
৪০ বছর বয়সের পর শরীরের মেটাবলিজম ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে এবং এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে আমাদের জয়েন্ট বা গাঁটের ওপর। প্রায়শই এই বয়সে হাঁটুতে ব্যথা, শক্ত হয়ে যাওয়া বা হাঁটতে অসুবিধার মতো সমস্যা দেখা যায়। কিন্তু যদি আপনি প্রতিদিন সোজা হাঁটার অভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনেন, তবে এই পরিবর্তনটি কেবল আপনার জয়েন্টকে শক্তিশালী করবে না, বরং বয়সের প্রভাব কমিয়ে ব্যথাও দূর করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বার্ধক্যের আগেই যদি এই বিশেষ হাঁটার স্টাইল বা প্যাটার্নগুলি গ্রহণ করেন, তবে আপনার পেশীর নমনীয়তা বাড়বে এবং জয়েন্টগুলিতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এমন ৫টি হাঁটার প্যাটার্ন যা আপনার জয়েন্টকে শক্তিশালী করে বার্ধক্যেও আপনাকে ফিট রাখতে পারে।
টো ওয়াক
টো ওয়াক অর্থাৎ পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে হাঁটা। এইভাবে হাঁটলে আপনার গোড়ালি, কাফ মাসল এবং হাঁটুর চারপাশের পেশী শক্তিশালী হয়। প্রতিদিন ১ মিনিট টো ওয়াক করলে জয়েন্টের নমনীয়তা বাড়ে এবং ভারসাম্য ভালো হয়। যারা হাঁটার সময় প্রায়ই পায়ে ব্যথা বা দুর্বলতা অনুভব করেন, তাদের জন্যও এটি উপকারী।
হিল ওয়াক
হিল ওয়াক অর্থাৎ গোড়ালির ওপর ভর দিয়ে হাঁটা। এই হাঁটার ধরনে বিশেষ করে হাঁটু, হ্যামস্ট্রিং এবং উরুর পেশী শক্তিশালী হয়। ১ মিনিট গোড়ালির ওপর হাঁটলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং জয়েন্টের স্থায়িত্ব উন্নত হয়। হিল ওয়াক ভারসাম্য প্রশিক্ষণের কাজও করে এবং ভবিষ্যতে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়া বা পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
হিপ রোটেশন ওয়াক
হিপ রোটেশন ওয়াক অর্থাৎ হাঁটার সময় কোমর হালকাভাবে ঘোরাতে ঘোরাতে হাঁটা। এই ব্যায়ামটি হিপ জয়েন্ট, পিঠের নীচের অংশ এবং উরুকে সক্রিয় রাখে। বয়সের সাথে সাথে জয়েন্টে শক্তভাব বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে এই মুভমেন্ট সেগুলিকে সচল এবং নমনীয় করে তোলে। প্রতিদিন ১ মিনিট এই ওয়াক করলে পেলভিক অঞ্চলের শক্তিও বাড়ে।
সাইড টু সাইড ওয়াক
সাইড টু সাইড ওয়াকে আপনাকে ডান-বাম দিকে হেঁটে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। এই ব্যায়ামটি জয়েন্টগুলিকে বিভিন্ন দিকে চালনা করে, যার ফলে চারপাশের পেশী সক্রিয় থাকে। যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন বা যাদের শরীরে শক্তভাব থাকে, তাদের জন্য এটি খুব উপকারী।
রিভার্স ওয়াক
রিভার্স ওয়াক অর্থাৎ পিছনের দিকে হাঁটা। এটি শরীরের জন্য কিছুটা কঠিন হলেও খুবই উপকারী। যখন আপনি উল্টো দিকে হাঁটেন, তখন আপনার হাঁটু, কোমর এবং গোড়ালির পেশীগুলি ভিন্ন কোণ থেকে কাজ করে, যার ফলে জয়েন্টের স্থায়িত্ব এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। যোগগুরু রামদেবের মতে, উল্টো দিকে হাঁটলে পেটের মেদ এবং চর্বি দুটোই কমে। প্রতিদিন ২ থেকে ৫ মিনিট রিভার্স ওয়াক করলে জয়েন্টের ব্যথায় আরাম এবং শিরদাঁড়ার অ্যালাইনমেন্ট উন্নত হতে পারে।