়া, চলাফেরায় সমস্যা
৫. মানসিক ক্লান্তি, বিষণ্ণতা, ঘুমের অভাব
৬. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস
চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা বা হাঁটা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সময় না থাকলেও, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা, একটু হাঁটা বা হালকা স্ট্রেচিং - এই ধরণের ছোট ছোট অভ্যাসগুলো শরীরকে অনেক সুস্থ রাখে। আসুন জেনে নি জিমে না গিয়ে কিভাবে বাড়িতেই বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে ওজন ঝরাতে পারবেন।
১) স্কিপিং: জিমে না গেলেও বাড়িতে ৫ থেকে ১০ মিনিট স্কিপিং করতে পারলে একই সঙ্গে সারা দেহের ব্যয়াম হয়। অন্য দিকে স্কিপিং হৃৎস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়। সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে। ফলে কার্ডিয়ো ভাস্কুলার সিস্টেম ভাল থাকে। পাশাপাশি শরীর থেকে ঘাম ঝরাতে স্কিপিং সাহায্য করে। স্কিপিংয়ের সাহায্যে একবারে ৬০০ থেকে ১০০০ ক্যালোরি পর্যন্ত ঝরানো সম্ভব।
২) সাঁতার: গরমের সময় সাঁতার কাটতে ভাল লাগে। তাই যারা সাঁতার কাটতে পারেন, তাদের জন্য এর থেকে ভালো কোনো বিকল্প নেই। এক ঘণ্টা সাঁতার কাটতে পারলে ৫০০ থেকে ৭০০ ক্যালোরি পর্যন্ত কমানো সম্ভব। নিয়মিত সাঁতার কাটতে পারলে আর্থ্রাইটিস-সহ বিভিন্ন শারীরিক ব্যথার উপশম হয়। সাঁতার কাটলে দেহের পেশিও শক্ত হয়।
৩) দৌড়নো : ফিটনেস কোচদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রতি দিন ৬০০ থেকে ১০০০ ক্যালোরি কমাতে হলে দৌড়ে উপকার পাওয়া যেতে পারে। প্রতি দিন আধ ঘণ্টা মতো দৌড়লেই ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে অভ্যাস না থাকলে শুরুতে জগিং করা যেতে পারে। কোনও রকম আঘাত এড়াতে সময়ের সঙ্গে দৌড়ের গতি বাড়ানো উচিত।
৪) সাইক্লিং: ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত সাইকেল চালাতে পারেন। বাড়ির বাইরে সাইকেল চালানো বা বাড়িতে সাইকেল মেশিনে সময় কাটাতে পারেন। সাইকেল চালালে সারা শরীরের ব্যয়াম হয়। সাইকেল ঠিকমতো চালাতে পারলে ৪০০ থেকে ৮০০ ক্যালোরি কমানো সম্ভব।
৫) সিঁড়ি ভাঙা: বাড়ি বা অফিসে এখন সকলেই লিফ্ট ব্যবহার করে ওপর নিচ করেন। কিন্তু লিফ্টের পরিবর্তে যদি সিঁড়ি ব্যবহার করা যায়, তা হলে সেটা ব্যয়ামের সমান। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে পায়ের পেশি শক্ত হয়। এই ভাবে ৪০০ থেকে ৮০০ ক্যালোরি কমতে পারে।