মানুষের মস্তিষ্কে কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের প্রভাব সংক্রান্ত এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও রসায়নকে প্রভাবিত করে স্মার্টফোনে অতিরিক্ত আসক্তি।
বর্তমানে এই ডিজিটাল জীবনে স্নার্টফোন থেকে দূরত্ব বর্দাস্ত নয় কারোরই। হুম থেকে ওঠার পর থেকে আবার রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত চোখের সামনে ফোনের আলো যেন জ্বলতেই থাকে। তামাকজাতো দ্রব্যের নেশার মতোই স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তিও নেশা বা অভ্যাসে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা ইঙ্গিত দিচ্ছে, মাত্র তিনদিন ফোনের থেকে দূরে থাকতে পারলেই মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তি পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।
সমক্ষার বিস্তারিত :
সমীক্ষাটি করার জন্য ১৮-৩০ বছর বয়সী ২৫ জনকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। দেখা গেছে, স্মার্টফোন ব্যবহার করতে না দিলে ব্যবহারকারীরা ঠিক যেন নেশাগ্রস্তদের ধূমপান বা মদ্যপান না করতে পারলে যেমন আচরণ করেন, সেরকমই আচরণ করছে। মস্তিষ্কের যে হরমোনগুলি আমাদের খাদ্যভ্যাস, মেজাজ, আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেই ডোপামিন বা সেরোটোনিনের ক্ষরণের তারতম্য ধরা পড়ছে। ব্যবহারকারীদের মেজাজ অকারণেই উত্তেজিত হয়ে উঠছে, খুব বেশি খিদে বা একেবারে চুপ করে যাওয়ার মতো আচরণ করছেন।
জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণায় সমীক্ষকদের ধারণা, অতিরিক্ত স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি আমাদের দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাপনকে প্রভাবিত করছে। অথচ মাত্র তিনদিন এই ফোন ব্যবহার না করলেই মস্তিষ্ক নিজে থেকেই আবার স্বাভাবিক কাজ করতে পারে।
এই সমক্ষার প্রসঙ্গে চিকিৎসক শৌনক আজিঙ্ক্য বলেছেন, ‘‘প্রথম দিনের পরেই অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মানসিক শান্তি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। আশপাশের বিষয় সম্পর্কে অনেক বেশি মনোযোগীও দেখাচ্ছিল তাঁদের। তার কারণ মোবাইল আমাদের মস্তিষ্ককে অতি সজাগ রেখে দেয় সর্ব ক্ষণ। এখনকার প্রজন্ম যে টানা মানসিক চাপের মধ্যে থাকে, তার একটা বড় কারণও এটা। ডিজিটাল বোঝা ৭২ ঘণ্টা মাথার উপরে না থাকলে মস্তিষ্ক যে বিশ্রাম পাবে, সেটাই স্বাভাবিক।’’