কিডনিতে পাথর কেন হয় জানেন? জেনে নিন এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো, কখন সতর্ক হবেন

Published : Oct 25, 2025, 07:25 PM IST
Kidney Stones and Treatment

সংক্ষিপ্ত

কিডনিতে পাথর একটি সাধারণ সমস্যা যা শরীরে ক্যালসিয়াম বা ইউরিক অ্যাসিডের মতো খনিজ জমে তৈরি হয়। এর প্রধান লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে কোমরে তীব্র ব্যথা, প্রস্রাবে জ্বালা এবং বমি ভাব। 

কিডনিতে পাথর (kidney stones) আজকাল একটি খুব সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুতগতির জীবনযাত্রা, কম জল পান করা, জাঙ্ক ফুড এবং অতিরিক্ত নুন খাওয়া এর প্রধান কারণ। কিন্তু আপনি কি জানেন যে এই ছোট পাথর ধীরে ধীরে কিডনির গুরুতর ক্ষতি করতে পারে? আসুন জেনে নেওয়া যাক, কিডনিতে পাথর কীভাবে তৈরি হয়? এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো কী এবং সময়মতো কীভাবে তা চেনা যায়।

কিডনিতে পাথর কী? (কিভাবে মানুষের কিডনিতে পাথর হয়)

কিডনির কাজ হল শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত খনিজ (minerals) বের করে দেওয়া। যখন শরীরে ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক অ্যাসিড বা ফসফেটের মতো খনিজের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন এগুলি প্রস্রাবে (urine) জমা হয়ে শক্ত ক্রিস্টাল বা পাথরের (stone) রূপ নেয়। এই পাথর বালির কণার মতো ছোট বা নুড়ির মতো বড় হতে পারে। যদি এই পাথর মূত্রনালীতে (urinary tract) আটকে যায়, তবে এটি তীব্র ব্যথা এবং সংক্রমণের কারণ হতে পারে।

কীভাবে কিডনিতে পাথর তৈরি হয়?

যখন শরীরে জলের অভাব হয়, তখন প্রস্রাব ঘন হয়ে যায় এবং এতে থাকা খনিজ পদার্থ জমতে শুরু করে।

এই খনিজগুলো ধীরে ধীরে ছোট ছোট ক্রিস্টাল তৈরি করে।

ক্রিস্টালগুলো একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে বড় টুকরো অর্থাৎ পাথর তৈরি করে, যা কিডনির দেওয়ালে আটকে যেতে পারে।

পাথর যত মূত্রনালীর নিচের দিকে এগোতে থাকে, ব্যথা এবং ব্লকেজের সম্ভাবনা তত বাড়তে থাকে।

কিডনি স্টোনের প্রাথমিক লক্ষণ (Early Symptoms of Kidney Stone)

কোমরের বা পিঠের নিচের অংশে তীব্র ব্যথা যা মাঝে মাঝে আসে এবং যায়।

প্রস্রাব করার সময় জ্বালা বা থেমে থেমে প্রস্রাব হওয়ার সাথে ব্যথা।

প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন হওয়া, যেমন লাল, বাদামী বা ঘোলাটে রঙের প্রস্রাব।

বারবার প্রস্রাবের ইচ্ছা, কিন্তু খুব কম পরিমাণে প্রস্রাব বের হওয়া।

বমি বা বমি বমি ভাব অনুভব করা।

যদি সংক্রমণ হয় তবে জ্বর এবং কাঁপুনি।

কিডনি স্টোনের প্রকারভেদ (Types of Kidney Stones)

ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন (Calcium Oxalate Stones) - সবচেয়ে সাধারণ প্রকার, যা নুন এবং অক্সালেট থেকে তৈরি হয়।

ইউরিক অ্যাসিড স্টোন (Uric Acid Stones) – রেড মিট এবং বেশি প্রোটিন খাওয়ার ফলে তৈরি হয়।

স্ট্রুভাইট স্টোন (Struvite Stones) – ইউটিআই (UTI) এর কারণে তৈরি হওয়া পাথর।

সিস্টিন স্টোন (Cystine Stones) – জেনেটিক কারণে তৈরি হওয়া বিরল পাথর।

 

কিডনিতে পাথর কীভাবে নির্ণয় করা হয় (Diagnosis Methods of Kidney Stones)

ইউরিন টেস্ট (Urine Test): এতে ক্রিস্টাল, রক্ত বা সংক্রমণের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়।

আলট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যান (Ultrasound or CT Scan): এর মাধ্যমে পাথরের আকার এবং অবস্থান জানা যায়।

এক্স-রে (KUB): এটি পেট এবং কিডনির অংশে পাথরের অবস্থান দেখায়।

ব্লাড টেস্ট (Blood Test): শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পরীক্ষা করার জন্য করা হয়।

কিডনি স্টোন প্রতিরোধের উপায় (Kidney Stones Prevention Tips)

প্রথমত, প্রতিদিন ৩-৪ লিটার জল পান করুন, যাতে প্রস্রাব পরিষ্কার এবং পাতলা থাকে।

নুন ও চিনি কম খান।

পালং শাক, চকোলেট এবং বাদামের মতো খাবার সীমিত পরিমাণে খান। এগুলিতে অক্সালেট বেশি থাকে।

অতিরিক্ত প্রোটিন এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে রেড মিট এড়িয়ে চলুন।

লেবুর জল এবং নারকেলের জল পান করা শুরু করুন, এটি প্রাকৃতিক ডিটক্স হিসেবে কাজ করে।

নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখুন যাতে শরীরে খনিজ পদার্থ ভারসাম্যপূর্ণ থাকে।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

শীতকালীন অবসাদ জানেন কী হয়? মন ভালো করতে কেক বা চকলেট নয়, করুন এই কয়েকটি উপায়
৬০ সেকেন্ডের কম সময়ে মেজাজ হবে ভালো, রইল টিপস