
পছন্দের জামা গায়ে আঁটাবেন বলে লোকের কোথায় মাসের পর মাস ডায়েট করছেন, খাবার কম খাচ্ছেন, তাতেও ফল দিচ্ছে না কিছুই?
শরীর ভালো রাখার জন্য ম্যাগাজিন, বলিউড তারকা বা গুগেল দেখে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং, ভাত বা ময়দার বদলে কিনোয়া, ওটস, নামি দামি ফল - সবজি খেয়েও কমছেনা ওজন। বরং হজমের সমস্যায় ভুগছেন। প্রিয় পোশাকটি পরবেন বলে সকালে বিকালে হাঁটাহাঁটির পরিমান বাড়িয়েছেন। বাইরের অস্বাস্থ্যকর, তেলে ভাজা বা প্যাকেজড খাবার ও বন্ধ করেছেন। রাশ টেনেছেন ভাত ও ময়দা জাতীয় খাবারে। দিনে ৪ বেলার বদলে এখন মাত্র দু বেলাই খাচ্ছেন।
জানেন কি, এই ডায়েটের অংক কষতে প্রথমেই ভুল করেছেন আপনি। শরীরে প্রয়োজনের পরিমানের কম খাবার খেয়ে শরীরচৰ্চা করলে নিজেকে কেবল দুর্বল করেই তুলছেন। খাদ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কোন খাবার, কখন, কিভাবে, কতটা খাবেন বা কী খাবেন না জানুন আগে।
নিজেকে যে প্রশ্নগুলো করবেন
নিজের খাদ্য বিশেষজ্ঞের থেকে কিছু প্রশ্ন জেনে নিন খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করে। আপনার শরীর অনুযায়ী দিনে কতবার, কখন কখন, কী কী খাবেন? শরীরচর্চার পাশাপাশি কী খেলে টা শক্তি যোগাবে? আর কী কী খাবেন না একেবারেই? তবে ডাক্তার বা খাদ্যবিশেষজ্ঞের পাশাপাশি নিজেকেও কিছু প্রশ্ন করুন।
প্রথম, কতটা পরিমান খাচ্ছেন?
স্বাস্থ্যকর খাবার মানেই যত ইচ্ছা খাওয়া নয়। খাদ্যবিশেষজ্ঞদের মতে ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর ক্যালোরি খাওয়া দরকার। গমের আটা বা ময়দার বদলে জোয়ার বা বাজরার আটা, তেলের বদলে ঘি, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, বীজ শস্য, বাজারে সবসময় পাওয়া যায় এমন সবজি ও ফল। কিন্তু মনে রাখতে হবে পুষ্টিকর হলেও এই ধরণের খাবারে ক্যালোরির পরিমান অনেকটাই। তাই পরিমান তো শরীর চর্চা সাথে ক্যালোরি মেপে খাদ্যভ্যাস। শরীরে বেশি ক্যালোরি জমলে আর তা না ঝরাতে পারলে ওজন আপনার কমবে না।
দ্বিতীয়ত, হাইপোথাইরয়েড আছে কী?
খাদ্যবিশেষজ্ঞের কথা মেনেও ওজন কমছে না? ডাক্তার দেখান, জিজ্ঞেস করুন হাইপোথাইরয়েড নেই তো? থাইরয়েড হরমোনের সঠিক নিঃসরণ না হলে হাইপোথাইরয়েড দেখা দেবে, শরীরে মেদ ঝরতে দেবেনা। অনেক সময় উপসর্গ না থাকলেও দেখা যায় শরীরে এই রোগ আছে। আবার অনেক সময় রক্ত পরীক্ষায়ও ধরা পরে না। তবে আন্দাজ করার জন্য কিছু উপায় আছে যা আপনাকে সাহায্য করবে। যেমন - অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্তিবোধ, কোষ্ঠকাঠিন্য, ওজন বৃদ্ধি না ওজন চেষ্টা করেও না কমা, চুল ঝরে যাওয়া, শুস্ক ত্বক, গলার স্বরে বদল, অনিয়মিত ঋতুচক্র ইত্যাদি।
তৃতীয়ত, মানসিক অবসাদে ভুগছেন কী?
মানসিক অবসাদ ওজন বৃদ্ধির বড় কারণ। খাদ্যবিশেষজ্ঞদের মতানুযায়ী, মানসিক চাপ শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে পেটের আশেপাশে চর্বি জমায়। অনেকের মানসিক চাপের কারণে মিষ্টি খাবারের চাহিদা বাড়ে বা sugar cravings হয় ফলে অনেকেই "binge eating" বা অতিরিক্ত খেতেই থাকেন। তাই ওজনও বাড়তেই থাকে। এমনকি অতিরিক্ত পরিমানে যা খুশি খাওয়ার ফলে বিপাক ক্রিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। তাই হজম শক্তি ভালো করার পাশাপাশি নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিন।