
Mothers Health Care Tips: হাতে মাত্র আর একদিন। তার পরেই বিশ্বজুড়ে পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃদিবস। প্রতিবার জাঁকজমক করে না হলেও বিশেষ এই দিনটি নিজেদের মতো করে উদযাপন করতে ভোলেন না সন্তানেরা। তবে কী শুধুই মাতৃ দিবসের দিন মায়েদের সেবাযত্ন করবেন? বছরের বাকি দিনগুলি!
'ওমেন'স ডে' , 'চিল্ড্রেন'স ডে' , 'ফাদার্স ডে' সহ আরও যে কত শত দিবস আছে তা হয়ত বলে শেষ করা যাবে না। তবে আমাদের প্রত্যেকেরই জীবনে মাতৃদিবসের গুরুত্ব একেবারে অন্যরকম। কারণ দিনশেষে পাখির যেমন ঠিকানা তার বাসা। তেমনই ঘরে ফিরে আমরাও সবার আগে মায়েরই খোঁজ করে থাকি। কারণ মা ছাড়া জীবন যেমন অসম্পূর্ণ তেমনই জগৎ অন্ধকার।
সারাদিনের শেষে ভরসা এবং বিশ্বাসের শেষ ঠিকানা মা হলেও এই মায়েরাই সন্তান আর পরিবারের চিন্তায় নিজেদের শরীর স্বাস্থ্যের দিকে তাকাতে ভুলে যান। কিন্তু এটা কখনই কাম্য নয়। বরং সন্তানের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজের শরীর স্বাস্থ্যেরও যত্ন নেওয়া একান্ত জরুরি সব মায়েদের জন্য।
আর তারপরে কেউ যদি প্রথমবার মাতৃত্বের স্বাদ নিতে চান তাহলে গর্ভাবস্থায় শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া জরুরি। কেননা একজন নারী যেমন মাতৃত্বের মাধ্যমে নিজেকে সম্পূর্ণ করে তোলেন তেমনই এই মাতৃত্বের অবস্থায় শারীরিক ও মানসিক দিক থেকেও নানা পরিবর্তন ঘটে। অনেকেই এই সময় না চাইলেও উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় ভোগেন। তবে অযথা খারাপ চিন্তা না করে সবসময় পজিটিভ থাকাটা এই সময় ভীষণ জরুরি।
এরজন্য যেমন সুস্থ সুন্দর পরিবেশ দরকার। তেমনই গর্ভাবস্থায় খাদ্যাভ্যাস সহ শরীর স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াও জরুরি। কারণ সুস্থ সুন্দর শরীর স্বাস্থ্যই সুখী জীবনের মূল চাবিকাঠি।
তাহলে আসুন জেনে নিই গর্ভাবস্থায় কী ধরনের খাবার খাওয়া জরুরি। এছাড়া এই সময়ে সুস্থ থাকতে ডায়েট চার্টে কোন খাবারগুলি রাখবেন প্রতিদিন...
১.যেকোনও নারীর গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে জল পান করা উচিত। এই সময়ে খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ফাইবার এবং মিনারেল জাতীয় উপাদান থাকা জরুরি। এতে শরীরে পুষ্টির চাহিদা মেটে। গর্ভস্থ সন্তানের সুষম বিকাশে সাহায্য করে। কারণ, স্তন্যদানকারী মায়ের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত, যা মায়ের শরীরকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে এবং বুকের দুধের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
২. এই সময়ে ওটমিল, ডাল, রুটি, ব্রাউন রাইস ফাইবার ও ভিটামিন বি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত। প্রসবের পর ধীরে ধীরে শারীরিক কার্যকলাপ শুরু করা উচিত। হালকা হাঁটাচলার মতো শারীরিক কার্যকলাপ শরীরের শক্তি বাড়াতে এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার সাহায্য করে।
এছাড়াও স্বল্প ফ্যাটযুক্ত খাবার, দুধ এবং দুধজাত পণ্য, সয়া, বাদাম, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি।
শিম, মটর, ডিম, অল্প মাংস এবং এই সময়ে হালকা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। তবে নিজের এবং সন্তানের ক্ষতি করে এমন ধরনের খাবার যেমন, চা কফি, মিনারেল, ঠান্ডা পানীয় এড়িয়ে চলাই ভালো।
৩. মহিলাদের গর্ভাবস্থাকালীন আরও যত্নবান হওয়া এবং তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিদিন চেক করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে প্রোটিন যুক্ত খাবার, আয়রন এবং ক্যালসিয়াম পরিপূরক এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত। ভিটামিন সি, ডি রয়েছে এমন খাবার খাওয়া উচিত। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর তরল, কোমল নারকেল, ডাবের জল এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের রস খাওয়া জরুরি।
৪. গর্ভাবস্থা চলাকালীন নিজস্ব ডাক্তারের পরামর্শ মতোন হালকা ধরনের ব্যায়াম, বা শারীরিক কসরত করা যেতে পারে। এতে নানারকম শারীরিক সমস্যা দূর হবে এবং পিঠে, কোমরে ব্যথার মতোন সমস্যার হাত থেকে রেহাই মিলবে। এছাড়াও প্রসবের পর নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা এবং প্রসবোত্তর চেকআপ করানো উচিত, যাতে শরীরের কোনো সমস্যা দ্রুত চিহ্নিত করা যায় এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করা যায়।
৫. এই সময়ে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখুন। নিজের শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়ার পাশাপাশি সবসময় নিজেকে এবং ঘরবাড়িকে পরিস্কার পরিছন্ন রাখুন। এতে মানসিক শান্তি মিলবে। অবসাদ কাটবে। এছাড়াও এই সময়ে পর্যাপ্ত ঘুমও কিন্তু ভীষণ দরকারি। তবে প্রসবের পরও মায়ের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। স্ট্রেস এবং ডিপ্রেশন এড়াতে সাহায্যকারী কৌশল অবলম্বন করা ভালো, যেমন - ধ্যান, যোগা বা হালকা ব্যায়াম।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।