
রাজ্যে ফের মিললো জাল ও নিম্নমানের ওষুধ। সম্প্রতি রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয় ৫১টি ওষুধের নমুনা। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, এই ওষুধগুলির গুণগতমান অত্যন্ত খারাপ।
৫১ টি ওষুধের এই তালিকায় অ্যাজিথ্রোমাইসিনের মতো জীবন দায়ী অ্যান্টিবায়োটিকও রয়েছে। রয়েছে গ্যাস অম্বলের ওষুধ রেবেপ্রাজোল, ভিটামিন বি-এর ট্যাবলেট, স্নায়ুর ওষুধ অ্যালপ্রাজোলাম। বাজেয়াপ্ত এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম এমএস স্কাই কিওর সলিউশন। কেরলের ইদ্দুকিতে ও গুজরাটের আমেদাবাদে তৈরি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রোবায়োটিকও জাল বেরিয়েছে।
বাজেয়াপ্ত ওষুধগুলির মধ্যে বেশ কিছু ওষুধ সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসার উপযুক্তও নয় বলে জানানো হয়েছে। কিছু ওষুধে কার্যকরী উপাদানের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম, আবার কিছু ক্ষেত্রে নকল উপাদান ব্যবহৃত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের নিম্নমানের ওষুধ মানুষের প্রাণের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত নজরদারি ও কড়া পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের অধ্যক্ষ ডা. জয়দেব রায় জানান, "এই ধরনের ওষুধ খেলে অসুখ সারবে না। একটি খারাপ মানের অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াটি মরবে না, বরং তার শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ব্যাকটেরিয়া তৈরি হবে। পরবর্তীকালে তার শরীরে আর অন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না।"
চিকিৎসকদের অভিযোগ, রাজ্যে কিছুদিন বাদে বাদেই জায়গায় জায়গায় এইভাবে ভেজাল ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ যেমন প্রতারিত হচ্ছেন, তেমনই চিকিৎসার গুণগতমান নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে স্বাস্থ্য মহলে। যেখানে এই ধরনের ওষুধ তৈরি হচ্ছে সেই কারখানায় হানা দিয়ে উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। খারাপ মানের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাকে ব্যান করতে হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
নির্দিষ্ট ব্যাচ নম্বর দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল। রাজ্যের প্রতিটি খুচরো ও পাইকারি বিক্রেতাকে বাজার থেকে এই ওষুধ প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি ওষুধের দোকানে ব্যাচ নম্বর-সহ এই ওষুধের তালিকা টাঙিয়ে রাখতে বলেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে এবং দোষী সংস্থাগুলিকে চিঠিও পাঠিয়েছে। এই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।