
Women Strokes Risk: প্রতি দু সেকেন্ডে বিশ্বের কোনও না কোনও প্রান্তের একজন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন স্ট্রোকে। শুধু তাই নয়, সারা পৃথিবীতে যত মানুষ মারা যান তাঁদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ হল এই স্ট্রোক। যা মুহুর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দেয় একজন নারী অথবা পুরুষের স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ। তবে অনেকেই মনে করেন, মস্তিস্কের রক্তক্ষরণ বা পেশীর দুর্বলতা হঠাৎ কোনও অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া এগুলি কেবলমাত্র পুরুষদের অসুখ।
কিন্তু গবেষণা বলছে অন্য কথা। বিশ্বে প্রতি ১০ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৬ জন মহিলা রোগী থাকেন। সারা পৃথিবীতে নারীদের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ হল এই স্ট্রোক।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, আদতে পুরুষদের স্ট্রোক বেশি হয় বলা হলেও এটি সম্পূর্ণ ভুল কথা। বরং যেকোনও পুরুষ মানুষের তুলনায় মহিলাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বহু গুণ বেশি থাকে। কারণ, পুরুষের তুলনায় মহিলাদের গড় আয়ু একটু বেশি হয়। ফলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, বাতের ব্যাথা, হার্টের সমস্যা, নানারকম হরমোন জনিত সমস্যা নারীদের বেশি হয়। আর এই কারণেই সবথেকে বেশি স্ট্রোকে ভোগেন নারীরাই।
কেন পুরুষদের থেকে মহিলাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি?
গবেষণায় বলা হয়েছে যে, নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হলেও আজও সমাজে অলিখিত ভাবে লিঙ্গ বৈষম্য রয়ে গিয়েছে। ফলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ হলেন মহিলা রোগী। আর এই নারীদের স্ট্রোকের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, উচ্চ রক্তচাপ, বাতের ব্যাথা, হার্টের সমস্যা, অ্যাস্ট্রোজেন সংক্রান্ত সমস্যা, অতিরিক্ত মেদ বৃদ্ধি এগুলি নারীদের স্ট্রোকের ঝুঁকিকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে। কারণ, অনিয়মিত খাদ্যভাস, শরীরচর্চা এবং নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা যেকোনও নারীকে পুরুষদের তুলনায় বেশি স্ট্রোকের মুখে ঠেলে দেয়।
এছাড়া আজও সমাজে নারীদের প্রতি অবহেলা অবজ্ঞা করা হয় বলে বাড়ির কোনও মহিলা অসুস্থ হয়ে গেলে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে না আসা স্ট্রোকের আরও একটি বড় কারণ। যারফলে সারা জীবনের মতো প্যারালাইজড হয়ে যাওয়া, কোনও একটি অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া বা মুখ বেঁকে গিয়ে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। আর এই সব রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মহিলাদের সবার আগে নিজেকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা, সঠিক খাবার গ্রহণ এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ দূর করে নিজেকেই সুস্থ রাখার উপায় বার করতে হবে।
আর সেই কারণেই যেকোনও বিষয়ে সচেতন হতে এবং অতিদ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে নারীকেই সবার আগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবেই না মিলবে রোগ থেকে দ্রুত মুক্তির সমাধান সূত্র।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।