হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় নতুন টিকা আবিষ্কারের পথে বিজ্ঞানীরা। ট্রায়ালের অপেক্ষা। পাশাপাশি, হার্ট অ্যাটাকের কারণ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কেও জেনে রাখা দরকার।
ভারতে হার্ট অ্যাটাকের কারণে প্রতি তেত্রিশ সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু হয়। ৭০০০০ এরও বেশি জীবন সম্ভাব্যভাবে বাঁচানো যেতে পারে যদি আশেপাশের লোকেরা সতর্ক ও অবগত হয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। সম্প্রতি তরুণদের মধ্যেও বেড়েছে হৃদরোগের প্রবণতা। তবে এবার এই রোগেরও প্রতিষেধক এবার বিজ্ঞানীদের কাছে। নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত চিনা বিজ্ঞানীদের এক নতুন গবেষণার কথা। যার মধ্যে ইঁদুরের শরীরে নতুন টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে, এমনকী ইতিবাচক ফলও মিলেছে। চিনের নানজিং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই ভ্যাকসিন এথেরোস্ক্লেরোসিস আটকাতে পারবে। তবে এখনও মানুষের শরীরে ট্রায়াল বাকি।
হার্ট অ্যাটাকের কারণ :
ধমনীর ভেতরে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমতে জমাতে পুরু হতে থাকে, তাতে রক্ত সঞ্চালনের রাস্তাটা ক্রমাগত সরু হতে হতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে । সেটাকেই সকল ব্লকেজ বলে। ধমনীতে ফ্যাটি প্লাক জমার সমস্যাটিকে এথেরোস্ক্লেরোসিস বলে। ধমনীতে প্লাক বা রক্ত জমাট বাঁধার কারণেই স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। ছাড়াও আরও অনেক কারণে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হতে পারে, যেমন - উচ্চ রক্তচাপ, তামাক সেবন বা অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা, জিনগত অসুস্থতা ইত্যাদি, এই কারণগুলির ফলে ধমনীতে ব্লকজ হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত ফেটে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
এই টিকা কীভাবে কাজ করবে?
গবেষণার দাবি অনুযায়ী, এই টিকায় বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন একসাথে করে শরীরে প্রদাহ ও এথেরোস্ক্লেরোসিসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা গড়ে তুলবে। এই প্রোটিনগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পি২১০, যা ধমনীতে অ্যাথেরোসক্লেরোসিসের অগ্রগতির বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। এই পি২১০-কে কাজে লাগিয়েই মানব শরীরে প্রয়োগের জন্য তৈরি হয়েছে নতুন ভ্যাকসিন। নয়া এই টিকা পি২১০ অ্যান্টিজেনকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আয়রন অক্সাইড ন্যানো পার্টিকেলের সঙ্গে সংযুক্ত করে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিহত করতে কাজ করবে। নতুন এই টিকা নিলে শরীরে এই প্রোটিনের উৎপাদন বাড়াবে। তা ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলিকে (ইমিউন কোষ) উদ্দীপিত করে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমাবে।
জেনে নিন হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক ঘরোয়া চিকিৎসা কীভাবে করবেন?
১। প্রথমেই রোগীকে রিল্যাক্সড হয়ে ঘাড়, মাথা হেলান দিয়ে হাঁটু মুড়ে রোগীকে বসাতে হবে রক্তচাপ কমাতে।
২। রোগীকে ৩০০ গ্রাম অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খাওয়াতে হবে।
৩। ক্রমাগত শ্বাস - প্রশ্বাস, পালস রেট ও রোগী কেমন সাড়া দিচ্ছেন তা নিরীক্ষণ করতে হবে।
৪। রোগী যদি অজ্ঞান হয়ে যায় তবে সিপিআর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।