
মুম্বাই: জন্মের সময় ওজন ছিল একটি আপেলের সমান। ১২৪ দিন এনআইসিইউ-তে থাকার পর সেই শিশুকন্যা ছাড়া পেল। মাত্র ৩৫০ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্মানো এই শিশুকন্যার বেঁচে থাকাকে চিকিৎসকরা অলৌকিক ঘটনা ছাড়া আর কিছুই বলতে নারাজ। মুম্বাইয়ের মালাডের বাসিন্দা এক দম্পতির এই দ্বিতীয় সন্তানটি দেশের সবচেয়ে কম ওজনের শিশু হিসেবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে। সাহনি দম্পতির প্রথম সন্তান ২৫ সপ্তাহে জন্মেছিল। তার চার বছর বয়সী ভাইয়ের জন্মের সময় ওজন ছিল ৫৫০ গ্রাম। ২৫ সপ্তাহে জন্ম নেওয়া এই শিশুকন্যাটি ওজনের দিক থেকে তার ভাইয়ের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ছিল। ৩০ জুন মাত্র ৩৫০ গ্রাম ওজন নিয়ে শিশুকন্যাটির জন্ম হয়। শিশুটির আকার ছিল একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হাতের তালুর সমান। সান্তা ক্রুজের সূর্য হাসপাতালে সাহনি দম্পতির মেয়ের জন্ম হয়।
প্রতিটি দিন যুদ্ধের মতো ছিল। চার মাসের দীর্ঘ চিকিৎসার পর শিশুকন্যাটি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায়। জন্মের পরপরই চিকিৎসকরা শিশুটিকে ইনকিউবেটরে রাখেন। জন্মের ১০ মিনিটের মধ্যেই ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসকরা জানান, অপরিণত নবজাতকদের মধ্যে ৬০ শতাংশকে চিকিৎসার মাধ্যমে বাঁচানো সম্ভব হলেও, এই मामलाটি ছিল একেবারেই আলাদা। ৩৫০ গ্রামের এই শিশুটিকে চিকিৎসকরা 'ন্যানো প্রিমি' বলে অভিহিত করছেন। শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কোপালমোনারি ডিসপ্লাসিয়া, ভেন্টিলেটর-সম্পর্কিত নিউমোনিয়া, সাইটোমেগালোভাইরাস সংক্রমণ, রেটিনোপ্যাথি এবং অ্যানিমিয়ার মতো একাধিক রোগকে জয় করে নবজাতকটি অবশেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায়।
এনআইসিইউ-কে গর্ভাশয় বানিয়ে ইনসুলিন ট্রান্সফিউশন, পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং হাড়ের খনিজ কমে যাওয়ার মতো চ্যালেঞ্জগুলোও শিশুটি পার করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে অ্যাডভান্সড ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশে অপরিণত অবস্থায় জন্মানোর পর বেঁচে থাকা নবজাতকদের মধ্যে এই শিশুকন্যাটি সবচেয়ে ছোট। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় তার ওজন ছিল ১.৮ কেজি, দৈর্ঘ্য ৪১.৫ সেন্টিমিটার এবং মাথার পরিধি ছিল ২৯ সেন্টিমিটার। ১২৪ দিনের চিকিৎসায় শিশুটির ওজন জন্মের সময়ের চেয়ে পাঁচগুণ বেড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির মস্তিষ্কের বিকাশ তার সমবয়সীদের মতোই।